সারাদেশ

নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী তন্ত্র-মন্ত্রের ‘পাতা খেলা’

ডেস্ক রিপোর্ট: নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী তন্ত্র-মন্ত্রের ‘পাতা খেলা’

ছবি: বার্তা২৪.কম

মাঠের মাঝখানে পুঁতে রাখা হয়েছে লম্বা কলা গাছ। তার নিচে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন রকমের ফল, পাশেই মাটির পাত্রে রেখেছে গরুর দুধ। কলা গাছের গোড়ায় পানি ভর্তি মাটির ঘটি। তার চারপাশ চুন দিয়ে বৃত্তাকারে ঘিরে রাখা হয়েছে। খেলার মাঠটিও বৃত্তাকারে চিহ্ন দেওয়া হয়েছে। ঘটির পানিতে হাত ভিজিয়ে মাঠের বিভিন্ন পাশে খেলোয়াররা অবস্থান নিয়ে মাটিতে হাত রেখে শুরু হলো মন্ত্র পড়া। এ খেলাটির নাম তন্ত্র-মন্ত্রের ‘পাতা খেলা’। খেলায় মন্ত্রী (ওঝা বা তান্ত্রিক) এবং হাত খেলা বা পাতা হিসেবে থাকে।

শুক্রবার (৭ জুন) বিকেলে নওগাঁর সদর উপজেলার লখাইজানি বাজারের পাশে স্থানীয় সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁ হাপানিয়া শাখার আয়োজনে খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢোলের তালে তালে বিভিন্ন স্থান থেকে খাল-বিল পাড়ি দিয়ে পাতারা ( যারা এ খেলা খেলেন) ছুটে আসছেন। কবিরাজরা বিভিন্ন মন্ত্র পড়ে পানিতে ফুঁ দিচ্ছেন আর সেই পানি পাতাদের গায়ে ছিটাচ্ছেন। আর এই খেলা দেখতেই বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। খেলায় ওঝা বা তান্ত্রিক মন্ত্রের সাহায্যে বেশি পাতাকে বস করে দাগের বাহিরে নিয়ে আসতে পারলে সেই ওঝা বা তান্ত্রিক জয়লাভ করবে। অন্যদিকে পাতা ওঝার মন্ত্রে নিজেকে স্থির রেখে দাগের ভেতরে থাকতে পারলে তাকেও বিজয়ী বলে ঘোষণা করা হয়।

পাতা খেলা দেখতে আসা সুকমল বলেন, আমার বাড়ি পাশের গ্রাম শালুকায়। পাতা খেলা গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া একটি খেলা, যা বিলুপ্তির পথে। ঢোলের শব্দ শুনে বাড়ি থেকে চলে আসলাম এই খেলাটি দেখতে। ছোট বেলায় বাবার সাথে এসে অনেক দেখেছি কিন্তু এখন আর তেমন চোখেই পড়েনা। যারা এ ধরনের আয়োজন করেছেন তারা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।

স্থানীয় বাসিন্দা রাফি হোসেন বলেন, আমাদের গ্রামে এর আগেও অনেকবার পাতা খেলা হয়েছে কিন্তু এবার মানুষের ভিড় বেশি, যা দেখে খুবই ভালো লাগছে। মাঝে মাঝে এই ধরনের আয়োজন করলে খুবই ভালো হবে বলে আমি মনে করি।

লখাইজানি গ্রামের গৃহবধূ ময়না বলেন, আমার এই গ্রামে বিয়ে হয়েছে প্রায় ১৮ বছর আগে। মাঝে মধ্যেই পাতা খেলা দেখতে সবারই ভালো লাগে। আমাদের গ্রামে এতো মানুষ এসেছে সেটা দেখে ভালো লাগছে কিন্তু পাতা খেলা দেখতে আরও বেশি সুন্দর লাগছে।

কবিরাজ আব্দুল আজিজ জানান, প্রথম আমপাতা সংগ্রহ করে কাসার হাঁড়িতে সেটা রাখা হয় এরপর সেখানে সামান্য পানি নিয়ে মন্ত্র পড়ে ফুঁ দিয়ে পাতাদের গায়ে দেওয়া হয় যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমি প্রায় ২০ বছরের অধিক সময় ধরে এই পাতা খেলার সঙ্গে জড়িত।

একুশে পরিষদ নওগাঁ হাপানিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান স্বপন বার্তা২৪.কমকে বলেন, গ্রামের সাধারণ মানুষদের আনন্দ দিতেই আমাদের এই আয়োজন করা। যুব সমাজ এখন বিভিন্ন নেশা ও মোবাইলে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের খেলা খারাপ কাজ গুলো থেকে আমাদের যুবসমাজকে দূরে রাখবে বলে আমি মনে করি। তাই সামনে থেকে আরও বড় পরিসরে এই পাতা খেলা এবং গ্রামীণ খেলাগুলো গ্রামের সাধারণ মানুষের মাঝে তুলে ধরা হবে।

রাজধানীতে জাল টাকা চক্রের প্রধান আটক

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকা চক্রের মূলহোতাকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগ।

শনিবার (৮ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, কদমতলীতে জাল টাকা চক্রের মাফিয়া জাকিরকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে কারখানারসহ কোটি কোটি জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।।

মশিউর আরও বলেন, অভিযান চলমান রয়েছে। বিস্তারিত জানাতে অভিযান স্থলে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অভিযান চলমান রয়েছে।

;

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৩১

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৩১ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ। মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (৭ জুন) সকাল ছয়টা থেকে শনুবার (৮ জুন) সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ তাদেরকে আটক করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৬৯ পিস ইয়াবা, ২২৭ গ্রাম হেরোইন ও ৪৬ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জা‌নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

ডিএমপির নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এ অ‌ভিযান প‌রিচালনা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। সেই সঙ্গে আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২০টি মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানানো হয়।

;

মেহেরপুরে অস্থির গরুর হাঁট, দামে খুশি নন কেউ

ছবি: বার্তা ২৪

কোরবানির পশুর হাট কেন্দ্র করে চাঙ্গা হয় মেহেরপুরের গরু পালনকারী এবং স্থানীয় গরু ব্যাপারীরা। তবে এবার সেই চিত্র বেশ ভিন্ন। গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে বেশি দরে গরু বিক্রি করছেন খামারীরা। সেই গরু স্থানীয় কোরবানির পশু বাজারে তুলে লোকসানে বিক্রি করতে হচ্ছে ব্যাপারীদের। দর নিয়ে খামারী, ব্যাপারী আর ক্রেতাদের মাঝে বিরাজ করছে বেশ অস্থিরতা।

সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার ও সোমবার বামন্দী-নিশিপুর পশু হাট বসে। মেহেরপুর জেলা তো বটেই আশেপাশের জেলাগুলোর মধ্যেও এ হাটটি কোরবানির বড় পশু হাট হিসেবে বিবেচিত। গেল শুক্রবার (৩১ মে) থেকে এখানে কোরবানির পশু কেনাবেচা শুরু হয়। গতকাল (৭ জুন) শুক্রবার পর্যন্ত তিনটি হাটে বিপুল পরিমাণ গরু আমদানী হয়। তবে হাটের শুরুর দিন থেকে কালকের হাট পর্যন্ত অস্থিরতার চিত্র পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছেন অনেকে।

গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামের প্রান্তিক খামারী আলি হোসেন বলেন, ৮০ হাজার টাকায় একটি এঁড়ে বাছুর কিনে প্রায় দুই বছর ধরে পালন করছি। গরুটির আনুমানিক মাংস হবে প্রায় সাত মণ। প্রতি মণ মাংস ২৮ হাজার টাকা হিসেবে বিক্রি হলে গরুটি ১ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু গেল দুই হাটে গরুটির দাম উঠেছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। গত এক বছর গো খাদ্য বিশেষ করে খড়-বিচুলি ও দানাদার খাবারের (ভূষি) লাগামহীন দামে গরু পালন খরচ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন। তাই গরু পালনকারীরা দুদর্শার মধ্যে পড়বেন বলে আশঙ্কার কথা জানালেন তিনি।

মেহেরপুর জেলার গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত বাড়িতে বাড়িতে হয় গরু পালন। কোরবানির হাটগুলোতে এ গরু বিক্রি করেন পালনকারীরা। বেশিরভাগ গরু বিক্রি হয় বাড়ি থেকে। স্থানীয় গরু ব্যাপারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরু কিনে কোরবানির হাটে তোলেন। এ প্রক্রিয়া চলে আসছে অনেক আগে থেকে। তবে এবার গরু হাটে গিয়ে কোন হিসেবে মেলাতে পারছেন না খামারী ও ব্যাপারীরা। হাটে চাহিদা নেই বড় আকারের গরুর। ৫-৬ মণ ওজনের গরু চাহিদা কিছুটা থাকলেও এর চেয়ে বড় গরুর চাহিদা নেই বললেই চলে। অন্যদিকে বাড়ি থেকে গরু কিনে হাটে বিক্রি করতে গিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যাপারীদের। যদিও গরু পালনকারীরা বলছেন গো খাদ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে তারাও লোকসান গুনছেন। ফলে কোরবানির পশু হাটে বেশ অস্থিরতা বিরাজ করছে।

গরু ব্যাপারী মালসাদহ গ্রামের আনিছুর রহমান বলেন, গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরু কেনা হয়। গত তিন হাটে ৬টি গরু বিক্রি করা হয়। এর মধ্যে চারটিতে লোকসান হয়েছে এবং বাকি দুটিতে সামান্য পরিমাণ লাভ মিলেছে। এখনও পর্যন্ত লোকসান পোষানো যায়নি। খামারীরা যে দামে গরু বিক্রি করছেন হাটে সেই দাম মিলছে না।

জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার মেহেরপুর জেলায় কোরবানী উপযুক্ত গবাদিপশু রয়েছে ১ লাখ ৯০ ৮৩৮টি। জেলার মানুষের কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে ১ লাখ ৬৬৫টি পশু যাবে দেশের বিভিন্ন জেলায়। কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকায় সময়মত বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন খামারী ও ব্যাপারীরা।

এদিকে কোরবানির পশু হাটে গরু বিক্রির জন্য বহনের ক্ষেত্রে নানা পরামর্শ দিচ্ছে জেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর। মেহেরপুর জেলা ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারিছুর আবিদ বলেন, গরু পরিবহনের নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করা গেলে অনাকাঙ্খিত বিপদ এড়ানো সম্ভব।

মেহেরপুর জেলার উদীয়মান অর্থনীতির পালে সুবাতাস বয়ে দিয়েছে কোরবানির পশু পালন। বিশেষ করে কোরবানির গরু পালন করে অনেকে আজ স্বাবলম্বী। নায্য মূল্যে গরু বিক্রির মাধ্যমে গরু পালনকারী, ব্যাপারী ও ক্রেতারা লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশা সকলের।

;

জাতিসংঘের দ্বিতীয় কমিটির সভাপতি হলেন রাষ্ট্রদূত মুহিত

ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন ৭৯তম অধিবেশনের দ্বিতীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। 

রাষ্ট্রদূত মুহিত গুরুত্বপূর্ণ এ পদে তার নির্বাচিত হওয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নানাবিধ উদ্ভাবনী উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন ও অভাবনীয় অগ্রযাত্রার স্বীকৃতি তথা বাংলাদেশের ওপর আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের বিশ্বাস ও আস্থার প্রতিফলন হিসেবে অভিহিত করেন। জাতিসংঘের দ্বিতীয় কমিটিতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব বৈশ্বিক নানাবিধ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণে অবদান রাখতে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অভিযাত্রায় বাংলাদেশের অগ্রাধিকারগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরতে সাহায্য করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

দ্বিতীয় কমিটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কমিটি। জাতিসংঘের আর্থিক ও পরিবেশগত বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কার্যক্রম তদারকি করে দ্বিতীয় কমিটি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, জলবায়ু পরিবর্তন, সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন, কিছু দেশের বিশেষ পরিস্থিতি, কৃষি উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মতো বিষয় এই কমিটির আওতাধীন।

পেশাদার কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত মুহিত ২০২২ সালের জুলাইয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন।

বর্তমানে তিনি ইউএনডিপি ইউএনএফপিএ ইউএন অপসের নির্বাহী বোর্ডের ২০২৪ সালের সভাপতি হিসেবে জাতিসংঘের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার নীতিনির্ধারণে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এর আগে তিনি জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের ২০২২ সালের সভাপতি এবং ২০২৩ সালের সহসভাপতি, ইউএনউইমেনের নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি এবং ইউএনডিপি ইউএনএফপিএ ইউএন অপসের নির্বাহী বোর্ডের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *