সারাদেশ

ফোনে মোদিকে অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ডেস্ক রিপোর্ট: পাসপোর্ট অফিস মানেই লম্বা লাইন, দালালের আধিপত্য, ভোগান্তিসহ নানা অভিজ্ঞতা। কারো অভিজ্ঞতা রয়েছে ভোররাতে অফিসের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে শেষ বিকেলে বিষন্ন মনে এলোমেলো কাগজপত্র নিয়ে বেরিয়ে, আবার সব ঠিকঠাক করে পরের দিনের অপেক্ষা করা। অনেকের হয়ত এর থেকে আরো বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ জুন) বেলা ১১টার দিকে খুলনা পাসপোর্ট অফিসে চত্ত্বরে ঢুকতে দেখা গেল এক বৃদ্ধকে। নাকে অক্সিজেনের নল। সাথে দু’জন। একজন হুইল চেয়ার ধরেছেন অন্যজন অক্সিজেন সিলিন্ডার। এ অবস্থা দেখে ওই অফিসের একজন আনছার সদস্য এগিয়ে যান কাছে। এবার তিনজনে ধরে ওই বৃদ্ধাকে নিলেন অফিসের ভেতরে। আনছার সদস্য ওনাদের কাছ থেকে কাগজপত্র নিলেন এবং ফ্রন্ট ডেক্সে জমা দিলেন। দু’মিনিট পর, ফ্রন্ট ডেস্ক থেকে একজন দাঁড়িয়ে কাগজপত্রগুলো আবার ওই আনছার সদস্যকে দিলেন। এবার আনছার সদস্য ভিড় ঠেলে হুইল চেয়ার ধরে নিয়ে গেলেন ১০৪ নম্বর কক্ষে। বেলা ১১টা বেজে ১১ মিনিট। এর মধ্যে শেষ হয়েছে ওই বৃদ্ধার পাসপোর্টের অনলাইন অনুমোদন, ছবি তোলা, চোখ এবং আঙুলের ছাপ নেয়ার কাজ।

তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কথা বলতে পারছেন না। তার সাথে থাকা নাতির সাথে কথা হয়। তিনি জানান, অনেক দিন ধরে উনি অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাব। কিন্তু পাসপোর্ট ছিল না। তাই আজ আসলাম পাসপোর্ট করতে। আমাদের বাড়ি খুলনার টুটপাড়া এলাকায়। ওই এলাকার প্রায় সবাই বলে, পাসপোর্ট অফিসে গেল সারাদিন কেটে যায়। তারপর হয়রানিতো আছেই। সেই ভয়ে আমি এখানে এসে প্রথমে একটা মাধ্যম খুঁজতে চাইছিলাম। কিন্তু সেটা লাগেনি। ঠিক বুঝলাম না। সবাই কি এ অফিস নিয়ে মিথ্যা বলে?

সাথে থাকা নগরীর টুটপাড়া মহিরবাড়ি খালপাড় এলাকার মো. রাতুল হাসান জানান, আমি গতবছর পাসপোর্ট করি। যেদিন কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। তার ২৮দিন পর ছবি তোলার তারিখ দিয়েছিল এ অফিস। আর আজ দেখলাম মাত্র ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে দুজনের সব কাজ হয়ে গেল।

ওই সময় ওই কক্ষে পাসপোর্টের জন্য ছবি তোলা শেষ করে আঙুলে ছাপ দিচ্ছিলেন খুলনার দিঘলিয়া শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা কামরুন্নাহার হাসিনা বানু। তিনি জানান, আমি পাসপোর্ট করবো বলে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি। আমার ধারণা সারাদিন লাগবে। কিন্তু সবমিলিয়ে আমার সময় লেগেছে ২৭ মিনিট। এখন মনে হচ্ছে এক ঘন্টার ছুটি নিয়ে পাসপোর্ট করা যেত।

ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া এলাকার শেখ হেদায়েতুল্লাহ জানান, আমার পাসপোর্টটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। পরে আমি সেটি রিন্যু করতে পাসপোর্ট অফিসে যাই। আমার ধারণা ছিল মাসখানিক লাগবে। কিন্তু দেখলাম মাত্র ১ সপ্তাহের মধ্যে মোবাইলে এসএমএস আসে। তাই পাসপোর্টটি আজ সংগ্রহ করলাম। এখন এই অফিসের চত্বরে আসলেই বুঝাযায় যে, কিছু পরিবর্তন হয়েছে।

জানাযায়, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস খুলনার এ অফিসে প্রতিদিন সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’ পাসপোর্ট আবেদনকারী তারা পাসপোর্ট করেন। এরমধ্যে ৩৮ শতাংশ নারী এবং ৬২ শতাংশ পুরুষ।

বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস খুলনার পরিচালক মোঃ আব সাইদ জানান, আমরা চেষ্টা করছি সকলে মিলে সেবা গ্রহীতাদেরকে উন্নত সেবা দিতে। আমরা সকাল ৯টায় ১০ জন, দুপুর ১টায় ১০ জন এবং বিকাল ৩টায় ১০ জনের উপরে পর্যবেক্ষন করি। এই ৩০ জন সেবা গ্রহীতা তাদের আবেদন জমা থেকে শুরু করে ছবি তোলা, দু’হাতের ১০ আঙুলের ছাপ দেয়া, চোখ স্ক্যান এবং স্বাক্ষর শেষ করে স্লিপ হাতে পাওয়া পর্যন্ত গড় সময় লেগেছে ২৭ মিনিট। এই পর্যবেক্ষনে সর্বনি¤œ ৫ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ সময় লেগেছে ৫৮ মিনিট।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *