আন্তর্জাতিক

সিরিয়ার গমের ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন সশস্ত্র কুর্দি নারীরা

ডেস্ক রিপোর্ট: এক হাতে অস্ত্র এবং অন্য হাতে স্কার্ফ ঠিক করছেন ইয়াসমিন ইউসেফ। তিনি সিরিয়ার উত্তর-পূর্বের বিস্তৃীর্ণ একটি গমের খেত পাহারা দিচ্ছেন। এই গমের খেতগুলো দেশটির আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস এবং রুটির ঝুড়ি হিসেবে খ্যাত।

রয়টার্স জানিয়েছে, আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি-নেতৃত্বাধীন অঞ্চল কাহতানিয়ার নিকটবর্তী গম খেতগুলো অগ্নিসংযোগকারীদের হাত থেকে রক্ষায় নিয়োজিত কয়েক ডজন নারী স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে ৪২ বছর বয়সি এই ইয়াসমিন ইউসেফও একজন।

ইয়াসমিন ইউসুফ বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হল কৃষকদের সেবা করা এবং তাদের ফসল রক্ষা করা।’ এক থেকে দুই মাস তারা এই দায়িত্ব পালন করেন বলে জানা গেছে।

ইয়াসমিন এএফপি-কে বলেন, ‘খেতে যদি আগুন লাগলে আমাদের সরাসরি জানানো হয় এবং তখন আমরা ফায়ার ট্রাকগুলোকে কল করি।’

কয়েক বছর খরার পর ব্যাপক বৃষ্টির কারণে চলতি বছর উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

তবে বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন যে, গ্রীষ্মের দাবানল তাদের মূল্যবান ফসল ধ্বংস করতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতির কারণে মধ্যে ২০২৩ সালে কৃষি উৎপাদন পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘সরকারি পরিসংখ্যান ২০২৩ সালের জন্য গমের দ্বিগুণ ফলনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।’

অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস ওয়ার মনিটর জানিয়েছে, ২০১৯ সালের জুনে এই অঞ্চলের গমের খেতগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ১০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়।

ইয়াসমিন ইউসেফ বলেন, ‘প্রথমে লোকেরা আমাদের প্রচেষ্টাকে বিশ্বাস করেনি। তারা ভেবেছিল, আমরা এসব কী করছি।’

তিনি বলেন, ‘এখন সবাই জমি রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনে একমত হয়েছেন। আমরা সম্পূর্ণভাবে এই ফসলের উপর নির্ভরশীল। আমরা যদি এটি হারাই, তবে আমাদের কী হবে।’

কুর্দি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের বাসিন্দারা এবং কর্মকর্তারা এএফপি-কে বলেছেন, খেতে প্রায়ই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতো। ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকার ফসল পুড়িয়ে দিত।

স্বেচ্ছাসেবক রেনকিন হাসান জনগণকে সিগারেট পরিত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, জ্বলন্ত সিগারেট থেকে দুর্ঘটনাক্রমে আগুন লাগতে পারে।

সামরিক পোশাক পরা সশস্ত্র অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে টহলরত রেনকিন হাসান বলেন, ‘আমরা আইএসকে আর আগুন লাগাতে দেব না। আমার জমি নেই, তবে আমি প্রতিদিন এখানে আসি যাতে কৃষকরা আগুন নিয়ে চিন্তা না করে তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারে।’

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বছর ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি স্থানে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

অ্যাসল্ট রাইফেল কাঁধে ফুলের পোশাক পরিহিত আতিয়া হাসান বলেন, তার লক্ষ্য ফসল পুড়িয়ে ফেলা প্রতিরোধ করা এবং নিজেদের রক্ষা করা।

তিনি বলেন, ‘লোকেরা যখন আমাদের দেখে খুশি হয় এবং তখন আমরাও আমাদের প্রচেষ্টার জন্য গর্বিত বোধ করি।’

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *