আন্তর্জাতিক

আল-শিফা হাসপাতালের শিশুদের সরিয়ে নেয়ার প্রস্তাব ইসরায়েলের

ডেস্ক রিপোর্ট: গাজার অবরুদ্ধ আল-শিফা হাসপাতালের শিশুদের উদ্ধারের প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল সরকার। রোববার (১২ নভেম্বর) ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে,গাজার সবচেয়ে বড় আল-শিফা হাসপাতাল থেকে শিশুদের সরিয়ে নিতে প্রস্তুত আছে তারা ।

কিন্তু ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলেছেন, হাসপাতালের ভিতরে এখনো অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছেন। ইতোমধ্যে দুই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। আরও ৩৭ জন নবজাতক মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। এছাড়াও তীব্র বিদ্যুৎ সংকটের কারণে অসংখ্য মানুষের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, গত এক মাস ধরে চলমান সংঘাতে গাজার হাসপাতালগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এরই প্রেক্ষিতে এবার গাজার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল আল-শিফা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল।

হাসপাতালটিতে ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। বিদ্যুৎ, পানি ও অক্সিজেন না থাকায় হাসপাতালটি পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। সেখানে নিও-নেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে-এনআইসিইউ ৩৯ থেকে ৪৫ টি শিশু রয়েছে। এই অবস্থায় হাসপাতাল থেকে শিশুদের উদ্ধারের প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ।

ইসরায়েল সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রেয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, “শিফা হাসপাতালের কর্মীদের অনুরোধ করা হচ্ছে যে, রোববার (১২ নভেম্বর) আমরা শিশু বিভাগের শিশুদের একটি নিরাপদ হাসপাতালে যেতে সাহায্য করতে প্রস্তুত আছি। এজন্য প্রয়োজনীয় সব রকম সহায়তা আমরা প্রদান করব।”

ইসরায়েলের দাবি, গাজার হামাস যোদ্ধারা আল-শিফা হাসপাতালের নিচে এবং চারপাশে তাদের কমান্ড সেন্টার গঠন করেছে। তাই চিকিৎসক, রোগী ও হাসপাতাল প্রাঙ্গনে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার উদ্বাস্তুকে তারা সরে যেতে বলেছে। যাতে তারা সেখানে হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে পারে।

হামাস হাসপাতালটিকে এভাবে ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন, অনেক রোগী আছেন যাদের সরিয়ে নিতে গেলে মারা যেতে পারেন।
এদিকে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট বলেছে, উত্তর গাজার আরেকটি হাসপাতাল আল-কুদসে চিকিৎসা কর্মীরা ওষুধ, খাবার এবং পানির সংকটের সাথে লড়াই করে রোগীদের যত্ন নিচ্ছেন।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজের মুখপাত্র তোমাসো ডেলা লঙ্গা রয়টার্সকে বলেছেন, “গত ৬-৭ দিনে আল কুদস হাসপাতাল বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। হাসপাতালে প্রবেশ করার কোনো উপায় নেই, বের হওয়ারও কোনো পথ নেই।”

দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের ডাক্তার মোহাম্মদ কান্দিল বলেছেন, “শিফা হাসপাতালে এখন কেউ কাজ করছে না, কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না, কাউকে বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আপনি যদি গাজা বা এর আশেপাশের এলাকায় আহত হন তবে আপনাকে আমাদের অ্যাম্বুলেন্স দ্বারা শিফা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যাবে না। হাসপাতালের বাইরেই সেবা দিতে হবে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *