খেলার খবর

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা জিইয়ে রেখে বিশ্বকাপ শেষ বাংলাদেশের

ডেস্ক রিপোর্ট: সেমির আশা শেষ হয়ে গিয়েছে আরও আগেই। সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ার পর ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা করে নেওয়াটাই ছিল টাইগারদের মূল লক্ষ্য। লঙ্কানদের বিপক্ষে জয়ের পরই তা অনেকটা নিশ্চিত হয়েছিল। সেটি পুরোপুরি নিশ্চিত করতেই আজ অজিদের বিপক্ষে এই আসরের নিজেদের শেষ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলো টাইগাররা, তবে কাঙ্ক্ষিত জয়ের দেখা পায়নি নাজমুল হোসেন শান্তরা।

এতে শঙ্কার মুখে পড়েছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা। আগামীকাল ভারত-নেদারল্যান্ডস ম্যাচে যদি নেদারল্যান্ডস জিতে যায়, অথবা ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে সমীকরণ অনুযায়ী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা নিশ্চিত হয়ে যাবে ডাচদের।

শনিবার পুনেতে ৩০৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় ওভারে ওপেনার ট্র্যাভিস হেডকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তাসকিন আহমেদ। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে এক উইকেট হারিয়ে অজিরা সংগ্রহ করে ৬০ রান।

ধাক্কা খেয়েও বেশ সাবলীলভাবে উইকেটের দুই পাশ থেকেই রানের গতি সচল রাখেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। ৬১ বলে ৫৩ রান করে মুস্তাফিজের ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন ওয়ার্নার। দলের দুই ওপেনার ফিরে গেলেও শক্তভাবে ব্যাট হাতে ঘাঁটি গাড়েন মিচেল মার্শ এবং স্টিভেন স্মিথ। ৮৭ বলে এই বিশ্বকাপ আসরে নিজের দ্বিতীয় শতকটি তুলে নেন মার্শ। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৭৭ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচসেরা হন তিনি। তার সতীর্থ স্মিথও ছিলেন ৬৩ রানে অপরাজিত।  

টাইগার বোলাররা পরে আর কোনো উইকেট শিকার করতে ব্যর্থ হওয়ায় ৩২ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটের বিশাল জয় তুলে নেয় অজিরা। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে থেকেই প্রথম পর্ব শেষ করল অস্ট্রেলিয়া, অপরদিকে ৪ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে রইল বাংলাদেশ। 

এর আগে পুনের মাঠে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়েছেন শান্ত–হৃদয়রা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দলীয় সর্বোচ্চ ৩০৬ রানের রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ। এই বিশ্বকাপ আসরে এটিই ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রান এবং সবচেয়ে ভালো ব্যাটিং পারফরম্যান্স।

শুরু থেকেই সাবলীল ভঙ্গিতে ব্যাট করতে থাকেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ তামিম। শুরুতে কিছুটা ধীরস্থিরভাবে খেললেও সময় গড়ালে চড়াও হন বোলারদের ওপর। প্রথম পাওয়ার প্লেতেই তুলে নেন ৬২ রান। পাওয়ার প্লে শেষে রানের গতি আরও বাড়িয়ে এগোতে থাকেন তারা। তবে দলীয় ৭৬ রানের মাথায় শন অ্যাবোটের ওভারে ব্যক্তিগত ৩৬ রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম।

উইকেট বাঁচিয়ে খেলতে থাকেন লিটন। বড় ইনিংসের আশা জাগিয়েও ব্যর্থ হলেন তিনি। দুই ওপেনারের ফেরার পর রানের গতি সামলানোর দায়িত্ব নেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়। বড় সংগ্রহের পথে এগোচ্ছিলেন শান্ত ও হৃদয়। শান্ত কিছুটা বুঝেশুনে খেললেও আগ্রাসী ভাবে ব্যাট করতে থাকেন হৃদয়। ছন্দে ফেরা বাংলাদেশের অধিনায়ক শান্ত ৫৭ বলে ৪৫ রানে ফিরলে ভাঙে তৃতীয় উইকেটে ৬৪ রানের জুটি।

নিজের শেষ বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে এরপর মাঠে নামেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শুরু থেকেই ব্যাট হাতে তার আগ্রাসী মনোভাব দেখে মনে হচ্ছিল শেষ ম্যাচটা ভালোভাবেই রাঙিয়ে তুলবেন তিনি। তবে রান আউটে কাটা পড়ে ৩২ রানে ফিরতে হয় তাকে। বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না মুশফিকুর রহিমও।

তবে আরেক প্রান্তে থিতু হয়ে বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে খেলতে থাকেন হৃদয়। ৬১ বলে তুলে নেন ফিফটি। এরপর বাড়ান রানের গতি। তবে তাকে ফেরান অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিস। ৭৯ বল খেলে দলের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। শেষদিকে মেহেদী হাসান মিরাজের ২০ বলে ২৯ রানের ইনিংসে ভর করে তিন’শ পেরিয়ে ৩০৬ রানে থামে বাংলাদেশ। 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *