আন্তর্জাতিক

সংস্কৃতি খাত আজীবন অবহেলিত : নাসির উদ্দিন ইউসুফ

ডেস্ক রিপোর্ট: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে। এবারের মোট বাজেট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। তারমধ্যে সংস্কৃতি খাতে প্রস্তাবিত বাজেটের পরিমাণ ৭৭৯ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের শতাংশের হিসাবে শূন্য দশমিক ১০। এবারের বাজেট নিয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসিদ রণ

আজ জাতীয় বাজেট প্রস্তাবনায় সংস্কৃতি খাতের বাজেট নিয়ে কী বলবেন?

শুধু আজ নয়, সংস্কৃতি খাত আজীবন অবহেলিত। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যা বাজেট দিয়েছে তা নিশ্চিতভাবেই অপ্রতূল। আমরা বুঝতে পারছি যে, বর্তমান সময়টা সারা বিশে^র জন্যই অর্থনৈতিকভাবে অস্থির। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মন্দার খবরও তো কারো অজানা নয়। এমন পরিস্থিতিতে আগের চেয়ে বড় বাজেট করাটাই অনেক কঠিন। কিন্তু সংস্কৃতি খাতে যে পরিমাণ বাজেট দিয়েছে সেটি নিয়ে আমি চিন্তিত নই।

নাসির উদ্দিন ইউসুফ

তাহলে কি বলতে পারি আপনি এই বাজেটে তুষ্ট?

আমি বলেছি বাজেটের পরিমাণ নিয়ে ভাবছি না। তবে এই যে বাজেটটা দেওয়া হলো, সেটার পেছনে নতুন কোন স্বপ্ন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা আছে কি না সেটা দেখা জরুরী। আমার ধারনা, তেমন কোন পরিকল্পনা কারও নেই। আমরা তো অতীতে দেখেছি সংস্কৃতি খাতে এতো অল্প বাজেট দেওয়ার পরও সেই বাজেটের টাকা সরকারের কাছে ফেরত পর্যন্ত গেছে। তার মানে হলো, টাকাগুলো কোন খাতে ব্যয় করা হবে তার কোন পরিকল্পনা নেই। শিল্পকলা একাডেমিতে যে বাজেট দেওয়া হয় তার ৮০ ভাগই খরচ হয় শুধুমাত্র স্টাফদের বেতন বাবদ। বাকীটা ব্যবহৃত হয় ক্রিয়েটিভ কাজে। আদতে হওয়া উচিত ছিল উল্টো। ৮০ ভাগ ব্যয় হওয়ার কথা ক্রিয়েটিভ কাজে, বাদ বাকীটা বেতন ভাতায়। ফলে কতো টাকা এই খাতে বাজেট দিলো না নিয়ে এখন আর ভাবি না। ৫২ বছর ধরে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কাজ করছি। এতো বছর তো অনেকের আয়ুও থাকে না। আর কিছু তো জীবনে করিনি। আমাকে নানা কাজে কখনো দেখাও যায়নি। সংস্কৃতির উৎকর্ষতা হবে কিভাবে সে কথাই সব সময় মাথায় থাকে। এখনো যদি কেউ আমার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে না পারেন তাহলে তো কিছু বলার নেই।

নাসির উদ্দিন ইউসুফ

সংস্কৃতির বিকাশের জন্য কোন ধরনের কাজ করতে গেলে সরকারের কতোখানি সহযোগীতা পেয়ে থাকেন?

মূলত সাংস্কৃতিক খাত কিন্তু বেসরকারি খাত। ফলে এটির উন্নয়নে ব্যক্তি উদ্যোগই সবচেয়ে বড় বিষয়। তবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বা কোন কর্মসূচিতে সরকারি সহযোগীতা কিংবা দিক নির্দেশনা থাকতে পারে। সেদিক থেকে বলবো, কোন নতুন স্বপ্ন কিংবা আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে গেলে আমরা সেভাবে সহায়তা পাই না। আপনারা দেখেছেন, কিছুদিন আগে সারা দেশের প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণে আমরা একটি বড় ফেস্টিভ্যাল করেছি। এটি নিয়ে বিগত ১২ বছর ধরে গবেষনা করেছি। লাস্ট তিন বছর ধরে এই উৎসবের জন্য নাটকের কাজ হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের নিয়ে প্রতিটি বিভাগ থেকে একটি করে নতুন নাটক নামিয়ে শোতে আমার প্রদর্শণ করেছি। এ ধরনের কাজ গোটা এশিয়াতে হয়নি। দর্শক ভীষণ আলোড়িত হয়েছে কাজ দেখে। অথচ আমরা সেভাবে সরকারী কোন সহায়তা পাইনি। আমাদের নিজস্ব অর্থায়ন, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে কর্পোরেট স্পন্সর দিয়ে কাজটি শেষ করেছি। একদম শেষ মুহূর্তে সাংস্কৃতিক মন্ত্রনালয় ১০ লক্ষ্য টাকা দিয়েছে।

নাসির উদ্দিন ইউসুফ

কাজ নিয়ে আপনার সামনের পরিকল্পনা কি?

অনেকেই জানেন আমি আর সেলিম আল দিন গ্রাম থিয়েটার শুরু করেছিলাম এদেশে। আবারও আমি গ্রাম থিয়েটার নিয়ে সিরিয়াসলি কাজ করতে চাচ্ছি।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *