সারাদেশ

রাজবাড়ীতে গাঁজা বিক্রির সময় মাদক কারবারি গ্রেফতার

ডেস্ক রিপোর্ট: লাভজনক টরন্টো রুটে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়াতে চায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তবে বৈমানিক ও উড়োজাহাজ সংকটে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে হোঁচট খেতে হচ্ছে।

রুটটিতে বর্তমানে সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে ৮৫ শতাংশ কেবিন ফ্যাক্টর রয়েছে। এতে করে এই রুটে বিমান মুনাফায় রয়েছে। তবে এই মুনাফার পরিমান আরো বৃদ্ধি করতে ও চাহিদা থাকায় আরো দুটি ফ্লাইট বাড়াতে চায় বিমান। কিন্তু বৈমানিক ও উড়োজাহাজের স্বল্পতার কারণে লাভজনক রুটের মুনাফা বাড়াতে পারছে না।

বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমান চলাচল ব্যবসার নিয়মই হলো যে রুটে মুনাফা বেশি হয়, সেই রুটে ফ্লাইট বাড়িয়ে মুনাফাটা যতটা সম্ভব বাড়িয়ে নেওয়া। এই কৌশলের অংশ হিসেবেই বিমান চাইছে এই রুটে আরো ফ্লাইট বাড়াতে। তবে এক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়োজাহাজ সংকট ও বৈমানিক।

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের বহরে বর্তমানে ২১টি উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ। আর অভ্যন্তরীণ রুটের জন্য রয়েছে ৮টি ড্যাশ ৮।

বিমানের একাধিক সূত্র বলছে, স্বল্প সময়ের মধ্যে বিমান ঢাকা-টরেন্টো, ঢাকা-নারিতা ও ঢাকা-রোম রুটে ফ্লাইট চালু করেছে। এ অবস্থায় উড়োজাহাজ সংকট আরো বেড়েছে।

যদিও বিমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ অনেক দিন ধরে বহরে নতুন আরো অনেক উড়োজাহাজ যোগ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে এয়ারবাস থেকে ৪টি এ৩৫০ উড়োজাহাজ কেনার প্রক্রিয়াটি অনেক দূর এগিয়েছে। এ বিষয়ে মূল্যায়ন কমিটি ইতিবাচক প্রতিবেদন দিয়েছে। অন্যদিকে বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯০০ উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কেনার প্রক্রিয়াটি অনেক দূর এগোলেও ওখান থেকে উড়োজাহাজ হাতে পেতে কমপক্ষে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে। বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ পেতেও প্রায় একই সময় লেগে যাবে। তবে এক্ষেত্রে বোয়িংকে কিছুটা এগিয়ে রাখা যেতে পারে। কারণ বোয়িং বলছে, অনেক সময় কোনো কোনো এয়ারলাইন্স উড়োজাহাজ অর্ডার দেওয়ার পরেও শেষ মুহুর্তে ডেলিভারি নেওয়ার আগে না বলে দেয়। এ ধরনের সুযোগ আসলে সেক্ষেত্রে বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ দুই বছর নয় এক বছরেও মিলতে পারে। এর আগে বিমান এভাবে দুটি ড্রিমলাইনার স্বল্প সময়ের মধ্যে হাতে পেয়েছিল। তবে কোনো কিছুই এখনই নিশ্চিত নয়।

এদিকে বর্তমানে বিমানে বৈমানিক সংখ্যা ১৮৬ জন। তবে তাদের প্রয়োজন প্রায় ২৫০ জন বৈমানিক। অর্থ্যাৎ রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স এখনো ৬০ জনের বেশি বৈমানিক কম।

বিমানের মার্কেটিং বিভাগ থেকে রুট বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানানো হলেও বিমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ অসহায়। নাম না প্রকাশের শর্তে বিমানের এক কর্মকর্তা বলেন, এই রুটে যে আমরা এত ভালো করবো তা ভাবিনি। ব্যাপক সাড়া মিলছে এই রুটে। সেই সাথে প্রতিযোগীদের কাছ থেকে ব্যবসা নিতে পারবো তাও কল্পনা করিনি। এমনকি এই রুটে সাতটি ফ্লাইট করতে চাই এখন।  

তিনি বলেন, নিউইয়র্কে ফ্লাইট পরিচালনার ব্যয় অনেক বেশি। অন্যদিকে কানাডায় অ্যারোনটিক্যাল চার্জ, ল্যার্ন্ডি চার্জ অনেক কম। যে কারণে সবমিলিয়ে বিমান এই রুটে আশাতীত মুনাফা করতে পারছে।

তার কথা বিমান যদি এই রুটের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে না পারে তাহলে প্রতিযোগি অন্য কোনো এয়ারলাইন্স যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়ে বাজারটি সহজেই দখল করে নিতে পারে। কারণ একটি রুটে যখন সাত দিনই ফ্লাইট থাকে, তখন যাত্রীদের বিকল্প অনেক বেড়ে যায়। কেউ চাইলেই সপ্তাহের যেকোনো দিন টিকেট কাটতে পারে, ফেরার সময়ও তার সুবিধা মতো ফিরতে পারে।  

আরেক কর্মকর্তা বলেন, রুটটিতে যখন শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখে ফ্লাইট পরিচালনা করা যাব্,ে তখন লাভের পরিমান আরো বেড়ে যায়। কারণ একটি রুটে যাত্রী সন্তুষ্টি বেড়ে গেলে তখন যাত্রীরা বেশি টাকা দিয়েও নির্দিষ্ট এয়ারলাইন্সে যেতে চায়। এতে করে মুনাফার পরিমানও বাড়ে।

এই রুট সম্পর্কে আরেক কর্মকর্তা বলেন, রুটটিতে সারা বছর যাত্রী আছে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অনেক বাংলাদেশি টরন্টো হয়ে ঢাকা আসছে। যাত্রীদের মধ্যে ব্যবসায়ী, অভিবাসী, শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রবাসীরা বিমানকে আকর্ষনীয় মনে করছে। বিমানকে এয়ার কানাডার চেয়ে ওপরে রাখে। কারণ এয়ার কানাডা ইকোনমি ক্লাসের যাত্রীদের কাছে আকর্ষণীয় নয়। তাছাড়া ভারতীয় অনেক যাত্রীও বিমানে যাতায়াত করছে। পরে ঢাকা থেকে আধাঘন্টার যাত্রায় কলকাতা চলে যান।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (পিআর) বোসরা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বিমানের তরফ থেকে কোনো মন্তব্য জানাতে পারেননি।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী ফারুক খানের সঙ্গে কাছে এ সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হলে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা কতো দ্রুত উড়োজাহাজ পাবো তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারবো না। কারণ এর সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত। আমি বললেই এয়ারবাস উড়োজাহাজ তৈরি করে দেবে না। কমপক্ষে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে উড়োজাহাজ হাতে পেতে।  

বিমানকেও টরন্টো রুটে ফ্লাইট বাড়ানো যায় কিনা তা বিবেচনা করে দেখতে বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমার বিশ^াস লাভ বাড়ানোর জন্য বিমান সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *