সারাদেশ

নবজাতকেও সোয়া লাখ টাকার ঋণ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে হবে: যুবদল সভাপতি

ডেস্ক রিপোর্ট: নবজাতকেও সোয়া লাখ টাকার ঋণ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের সকল মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছে, নির্যাতনের বাইরে কেউ নেই। যার যার জায়গা থেকে নির্যাতন ভোগ করছে সকলে। এই অবৈধ সরকার বাংলাদেশকে এমন একটি জায়গায় নিয়ে গেছে যে, একজন শিশু আজকে যদি জন্মগ্রহণ করে ১ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে হবে। শিশুটির অপরাধ কী! আজকে এই লুটপাটের শিকার হচ্ছে বাংলাদেশের সমস্ত জনগণ। আজকে বেনজীর তো একটি প্রতীকি দুর্নীতিবাজ, মাফিয়া। একটা ধরা পড়েছে। বেনজীর ৫ মে হেফাজতের সমাবেশে আলেমদেরকে গুলি করে হত্যা করেছিল। এই বেনজীরকে পুরস্কার হিসেবে পরে সরকার আইজি করেছে।

শনিবার (৮ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির কার্যালয়ে মহানগর যুবদল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘আন্দোলন সংগ্রামে কারাবরণকারী ও হামলা-মামলার শিকার’ প্রায় আড়াই শতাধিক যুবদল নেতাকর্মীকে সংবর্ধনায় এ আয়োজন করে মহানগর যুবদল।

সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, আমি দুদিন আগে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছি। চট্টগ্রামে প্রথম আসার কারণ হচ্ছে, এখানের মাটির প্রতি আলাদা একটা টান রয়েছে। আমরা যারা বিএনপি করি আমাদের আলাদা একটা আবেগ আছে। কারন আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতির জিয়াউর রহমান যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এই পবিত্র মাটিতে। যার রক্ত এ চট্টগ্রামের মাটিতে বহমান হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ৭ জানুয়ারিতে যে ডামি নির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচনে যারা পুলিশের দায়িত্ব পালন করেছিল। তাদেরকে পদক দেওয়া হচ্ছে। একটি রাষ্ট্র যদি সমস্ত রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দুর্নীতিবাজ বানায়, ওই রাষ্ট্র টিকে থাকতে পারে না। তাদের আজকে অবৈধ সর্বোচ্চ ব্যক্তি যিনি অবৈধ সরকার প্রধান তার বিচার বাংলাদেশে হবে। আপনার (শেখ হাসিনা) শাড়ির আঁচলে এই দুর্নীতিবাজদের জন্ম দিয়েছেন। আজকে অবৈধ এমপি, এমপি হওয়ার আগে অবৈধ চোরাকারবার ছিল, আন্তর্জাতিকভাবে ২২টি মামলা ছিল তার। সে ধরনের লোকদেরকে এমপি বানিয়েছেন। এখন তার (আনার) লাশ ও হাঁড় কোনটিই খুজে পাচ্ছে না। লজ্জা লাগে একজন বাংলাদেশের সংসদের লাশ খুঁজতে হয় পায়খানার ময়লায়। এখনো জীবিত নাকি মৃত সেটি ঘোষণা করতে পারেনি। এটা আল্লাহর গজব। আজকে এ ধরনের মাফিয়াদেরকে পবিত্র সংসদে পাঠিয়ে সংসদকে অপবিত্র করা হয়েছে। এর বিচার বাংলাদেশে হবে। রেহাই কেউ পারে না।

‘বেনজীর তো একদিনে দুর্নীতি করেনি। রাষ্ট্র যদি দুর্নীতিবাজ হয় তাহলে রাষ্ট্রের কর্তারাও তো দুর্নীতি করবে। একটি রাষ্ট্রে যদি বিচার ব্যবস্থা ও নির্বাচন ব্যবস্থা ঠিক থাকে, মোটামুটি রাষ্ট্রটা টিকে থাকে। অর্থাৎ সেটিকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যায়। এই অবৈধ সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে। আজকে আইনের শাসন নেই, বিচার ব্যবস্থা নেই। আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমান তাকে আদালত বিচারে খেলা দিয়েছিল। সেই বিচারক কিন্তু বাংলাদেশে থাকতে পারে নাই।’

টুকু বলেন, সেনাবাহিনী, যারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক, তাদের প্রধান (আজিজ আহমদ) আমেরিকার স্যাংশন খায়। এখন আওয়ামী লীগ বলে, আজিজ-বেনজীর তাদের লোক না। কয়দিন পর বলবেন, এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রীরা কেউ আওয়ামী লীগ করে নাই। কাওয়া কাদেরকে কাউয়া বললে কাকও লজ্জা পাই।

যুবদল সভাপতি বলেন, সরকার শুধু ক্ষমতায় ঠিকে থাকার জন্য বিভিন্ন অপরাধী ব্যক্তিকে আজ সাংসদ বানিয়েছেন। তারা শুধু ব্যক্তি নয় আজ রাষ্ট্র পর্যন্ত দুর্নীতি করেছে। সরকার ঠিকে থাকার জন্য দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। যে বিচারক সঠিক বিচার করছে সরকার তাকে নির্বাসনে পাঠাচ্ছে। শিশু, নারী ও সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের শাস্তি দেওয়া হয়। আর অন্য দিকে সাগর রুনির মতো নামকরা সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, কিন্তু তাদের মামলায় চার্জশিট পর্যন্ত দেওয়া হয় না। একশত বারেরও বেশি সময় দেওয়া হয়েছে। দেশের ভবিষ্যত রক্ষা করার জন্য এই অবস্থা থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে মুক্ত করতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি’র সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাহেদ’র সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন বাংলাদেশে সবচেয়ে নির্যাতিত পরিবার হচ্ছে জিয়া পরিবার। তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ন্যূনতম চিকিৎসা সেবা প্রদান থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। স্বাধীনতার এত বছর পরও এই দেশের মানুষ মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন করতে হচ্ছে। যে বাংলাদেশে মানুষ বিচার পাই না, ভোট দিতে পারে না সেইটা আমাদের কাঙ্খিত দেশ হতে পারে না।

সভাপতির বক্তব্যে মোশাররফ হোসেন দীপ্তি বলেন, সকল নির্যাতন-নিপীড়ন করার পরও আজ পর্যন্ত একজন বিএনপি নেতা কর্মী দল ত্যাগ করেনি। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতি করছে না। বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে এই দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনা।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *