সারাদেশ

বাজেটে জনগণের সর্বস্ব লুটের পাকা বন্দোবস্ত করা হয়েছে: ডা. শাহাদাত

ডেস্ক রিপোর্ট: বাজেটে জনগণের সর্বস্ব লুটের পাকা বন্দোবস্ত করা হয়েছে: ডা. শাহাদাত

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪-২৫ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ভোটার বিহীন দুর্নীতিবাজ সরকারের এই বাজেটে জনগণের সর্বস্ব লুটের পাকা বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সংসদে অর্থমন্ত্রীর ঘোষিত ২০২৪-২৫ বাজেটের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন

ডা. শাহাদাত বলেন, জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর ঘোষিত ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত এই বাজেট নজিরবিহীন লুটপাট ও কল্পনার অবাস্তবায়নযোগ্য বাজেট। এই বাজেটে দেশের চরম অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণের কোনো দিকনির্দেশনা নেই। সাধারণ ও গরিব মানুষের জন্য কোনো সুখবর নেই। এটি বাস্তবতা বিবর্জিত, প্রতারণামূলক, লোক দেখানো বাজেট। বাজেটে সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচার প্রতিরোধে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। ক্ষমতার বলয়ের বাইরে সাধারণ মানুষের অনুকূলে এই বাজেট কোনো ভূমিকা রাখবে না। এটা গণবিরোধী বাজেট। ভোটার বিহীন দুর্নীতিবাজ সরকারের এই বাজেটে জনগণের সর্বস্ব লুটের পাকা বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এটা বর্তমান সরকারের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটের লক্ষ্যে প্রণীত অর্থ লুটেরাদের বাজেট। এটা একটা অসম বাজেট। আড়াই লাখ কোটি টাকার এত বড় ঘাটতি বাজেট দিয়ে স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব নয়। যেসব খাত থেকে বাজেট পূরণ করার কথা বলা হচ্ছে, সেটা চ্যালেঞ্জিং। এই বাজেট মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য।

তিনি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি ও দেশি বিদেশি ঋণের দেনা পরিশোধের চাপে এ বাজেট আর্থিক সংকট, ঋণ নির্ভর ও ঘাটতিসহ বহুমুখী চ্যালেঞ্জের বাজেট। ৭ লাখ ৯৭ কোটি টাকার এই বাজেটে রাজস্ব ও অন্যান্য খাত থেকে মোট আয় ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি ২ লক্ষ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হচ্ছে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ ঋণ এক লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অনুদান চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর বাইরে মূল সমস্যা হচ্ছে আইএমএফ কর্তৃক ঋণ প্রাপ্তির বিভিন্নমুখী চাপ এবং বিভিন্ন দেশি বিদেশি দেনা পরিশোধের চাপ।

তিনি বলেন, ঋণ ও ঘাটতিভিত্তিক বড় বাজেট অতীতে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি আগামীতেও সম্ভব হবে না। একটি অনির্বাচিত সরকারের উপর করদাতারা আস্থা রাখে না, যার ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহ প্রয়োজনীয় কর আদায় করতে পারে না। যথেষ্ট রাজস্ব আদায় না হওয়ার কারণে এ বছরের বাজেট হবে আরও বেশি ঋণ ও ঘাটতিনির্ভর।

ঘোষিত বাজেটকে কল্পনাবিলাসী বাজেট উল্লেখ করে শাহাদাত বলেন, যে বাজেট প্রস্তাব করেছে, তা বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক দুর্নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষার এক বার্ষিক ঘোষণাপত্র মাত্র। বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে যাওয়া, বেপরোয়া অর্থপাচার, জনগণের কাঁধে রাষ্ট্রীয় ঋণের বোঝা একেবারের জন্যেও স্বীকার করা হয়নি। পরিত্রাণের উপায়ও বলা হয়নি। তেমনিভাবে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে সুশাসন ও ন্যায়বিচারের ধারণাকে।

তিনি বলেন, বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিয়োগসহ সামষ্টিক অর্থনীতির যেসব প্রক্ষেপণ করা হয়েছে তা অর্জনযোগ্য নয়। দেশের চরম অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ। এই চাপ মোকাবিলায় প্রস্তাবিত বাজেটে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই। বিদু্ৎ, জ্বালানি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য অনেক আগেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কোনো পথরেখা না দিয়েই কিভাবে মূল্যস্ফীতির টার্গেট ঘোষণা করেছে তা বোধগম্য নয়। আমদানি, রপ্তানি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান প্রভৃতি সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো আলোচনা করলেই স্পষ্ট যে, প্রবৃদ্ধি অর্জন নিতান্তই কল্পনাপ্রসূত। যা কঠিন এবং অসম্ভব। জিডিপি ও রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা দৃশ্যমানভাবেই প্রতারণার শামিল।

বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত এই বাজেটকে প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, দেশের অর্থনীতি এখন মহাবিপর্যয়ে রয়েছে। বর্তমানে ডলারের সংকট প্রকট। পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলতে গেলে প্রায় সব ব্যাংক ফিরিয়ে দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।আজকে যে বাজেট পাস হলো, সেটি গণবিরোধী, জীবনযাত্রার মানকে নিম্নমুখী করা, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিসহ মানব উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা ও জনগণের পকেট কাটার বাজেট।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

‘রাজধানীর প্রাকৃতিক জলাশয় রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে’

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর প্রাকৃতিক জলাশয়গুলো উদ্ধার ও রক্ষায় ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে ভূমিসেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।

সাবিরুল ইসলাম বলেন, রাজধানী ও আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রাকৃতিক জলাশয়গুলো ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬১টি পুকুর উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া হাজার খানেক পুকুর ও জলাশয় চিহ্নিত করা হয়েছে। শীঘ্রই রাজউক ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে নিয়ে ভরাট ও দখলকৃত প্রাকৃতিক জলাশয় এবং পুকুরগুলো উদ্ধার অভিযানে নামা হবে। এছাড়া খাল ও নদী দূষণের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

ভূমি অফিসে দালাল নির্মূলের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে সবখানে দালাল শ্রেণির লোকজনের আধিপত্য ছিল। বিদ্যুৎ, ওয়াসা ও ভূমি নামজারিসহ নানা সেক্টরে দালাল ছিল। কিন্তু ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে দালাল সবখানে কমে এসেছে। এখন নামজারি আবেদন, পর্চা, মৌজার ম্যাপ অনলাইনে আবেদন করা যাচ্ছে। নামজারির ফি মোবাইল ব্যাংকিং যেমন- বিকাশ, নগদ, রকেটসহ নানা মাধ্যমে দেয়া যাচ্ছে। এতে করে দালালের দৌরাত্ম কমে গেছে। এখনো পুরোপুরি যে শেষ হয়ে গেছে এমন বলব না। তবে দালালচক্রের বিরুদ্ধে যদি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে আর এই চক্রে যদি আমাদের অফিসের কেউ জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

ভূমি সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি জানান, প্রত্যেক জমির মালিকের মোবাইল নম্বর সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত করা হচ্ছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রত্যেক ভূমির মালিক ঘরে বসেই খাজনা, ই-নামজারি, পর্চাসহ যাবতীয় ভূমি সেবা নিতে পারবেন। এজন্য প্রত্যেক ভূমি অফিসে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী আবেদন করার জন্য আলাদা লোকবল নিযুক্ত করা হয়েছে, যেন কোনো ভূমির মালিক দালালের হয়রানির শিকার না হন।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ঢাকা বিভাগের ৮৯টি উপজেলার মধ্যে ৭৪টি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হয়েছে। ঢাকা বিভাগে ৫ম পর্যায়ের ২য় ধাপে ভূমিহীন ৫৮৩ পরিবার সরকারি ঘর পাবে। আগামী ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন।

তিনি বলেন, প্রথম বারের মতো ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪৮টি খাস পুকুর সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে ৩২,২১২টি পরিবারকে একক গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে এবং তাদের জমির নামজারি ও কবুলিয়ত হস্তান্তর করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঢাকা বিভাগে ২৮ দিনে ই-নামজারীর মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এবং শতভাগ হোল্ডিং অনলাইনে এন্ট্রি করা হয়েছে। এর ফলে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের হার ছিল ৭৮.৬০ শতাংশ। গত দুই বছরে প্রায় ২৫ একর নদীর দখলকৃত জমি উদ্ধার করা হয়েছে। ভূমি আইনের সংস্কার এবং প্রযুক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিদ্যমান আইন ও বিধির সংস্কার, নতুন আইন প্রণয়ন এবং সেবা সহজীকরণে নতুন পরিপত্র জারি করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সারাদেশে শহর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্বে ১০৪৩টি আধুনিক ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় পর্বে আরও ১৩৩৩টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবনের নির্মাণ কার্যক্রম চলমান আছে। ই-রেজিস্ট্রেশন ও ডিজিটাল ভূমিসেবা সিস্টেমের আন্তঃসংযোগ ঘটানোর জন্য ১৭টি উপজেলায় পাইলট ভিত্তিতে এই কার্যক্রম চলমান রয়েছে। স্মার্ট ভূমি নকশা, ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ, এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ভূমি পিডিয়া চালুর মাধ্যমে ভূমি সেবা আরও সহজ ও কার্যকর করা হচ্ছে। এছাড়া নাগরিকদের অভিযোগ ও সেবা সম্পর্কে জানাতে হটলাইন (১৬১২২) চালু রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মমিনুর রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) বিশ্বাস রাসেল, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শিবলী সাদিকসহ প্রমুখ।

;

ত্রাণ নয়, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চান তিস্তা পারের বাসিন্দারা

ছবি: বার্তা২৪.কম

যুগের পর যুগ প্রমত্তা তিস্তা নদী গিলছে একরের পর একর আবাদি জমি, বসতভিটা।ফলে তিস্তার করাল গ্রাসে নিঃস্ব হচ্ছেন এই নদী পারের লাখো মানুষ। বর্ষার আগেই এই নদী ভাঙনে নাকাল তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা।

মূলত কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবেই দীর্ঘ হচ্ছে ক্ষতির পরিমাণ। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ভাঙন ঠেকাতে নামমাত্র বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) দিয়ে দায় সারছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

এ নিয়ে পাউবো টেকসই পরিকল্পনার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানালে নদী অধিকার কর্মীদের অভিযোগ, মহাপরিকল্পনা না নিয়ে জোড়াতালি প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা অপচয় করছে প্রতিষ্ঠানটি।

স্থানীয়রা জানান, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তার তীরঘেঁষা গ্রামটিতে। এক হাজার পরিবারের বসবাস। গেলো এক মাসে ভাঙনে বিলীন হয়েছে অন্তত দেড় কিলোমিটার এলাকা। আর অব্যাহত ভাঙনে নির্ঘুম রাত পার করছেন বাসিন্দারা। তারা জানান, এখানকার রাস্তাতো চলেই গেছে এখন বাড়িগুলোও গিলছে তিস্তা। এভাবে একদিন গ্রামটাও নাই হয়ে যাবে। ভয়াবহ এ অবস্থা নিয়ে ‘এখন সবাই আতঙ্কে। এলাকাবাসীরা চান না জিও ব্যাগ, দাবি তাদের তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন।

চলমান এ ভাঙনে চোখে-মুখে আতঙ্ক ৭০ বছরের মর্জিনা বেগমের। তিনি জানান, ‘গেলো কয়েক দিনে তিস্তা গিলেছে তিন বিঘা আবাদি জমি। এখন বসতভিটা হারানোর ভয়ে দিন গুনছি। আমাদের বাড়িঘর থাকবে কি থাকবে না, সেই আতঙ্কে দিন কাটছে আমাদের।’

অশ্রুসিক্ত কন্ঠে তিস্তা পারে বসবাসরত বাসিন্দা আলেয়া বলেন, ‘মোর বাপ-মা ভাগি গোষ্ঠীর কবরগুলা গেইছে তিস্তার প্যাটোত। নিজে চোখে এই দৃশ্য দেখিয়া কষ্টের শ্যাষ নাই। এলা তিস্তা এপ্যাকে আওগাইতে আওগাইতে বাড়ির বগোলত আলছে। এবার বুঝি হামার শেষ আশ্রয়ের বাড়িকোনাও খাইবে তিস্তা। হারা বন্যাত ভাত চাই না, তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাজেট হোক হামারগুলার কান্না বন্ধ হোক। প্রধানমন্ত্রীর কাছে হামার এই একটাই দাবি।’

বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশ অংশে ১১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তার ১০০ কিলোমিটারই ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষার আগেই এর বিভিন্ন অংশে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। তিস্তার আগ্রাসনে প্রতি বছর ক্ষতি হচ্ছে অন্তত এক লাখ কোটি টাকা।

রংপুর পাউবোর প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান জানান, এর টেকসই সমাধানে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। আর বন্যা মোকাবেলায় রয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। তিনি বলেন, ‘তিস্তায় প্রায় ১০০ কিলোমিটারের মতো জায়গা ভাঙনপ্রবণ। এখানে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরির প্রচেষ্টায় আছি। এটি হতে সময় – লাগবে। তবে এর বাইরে যদি ভাঙন – দেখা দেয়, তাহলে আমরা সেখানে গত বছরের মতো জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিবো।’

এ বিষয়ে রংপুর তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, ‘মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করে তিস্তা শাসন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। পাউবো প্রতিবারই নতুন নতুন প্রকল্প হাজির করে। তবে এসব প্রকল্পকে টাকা অপচয় ছাড়া আমরা কিছু মনে করি না। এসব বন্ধ করে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের যে সুনির্দিষ্ট কাজ রয়েছে, সেটি শুরু করতে হবে।’ এদিকে, উজানের ঢলে গেল দুবছর ধরে তিস্তায় আসছে কাদা পানি যাতে করে জীববৈচিত্র্যও এখন হুমকির মুখে।

;

সিলেটে পাঠাও কর্মীর মরদেহ উদ্ধার, আটক ১

ছবি: বার্তা২৪.কম

সিলেট নগরীর মানিকপীরের টিলার কবরস্থান থেকে আব্দুল হাসান সাবিল (২৬) নামে পাঠাও’র এক কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে মানিক পীর টিলার রেলিংয়ের পাশ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত সাবিল (২৬) জকিগঞ্জ উপজেলার আব্দুল হান্নান শিমুলের ছেলে। তিনি সিলেট মহানগরীর ইলেকট্রিক সাপ্লাই রোডে থাকতেন।

এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত একজনকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আটক করেছেন পুলিশ। তাৎক্ষণিক তার নাম পরিচয় জানা যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজবাহার আলী শেখ।

মানিকপীর টিলা কবরস্থানের এক নিরাপত্তা কর্মী জানান, ‘উপর থেকে হঠাৎ এক বয়স্ক লোক তাদের জানান, উপরে একটি মরদেহ পড়ে আছে। পরে তারা অফিসের লোকদের জানান এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দেখতে পান। আশপাশের লোকজন তাদের জানিয়েছেন দুই যুবকের মারামারিতে তার মৃত্যু হয়েছে।’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মানিকপীরের কবরস্থানের টিলায় ওঠার সিঁড়ির পাশে এক যুবকের মরদেহ পড়ে থাকার খবর পায় পুলিশ। দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এসময় মরদেহের পাশ থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি ও পাঠাও কুরিয়ারের একটি প্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ছুরি দিয়েই তাকে হত্যা করা হয়েছে।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে শিমুল পাঠাও কুরিয়ারে কাজ করতেন। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালে কাজে বের হন তিনি। দুপুরে পুলিশের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ দেখতে পান।

এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে পুলিশ ইতোমধ্যে আটক করেছে।

;

বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আ.লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের মিছিল

ছবি: সংগৃহীত

সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকারে ঘোষিত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ দলের অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকালে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং বিভিন্ন স্থানে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের বিভিন্ন থানা-ওয়ার্ডেও আনন্দ মিছিল ও শুভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকারে ঘোষিত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ বৃহস্পতিবার বিকালে দলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে আনন্দ মিছিল ও শুভাযাত্রা করে। এতে দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে মহানগরের নেতারা অংশ নেন। প্রস্তাবিত বাজেটকে গণমুখী আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান নেতারা।

বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে বিকাল ৫টায় রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আনন্দ মিছিল করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবলীগ। নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির দক্ষিন শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইনউদ্দিন রানা ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজাসহ নগর ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় এইচ এম রেজাউল করিম রেজা সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকারে ঘোষিত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেটের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। অঙ্গীকারে ঘোষিত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে রাজধানীতে আনন্দ মিছিল ও শোভাযাত্রা করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেট উত্থাপনের পরপরই মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার বিকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের নেতৃত্বে এ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, এবারের বাজেট অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণমুখী ও শিক্ষাবান্ধব। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, শেখ হাসিনা সরকারের এই বাজেট সম্ভাব্য সব চ্যালেঞ্জের প্রত্যেকটি সূচকে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগ সরকারের বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান তিনি। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়।

এদিকে বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ দলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে আনন্দ মিছিল বের করে কৃষক লীগ। এতে সংগঠনটির সভাপতি সমীর চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। একইভাবে বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে রাজধানীতে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে মৎসজীবী লীগ। নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমান সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর নষ্কর।

বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে ডেমরা-যাত্রাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা। এতে অংশ নেন যাত্রাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, সাধারন সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না, যাত্রাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগের নেতা মো: জিয়াউদ্দিন জিয়া, ৪৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী আবুল কালাম অনু, ৬৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামসুদ্দিন আহমেদ ভ’ইঁয়া সেন্টু, ৬৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান পলিন, সারুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, ৬৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি কাজী খলিলুর রহমান খলিলসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *