আন্তর্জাতিক

কালো টাকা সাদা করতে কর হার বেধে দেয়া ঠিক হয়নি: বিআইডিএস

ডেস্ক রিপোর্ট: কালো টাকা সাদা করতে ১৫ শতাংশ কর হার বেধে দেয়া, খেলাপী ঋণ পুনঃতফসিলে চার বার সুযোগ দেয়ার মত বিষয়গুলো ঠিক হয়নি বলে মনে করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। 

তিনি বলেছেন, ‘অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে ট্যাক্স রেট বেঁধে দেওয়া সমর্থন করা যায় না। এই রেট অবশ্যই টাকার পরিমাণের ওপর হওয়া উচিত।

শনিবার (৮ জুন) আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনার লক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।

আগারগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠানিটির সম্মেলন কেন্দ্রে প্রথমবারের মত বাজেট পর্যালোচনার আয়েঅজন করেছে বিআইডিএস। এলডিসির পর আর আমাদের শুল্ক সুবিধা থাকবে না। তাই বিভিন্ন দেশের সাথে আমাদের দ্রুত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করা দরকার। সেটা এখন প্রসেসিং করলেও ৮-১০ বছর লেগে যাবে। এখন না করতে পরে সমস্যায় পড়তে হবে।

তিনি বর্তমান ডলার সংকট মোকাবেলায় শুধু আইএমএফের দারস্থ না হয়ে অন্যান্য সংস্থা বা দেশের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেন। সংকট কাটাতে দীর্ঘসস্থায়ী পলিসি ফ্রেমওয়ার্ক করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

সভায় সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক মনজুর হোসেন বলেন, সরকার এবার মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বাজেট প্রস্তাব করেছে। এতে যেমন কৃচ্ছতা সাধন করা হয়েছে, আবার প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাও রাখা হয়েছে।

মনজুর হোসাইন বলেন, বিদ্যুত্ জ্বালানির দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার। তা না হলে জ্বালানির দাম মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দিতে পারে। তিনি মূল্যস্ফীতি কমাতে রাশিয়া চায়না থেকে স্বল্প দামে জ্বালানি আনা যায় কিনা সেটা দেখার আহবান জানান। বাজার স্বাভাবিক না হলে ডলার রেট আরও বাড়বে যা মূল্যস্ফীতি আরও বাড়িয়ে দেবে বলে তিনি মনে করেন।

বাজেটে শিক্ষা স্বাস্থ্যে সামান্য বরাদ্দ বাড়লেও এসব খাতে মানসম্মত সেবা বাড়ানোর কোন দিকনির্দেশনা বাজেটে নেই মন্তব্য করে অপর গবেষনা পরিচালক ড. এস এম জুলফিকার আলী বলেন, এসব খাতে সেবার মান বাড়ানোর প্রয়োজন আছে।

তিনি বলেন, শুধু অবকাঠমো নির্মাণ না করে সেবার দিকে জোর দেওয়া দরকার। যে যন্ত্রপাতি আছে তা দিয়েই সেবা দেওয়া উচিত। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের দক্ষতা বাড়ানো দরকার। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাপটপ দেওয়া হয়। সেটা ব্যবহার হয় না, পড়ে থাকে।

বিআইডিএসের সভায় বক্তারা বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থনীতির মধ্যমেয়াদী প্রেক্ষিত হিসেবে মুদ্রার বিনিময় হার সমন্বয়, সুদ হারে সীমা তুলে নেওয়া, নিয়ন্ত্রিতভাবে বাজেটের আকার বৃদ্ধি ও সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানোর মতো বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে মুদ্রা নীতির সঙ্গে সমন্বয় রাখা হয়েছে। তবে মধ্যমেয়াদী এসব নীতির সুফল পেতে সরকারকে সময় দিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে বিনায়ক সেন বলেন, বাজেটে যেসব মধ্যমেয়াদী প্রস্তাবনার কথা বলা হয়েছে, তা কার্যকর হতে সময় লাগবে। রাতারাতি এটি বাস্তবায়ন হবে না। তবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা অনুকূলে থাকলে এবং সরকার আর্থিক খাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আনলে এই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া তড়ান্বিত করা সম্ভব।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *