সারাদেশ

মজুরি বৃদ্ধির বিএনপির দাবি রাজনৈতিক স্টান্টবাজি : শাজাহান খান

ডেস্ক রিপোর্ট: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক শাজাহান খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, ‘এখন মজুরি বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। কারণ, প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের এই মজুরি কাঠামোয় কাজ শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। মজুরি বর্ধিত করতে হলে প্রধানমন্ত্রী করবেন। তিনি শেষ কথা বলে দিয়েছেন। তাই আর কোনও সুযোগ নেই।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে শনিবার (১১ নভেম্বর) গার্মেন্টস শিল্পে চলমান অস্থিরতা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ’ ওই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাজাহান খান বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সমমনা দলগুলো গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের ফাঁকে তাদের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে। ১৯৮৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৬ বার মজুরি নির্ধারণের জন্য ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়েছে । শ্রমিকরা প্রতিবার ন্যূনতম মজুরি দাবি করেছে। কখনও বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি কত হবে তা দাবি করেনি। এবারই প্রথম বিএনপি ২৩ হাজার টাকা মজুরি দাবি করেছে। আমরা মনে করি, এটা তাদের রাজনৈতিক স্টান্টবাজি।’

লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এই শ্রমিক নেতা। শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলনে গার্মেন্টস শ্রমিক পরিষদের অনেক নেতৃবৃন্দকে দেখা গেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা কখনও শ্রমিকদের কাছ থেকে দূরে সরে থাকতে চাইনি। শ্রমিকদের ভুল বুঝানো, আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা এবং সরকারের ঘোষণাকে বিনষ্ট করার চেষ্টা চলছে। এই আন্দোলনকে যেন কেউ ভুল পথে পরিচালিত করতে না পারে, সেজন্য আমাদের নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের সঙ্গে থাকছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমরা শ্রমিকদের কাছে যাব, সভা-সমাবেশ করে তাদের বুঝাবো।’

সরকার ঘোষিত মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ রয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমরা যারা শ্রমিক রাজনীতি করি, তারা সবসময় বেশিই দাবি করি। তা না হলে মালিকপক্ষ কম বেতন দিতে চায়। তাই আমাদের দাবি একটু বেশি থাকে। এ কারণে অনেক সংগঠন নানা ধরনের বেতন দাবি করেছে। যখন ন্যূনতম মজুরি বোর্ড মজুরি ঘোষণা করে, তখন এটা আমরা কেউ গ্রহণ করি, আবার কেউ গ্রহণ করি না। তবে শেষ পর্যন্ত সবাই-ই এটা গ্রহণ করে। কারণ, নতুন করে মজুরি বোর্ডের সভা হওয়ার সুযোগ থাকে না। তাই এই মজুরি কাঠামো সাজানোর ক্ষেত্রে শ্রমিকদের স্বার্থ যেন বিনষ্ট না হয়, এজন্য আমরা কাজ করছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকরা ভুল-ত্রুটি করতে পারে। কিন্তু দিনশেষে মালিকদের কাছে শ্রমিকরা সন্তানের মতো। তবে অনেক সময় লক্ষ্য করা যায়, শ্রমিকরা অন্যের বুদ্ধি বা প্ররোচনায় নানা ধরনের অন্যায় কাজ করেন। নির্ধারিত সময়ে মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়। কিন্তু এর আগেই আন্দোলন করে পরিবেশ ঘোলাটে করে গার্মেন্টস মালিকদের বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই সময়মতো দাবি জানানো উচিত।’

সংবাদ সম্মেলনে গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের জোটভুক্ত বিভিন্ন গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *