সারাদেশ

সন্ধ্যা হলেই ভূতুরে পরিবেশ মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতিকেন্দ্রে

ডেস্ক রিপোর্ট: সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী রবিবার (১২ নভেম্বর) থেকে চতুর্থ দফায় সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।

সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বাত্মক এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।

একই সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, গণফোরাম, গণঅধিকার পরিষদ, এনডিএমসহ বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত সমমনা অন্যান্য দল ও জোটের পক্ষ থেকেও এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

যুগপৎ আন্দোলনে না থাকলেও জামায়াতে ইসলামী একই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া অবরোধ কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছে এবি পার্টি।

তবে অবরোধ শুরুর আগেই শনিবার (১১ নভেম্বর) রাতে রাজধানীতে অন্তত আটটি বাসে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও তাৎক্ষণিকভাবে জড়িতদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, শনিবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে রাজধানীর আরামবাগ পুলিশ বক্সের পাশে লাল-সবুজ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

এর ১০ মিনিটের ব্যবধানে গাবতলীতে রাত সাড়ে ৮টায় গাবতলী লিংক নামে আরেকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। বাসটি গাবতলী পুলিশ ফাঁড়ির বিপরীত পাশে পার্কিং অবস্থায় ছিল। তাতে কোনো যাত্রী ছিল না।

উভয় ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নেভান। এ ছাড়া রাত ৯টার দিকে গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের সামনে সময় নিয়ন্ত্রণ পরিবহনের আরেকটি বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় রাত সোয়া ৯টার দিকে আগুন দেওয়া হয় অনাবিল পরিবহনের আরেকটি বাসে। এতে আবদুল জব্বার (৪০) নামে এক যাত্রী দগ্ধ হন। তিনি পেশায় রিকশাচালক।

রাত ১১টা ৩৮ মিনিটে মিরপুরে কাফরুল থানার বিপরীতে প্রজাপতি পরিবহনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাত সাড়ে ১০টায় আগারগাঁওয়ের তালতলায় ও ১২টায় রূপনগর থানার সামনে দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।

১০টা ৪৫ মিনিটে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তরা বৈশাখী পরিবহনের একটি বাস আগুনে পুড়িয়ে দেয়।

এ ছাড়া রাত সোয়া ৯টার দিকে গাজীপুরের জয়দেবপুরের যুগীতলায় পিকআপে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ফার্মগেটে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। কে বা কারা ফার্মগেটের বাবুল টাওয়ারের সামনের সড়কে ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পরদিন দেশব্যাপী হরতাল ডাকে বিএনপি। এরপর দুই সপ্তাহে তিন দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোট।

প্রথম দফায় ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিন, দ্বিতীয় দফায় ৫ নভেম্বর থেকে ৪৮ ঘণ্টা এবং সর্বশেষ ৮ নভেম্বর থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়।

এই হরতাল ও তিন দফা অবরোধ কর্মসূচিতে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় বাস-ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুরও করা হয়েছে অনেক যানবাহন। এই নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দিতে এরই মধ্যে পুলিশ ও র‌্যাব পৃথকভাবে পুরস্কার ঘোষণা করেছে।

এ ছাড়া নাশকতার অভিযোগে মামলা ও দেশজুড়ে গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ জানিয়েছে, নাশকতা ঠেকাতে তারা সর্বোচ্চ সতর্ক এবং কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নাশকতায় জড়িত কাউকেই ছাড়া হবে না।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *