সারাদেশ

সাগরপাড়ে বেজেছে হুইসেল, প্রধামন্ত্রীকে নিয়ে ছুটল ট্রেন

ডেস্ক রিপোর্ট: সাগরপাড়ে বেজেছে হুইসেল, প্রধামন্ত্রীকে নিয়ে ছুটল ট্রেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

পর্যটন নগরী কক্সবাজারে রেল চালুর হুইসেল বেজেছে। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ ৯২ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটল। প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে রচিত হলো আরও একটি নতুন ইতিহাস।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে উদ্বোধনী ট্রেনটি শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে কক্সবাজার থেকে রামুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধনের পর আইকনিক রেলস্টেশন থেকে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠেন। এর আগে আইকনিক রেলস্টেশন হয়ে রেলের সামনে গিয়ে পতাকা নাড়েন এবং হুইসেল বাজান।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে ৩০০ জন সফরসঙ্গী রয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রেনে উঠার পরে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতেও দেখা যায়। এসময় রেলমন্ত্রীর এবং তথ্যমন্ত্রীও শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার স্লোগান দেন।

গত কয়েকদিন থেকেই কাঙ্ক্ষিত এই রেলপথের উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো কর্তৃপক্ষ। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মঞ্চ তৈরিসহ সকল ট্রায়াল শেষ করা হয়েছে। কয়েক স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে কক্সবাজার ঘিরে।

জেলা শহর ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে সাজ সাজ রব গোটা কক্সবাজারে। সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়া এলাকায় আইকনিক রেলস্টেশনের পাশের সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে বিরাট তোরণ। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের চিত্র তুলে ধরে সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি ছেয়ে গেছে ব্যানারে পোস্টারে।

স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী চপ্পল চ্যাঠি বলেন, আমাদের আবেগের জায়গা এটি। এবং খুব দ্রুত সময়েই এই উন্নয়নটা আমাদের হয়েছে। এর ফলে আমাদের কক্সবাজারের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।

‘ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ কারো হাতে তুলে দিতে রাজি নই’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হইনি বলে ২০০১ সালের নির্বাচনে ষড়যন্ত্র করে হারানো হয়েছে। তাই আমি বলতে চাই ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ কারো হাতে তুলে দিব না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশন চত্বরে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পের রেল চলাচলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নে ১৫ বছরে বদলে গেছে দেশ উল্লেখ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, বাস-ট্রেনে অগ্নিসংযোকারীদের কেবল চোখ নয়, মনও অন্ধকার। তারা বলে আওয়ামী লীগ সরকার কিছুই করেনি।

সাধারণ মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য লাভক্ষতির হিসাব করেননি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশের সঙ্গে কক্সবাজারের রেল যোগাযোগ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে সত্যি আমি খুব আনন্দিত। একটা কথা দিয়েছিলাম, কথাটা রাখলাম। আজকের দিনটি দেশের জনগণের জন্য একটা গর্বের দিন।

এসময় তিনি জানান, রেলে ওয়াইফাই কানেকশন দেওয়া হবে। যাতে করে রেলের মধ্যে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।

;

প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে পর্যটন নগরে খুলল নতুন দ্বার

ছবি: বার্তা২৪.কম

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে এই প্রকল্পের আওতাধীন বাংলাদেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশনেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্য দিয়ে রেলযোগে প্রবেশ করল দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ সমুদ্র নগরীর মানুষ।

শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বহুল কাঙ্ক্ষিত এই রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি ।

পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও বঙ্গবন্ধু টানেলের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে আরেকটি মেগা প্রকল্প উদ্বোধন হলো। দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী আইকনিক রেলস্টেশন চত্বর মাঠে সুধী সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।

এরপর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটবেন এবং প্লাটফর্মে পতাকা উড়াবেন ও হুইসেল বাজাবেন, তারপর প্রধানমন্ত্রী ৩০০ জন যাত্রীসহ কক্সবাজার থেকে রেলেচড়ে রামু পর্যন্ত যাবেন।

২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় এক যুগ পরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আলোর মুখ দেখলো এই প্রকল্প। আজ উদ্বোধন হলেও চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হবে রেল চলাচল।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার এবং রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিলোমিটার। শুরুতেই এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এতে অর্থায়ন করেছে এশিয়ান ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।

;

কক্সবাজারবাসীকে কথা দিয়েছিলাম, কথা রেখেছি: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

‘আজকে আমি সত্যিই আনন্দিত। কক্সবাজারবাসীকে একটা কথা দিয়েছিলাম, সে কথাটা রাখতে পেরেছি। আমি মনে করি আজকের দিনটি দেশের মানুষের জন্য গর্বের। কেননা কক্সাবাজার বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ বালুকাময় একটি সমুদ্র সৈকত। যেটির দৈর্ঘ্য ৮০ মাইল। সাধারণত পৃথিবীতে এত লম্বা বালুকাময় সৈকত বিরল। এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল রেলপথ নির্মাণের। আজ সেটা পূরণ হলো। রেল যোগে কক্সবাজার আসা অনেকের আকাঙ্ক্ষা ছিল। মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষা আমরা পূরণ করে দিতে পেরেছি।’

শনিবার (১১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার-দোহাজারী রেললাইন উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

’কক্সাবাজারবাসী প্রিয় ভাই-বোনেরা আমার’ বলে বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কক্সবাজারের সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। আমার বাবা আমাদের এখানে নিয়ে আসতেন। বেশিরভাগ সময় তিনি কারাগারে থাকতেন। তবে যখন তিনি কারাগারের বাইরে থাকতেন তখন শীতকালে কক্সবাজারে নিয়ে আসতেন। তখন এখানে তেমন কিছু ছিল না। শুধু ছোট ছোট কিছু কটেজ ছিল। রান্নাঘর ছিল কিন্তু নিজেদের রান্না করে খেতে হতো। ১৯৬১ সাল থেকে আমরা প্রায় সময়ই এখানে আসতাম। 

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে একটি যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশকে পথ দেখানোর পেছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসীম অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মাত্র তিন বছর ৭ মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ায়। জাতির পিতার মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ছিল বলেই সেটি সম্ভব হয়েছে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেটি থেমে যায়।

এসময় সরকার প্রধান ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার কথা তুলে ধরে বলেন, মাত্র পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। ২০০১ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর করি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমি গ্যাস বিক্রি করতে রাজি না হওয়ার আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। আমি মুজিবের মেয়ে ক্ষমতার লোভে দেশ বিক্রি করতে পারিনি। সেজন্য আমার কোনো আফসোস নেই। ক্ষমতার জন্য আমি কখনোই আমার দেশের সাথে বেঈমানি করবো না। দেশের সম্পদ কারো হাতে বিক্রি করবো না।

;

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৭ পরিদর্শকের বদলি

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) সাত কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতাধীন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন অর্থ ও পরিকল্পনা) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এক অফিস আদেশে এ বদলি করেন।

বদলির আদেশ পাওয়া কর্মকর্তারা হলেন- চট্টগ্রাম মাদক পন্নাগার চট্টগ্রাম মেট্রো (দক্ষিণ) কার্যালয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন খানকে ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) মতিঝিল সার্কেল, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল মাদক পণ্যাগারের পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলামকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ে, ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ মতিঝিল সার্কেলের পরিদর্শক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের মঙ্গল মাদকদ্রব্য পণ্যাগারে, কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ নুরুল আলম কে চট্টগ্রাম মেট্রো দক্ষিণ কার্যালয়ে, জামালপুর জেলা কার্যালয়ের দর্শক মোঃ শরিফুল ইসলামকে কুমিল্লা জেলা কার্যালয় ও ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ের (উত্তর) সার্কেলের মোঃ মাহবুবুর রহমানকে নাটোর জেলা কার্যালয়ের সার্কেলে পরিদর্শক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

বদলির আদেশে আরও বলা হয়, বদলির আদেশ পাওয়া সবাইকে আগামী ১৩ই নভেম্বরের ভেতরে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *