খেলার খবর

দরিদ্র-বান্ধব এবং জলবায়ু-সহনশীল নগর উন্নয়নে গুরুত্বারোপ

ডেস্ক রিপোর্ট: শহরের সহিষ্ণুতা ও দরিদ্র-বান্ধব উন্নয়নে মেয়রদের নিয়ে ‘মেয়রস’ নলেজ এক্সচেঞ্জ ওয়ার্কশপ অন এলআইইউপিসিপি গুড প্রাকটিস’ শীর্ষক এক কর্মশালায় অনুষ্ঠিত হয়। দরিদ্র-বান্ধব এবং জলবায়ু-সহনশীল নগর উন্নয়নের নানা চর্চা ও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেয়া হয়।

বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগের লাইভলিহুডস ইমপ্রুভমেন্ট অফ আরবান পুওর কমিউনিটি (এলআইইউপিসিপি) প্রকল্পের আয়োজনে বুধবার (২৯ মে) ঢাকার একটি হোটেলে এই কর্মশালায় অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় যুক্তরাজ্যের ফরেন ডিপার্টমন্ট, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) এবং ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি)-এর সাথে অংশীদারিত্ব এলআইইউপিসিপি প্রকল্পের এই কর্মশালায় ১৯টি শহর ও শহরে এলআইইউপিসিপি প্রকল্পের প্রভাবে দরিদ্র-বান্ধব এবং জলবায়ু-সহনশীল নগর উন্নয়নের নানা ভালো চর্চা ও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেয়া হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালযয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার এবং উন্নয়ন পরিচালক ম্যাট ক্যানেল। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি আবাসিক প্রতিনিধি সোনালী দয়ারত্নে তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘সরকার আমাদের শহুরে সহিষ্ণুতা কর্মসূচির সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব গ্রহণ করেছে। এখানকার নারীরা কত দারুণভাবে তাঁদের শহর ও শহরের বাসিন্দাদের নানা সমস্যার সমাধান করছ এটি তারই প্রামাণ।’

‘অধিবাসীদের ক্ষমতায়নের ভালো অনুশীলন এবং জলবায়ু-সহনশীল পরিকাঠামোর জন্য স্থানীয়ভাবে পরিচালিত পদ্ধতি’ শীর্ষক অধিবেশনের সভাপতিত্বে ঢাকা উত্তরের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় পদক্ষেপই জাতীয় সাফল্যের চাবিকাঠি, এবং সুবিধাবঞ্চিত অধিবাসীদের নেতৃত্বে উন্নয়ন প্রক্রিয়াটি দরিদ্র-বান্ধব নগর উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।’

চাঁদপুরের মেয়র মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এলইউআইপিসিপি প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা শহর পর্যায়ের কমিটিতে নারীদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে শহুরে দরিদ্র পরিবারের কাছে পৌঁছেছি।’

চাঁদপুর টাউন ফেডারেশনের চেয়ারপার্সন নাজমা আলম মনে করেন, ‘আমাদের কণ্ঠস্বর শোনানো সহজ ছিল না। এমন একটি জায়গা তৈরি করার জন্য যা আমাদেরকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে– এলইউআইপিসিপি প্রকল্প এবং পৌরসভাকে ধন্যবাদ ‘।

প্রধান অতিথি মোঃ তাজুল ইসলাম, এমপি বলেন, “২০৪১ সালের মধ্যে আমরা একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে চাই এবং এই উন্নয়নযাত্রা কাউকে পিছু ছাড়বে না। আগামী দিনগুলিতে এই কর্মশালা থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাগুলো প্রয়োগ করার জন্য আমারা উন্মুখ হয়ে আছি।’

স্টেফান লিলার বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এবং যুক্তরাজ্যের সাথে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব প্রায় দুই দশকব্যাপী, যা শহুরে দারিদ্র্য হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনের একটি শক্তিশালী মডেল প্রদর্শন করে। আমাদের এই প্রয়াস স্থানীয় সরকারগুলির বৃহত্তর নগর উন্নয়ন কৌশলগুলির সাথে একত্রিত হয়েছে তা নিশ্চিত করে, এই কর্মসূচিটি অধিবাসী স্তরে সহিষ্ণুতা জোরদার করতে চলেছে৷’

এলইউআইপিসিপি প্রকল্প থেকে শেখার বিষয়ে মন্তব্য করে ম্যাট ক্যানেল বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার, যুক্তরাজ্য সরকার এবং ইউএনডিপির মধ্যে অংশীদারিত্ব দেখে আমি আনন্দিত যে বাংলাদেশের ৪০ লক্ষ দরিদ্র শহুরে মানুষের জীবনযাত্রা এবং জীবনযাত্রার অবস্থার উন্নতি হয়েছে।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম এলআইইউপিসি প্রকল্পকে সমর্থন করার জন্য যুক্তরাজ্য সরকার এবং ইউএনডিপি-কে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন ‘আগামী বছরগুলিতে আমরা এই অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য অত্যন্ত আগ্রহী।’

সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভার মেয়র, উন্নয়ন সহযোগী, সরকারি নানা সংস্থা, এনজিও, আইএনজিও এবং দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক অংশীদারদের সমন্বয়ে প্রায় ১২০ জন অংশগ্রহণকারী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

এলআইইউপিসি প্রকল্প দরিদ্র-বান্ধব জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট নগর উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া, প্রকল্পটি শহরের প্রায় ৪০ লাখ দরিদ্র অধিবাসীর কাছে পৌঁছেছে এবং ইতোমধ্যে অধিবাসীদের ক্ষমতায়ন, সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন, অভিযোজিত জীবিকা, উন্নত আর্থ-সামাজিক অবস্থা, জলবায়ু-সহনশীল অবকাঠামো এবং দরিদ্র-সমর্থক পরিকল্পনা এবং পৌর শাসনে বেশ কিছু ভালো উদাহরণ তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *