আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘স্পষ্ট’ অবস্থান জানাল ভারত

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অবস্থান স্পষ্ট করে তুলে ধরেছে ভারত। শুক্রবার দিল্লিতে ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের ‘টু-প্লাস-টু’ বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা।

পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশকে সেদেশের মানুষ যেভাবে দেখতে চায়, সেই ভিশনকে ভারত কঠোরভাবে সমর্থন করে। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সেদেশের মানুষই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

বৈঠক শেষে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই স্পষ্ট করে তুলে ধরেছি আমরা। তৃতীয় কোনও দেশের নীতিমালা নিয়ে আমাদের মন্তব্য করার জায়গা নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেদেশের মানুষ তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘এক বন্ধু এবং সঙ্গী দেশ হিসাবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান জানাই আমরা। একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশকে সেদেশের মানুষ যেভাবে দেখতে চায়, সেই ভিশনকে ভারত কঠোরভাবে সমর্থন করে।’

যদিও ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের পরে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যুক্তরাষ্টের পক্ষ থেকে কোনও বিবৃতি বা সংবাদ সম্মেলন করা হয় নি। ভারতের বিশ্লেষকরা এবিষয়ে ব্যাখ্যা করছেন, আমেরিকা যাতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বেশী চাপ না দেয়, সেই বার্তাই শুক্রবারের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছে ভারত।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বৈঠক হয়

দিল্লির সেন্টার ফর ল্যান্ড ওয়ারফেয়ার স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো মেজর জেনারেল (অবঃ) পি কে চক্রবর্তী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘‘সোজা কথা বলতে চাই, ভারতে যে সরকারই এখানে ক্ষমতায় থাকুক, আমাদের জন্য শেখ হাসিনা ইজ দ্য বেস্ট অপশন। হোল ইন্ডিয়া উইল স্যা দ্যট…কিন্তু আমেরিকা মনে হয় অন্যভাবে দেখছে। আমরা শেখ হাসিনাকে জি২০ তে ডেকেছি ‘অ্যা স্পেশাল গেস্ট’। তাকে কেন আনা হল জি২০-তে? বাংলাদেশ ইজ নট অ্যা পার্ট অব জি২০। আমরা বলতে চাই, পাবলিকলি ডিক্লিয়ার করি, শেখ হাসিনা ইজ ভেরি স্পেশাল ফর আস.. ইন্ডিয়ার জন্য দেয়ার ইজ নাথিং বেটার দ্যান আওয়ামীলীগ।’’

জেনারেল চক্রবর্তী বলেন, ‘সোজা কথা বলছি, উই ডো নট্ বিএনপি-জামায়াত..বিকজ দ্য আর প্রো-রেডিক্যালিজম..ইন্ডিয়ার কাছে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি উন্নয়ন চান, শান্তি চান তবে…রেডিক্যালিজম চাইতে পারেন না। আপনি দেখুন আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কত অর্জন, আমরা বর্ডার সেটেল্ড করতে পারলাম। ভারতীয় হাই কমিশন ঢাকা ১৫ হাজার ভিসা দিচ্ছে প্রতিদিন। পিপল টু পিপল কন্টাক্ট কতো গভীর…’

ওয়াশিংটন-ভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) বিশেষজ্ঞ রিক রসো গণমাধ্যমকে বলেন, ভারত-মার্কিন স্ট্র্যাটেজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ইস্যুগুলোর প্রভাবই কিন্তু বেশি থাকবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, “গাজা বা ইউক্রেনের যুদ্ধের চেয়ে বাংলাদেশ কিংবা শ্রীলঙ্কায় কী ঘটছে, সেটাই কিন্তু ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ!”

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *