খেলার খবর

ভোটার নেই, অলস সময় পার করছেন কর্মকর্তারা

ডেস্ক রিপোর্ট: ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নেই, কেন্দ্রের আশপাশে ঘোরাঘুরি করছেন অনেকে। তারা প্রার্থীর সমর্থক বা উৎসুক জনতা। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। ভোটগ্রহণ শুরুর তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ভোটার উপস্থিতি কম।

বুধবার (৫ জুন) সকালে কুতুবপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে কর্মী সমর্থকদের সরব উপস্থিতি দেখা গেলেও কেন্দ্রে তেমন ভোটার দেখা যায়নি।

বদরগঞ্জের রাধানগর পাঠানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ষাটোর্ধ্ব মফিজুল ইসলাম। ভ্যানে চড়ে ভোট দিতে এসেছিলেন তিনি। ভোটার পরিবেশ সম্পর্কে এই বৃদ্ধ বলেন, একসময় নির্বাচন মানে উৎসব ছিল। সকাল সকাল মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতো। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এখন আর সেই দৃশ্য নেই।

গোপিনাথপুর ইউনিয়নের লালদিঘী ও/এ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কথা হয় জামেলা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিতি বেশি নাই। ভোট দিতে মানুষের মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখি না। আমার আত্মীয় ভোটে দাঁড়িয়েছে এজন্য সকালে এসেই ভোটটা দিলাম।

একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বদরগঞ্জ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২২ হাজার ৭২১ জন আর নারী ১ লাখ ২০ হাজার ৩৩৯ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছের আটজন। সকাল আটটা থেকে ১০৩টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি কম হলেও এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

লালদিঘী ও/এ উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তপন কুমার সরকার জানান, তার কেন্দ্রে দুই ঘণ্টায় (সকাল দশটা পর্যন্ত) ৭৬ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ছয়টি বুথের মধ্যে একটি বুথে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে।

অন্যদিকে রাধানগর পাঠানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়‌‌ ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, সকাল আটটা থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ধান কাটা মাড়াইসহ কৃষি কাজের কারণে সকাল বেলা তেমন ভোটার উপস্থিতি নেই। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার। সকাল নয়টা পর্যন্ত এক ঘণ্টায় ১১ জন ভোট দিয়েছেন।

বদরগঞ্জ পৌর এলাকাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের অন্তত ৪০ জন সাধারণ ভোটার এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী , তিন প্রার্থী, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে ধারণা পাওয়া গেছে, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সচেতন সাধারণ ভোটাররা অধিকাংশই ভোট দিতে যাবেন না।

বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে দুই খালাতো ভাই মুখোমুখি অবস্থানে। তারা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সুইট ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাসান তবিকুর চৌধুরী। তারা উভয়ই নির্বাচনে জোরেশোরে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। দুই খালাতো ভাইকে ভোট দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ভোটার ও আত্মীয়স্বজনরা।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন লড়ছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে রেজাউল করিম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রুবিনা আখতার (ফুটবল), আফরোজা বেগম (কলস) ও লিপি ইয়াসমিন (প্রজাপতি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে বদরগঞ্জ ছাড়াও রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তারাগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিটন ও জাতীয় পার্টির উপজেলা আহ্বায়ক শাহিনুর ইসলাম মার্শাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত তারাগঞ্জ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ২২২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬০ হাজার ৪৯৮ জন। আর নারী ৫৮ হাজার ৭২৪ জন। এখানে ৫৫টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য ২ হাজার ১২৬ জন আনসার, কেন্দ্র ও কেন্দ্রের বাইরে ৬৫০ জন পুলিশ কাজ করছে। এছাড়া ৮ প্লাটুন বিজিবি, ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পর্যাপ্তসংখ্যক র‌্যাবের সদস্য স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *