আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের গাজা পরিকল্পনা মানবে ইসরায়েল, চুক্তি চূড়ান্তের আহ্বান

ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দেওয়া ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির রূপরেখা’ ত্রুটিপূর্ণ হলেও ইসরায়েল সেটি মেনেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর উপদেষ্টা ওফির ফক।

রোববার (২ জুন) ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষৎরে ফক নিশ্চিত করে বলেন, ‘বাইডেনের প্রস্তাবমতো আমরা একটি চুক্তিতে রাজি হয়েছি। চুক্তিটি ভাল নয়। এটি ত্রুটিপূর্ণ। তবে আমরা সব জিম্মির মুক্তি চাই।’

বাইডেনের গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির রূপরেখার খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আরও কাজ করতে হবে বলে জানান ফক। 

তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের হাতে থাকা সব জিম্মির মুক্তি এবং প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে হামাসকে ধ্বংস করার শর্ত থেকে ইসরায়েল সরে আসেনি।

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে মধ্যস্থতাকারীরা হামাস ও ইসরায়েল উভয় পক্ষকেই বাইডেনের প্রস্তাবিত রূপরেখা মেনে নেওয়া এবং বন্দিমুক্তির বিষয়ে একমত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। যাতে গাজাবাসী এবং জিম্মিদের পরিবারগুলোও তাৎক্ষণিকভাবে স্বস্তি পায়।

তবে ইসরায়েল বলছে, হামাস গাজার ক্ষমতায় থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না। ইসরায়েলের এই অবস্থানের কারণে বাইডেনের গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

বাইডেন শুক্রবার (৩১ মে) ইসরায়েল সরকারের দেওয়া একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সামনে এনেছেন, যার রূপরেখা প্রণয়ন করেছেন তিনি-ই। এ পরিকল্পনায় ৩টি স্তর বা পর্যায় রয়েছে।

প্রথম স্তরে গাজায় ৬ সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছে। এ পর্বে রাফাসহ গাজার অন্যান্য জনবহুল এলাকাগুলো থেকে সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে এবং ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি কয়েক শ’ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে হামাস তাদের কব্জায় থাকা কয়েকজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে।

তাছাড়া, এ ছয় সপ্তাহে প্রতিদিন গাজায় প্রবেশ করবে শতাধিক ত্রাণবাহী ট্রাক। হামাস, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা ও প্রতিরক্ষাবাহিনী এ পর্যায়ে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা চালাবে। এ আলোচনা ৬ সপ্তাহের মধ্যে শেষ না হলে পরিকল্পনার প্রথম পর্ব বা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়বে।

স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য হামাস এবং ইসরায়েলের ঐকমত্যের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে গাজায় শান্তি পরিকল্পনার প্রথম স্তর।তারপর শুরু হবে ২য় স্তর।

দ্বিতীয় পর্বে জিম্মিদের সবাইকে মুক্তি দেবে হামাস এবং এর বিনিময়ে গাজার অধিবাসীরা পাবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি। তৃতীয় পর্যায়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ভবন-রাস্তাঘাট নির্মাণ, অর্থাৎ পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে।

গত কয়েকমাস ধরে বাইডেন কয়েকটি প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। সেই প্রস্তাবগুলোও ছিল মূলত একইরকম। এমনকী গত শুক্রবার তিনি যে প্রস্তাবের রূপরেখা প্রণয়ন করেছেন সেটিও প্রায় একইরকম। কিন্তু সব প্রস্তাবই ভেস্তে গেছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে বাইডেন বলেছিলেন, মার্চের পবিত্র রমজান মাসে ইসরায়েল লড়াই বন্ধে রাজি হয়েছে। কিন্তু সেই মাসে ইসরায়েলকে কোনও যুদ্ধবিরতি করতে দেখা যায়নি।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *