আন্তর্জাতিক

চারদিন পর বেনাপোলে আমদানি-রফতানি শুরু

ডেস্ক রিপোর্ট: টানা ৪ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকে সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়া বেনাপোল বন্দরের সাথে ভারতের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য ও বন্দর থেকে পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এর আগে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্র আন্দোলনে দুর্বৃত্তরা ডেটা সেন্টারে আগুন দেওয়ায় গত শনিবার থেকে সারাদেশে বিচ্ছিন্ন ছিল নেট সেবা। এদিকে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় দুইপার বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় প্রায় ৩ হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছিল। নেট সেবা চালুতে এসব ট্রাক ঢুকতে শুরু করেছে বন্দরে। বাণিজ্য বন্ধ থাকায় আটকে থাকা পণ্য ও শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসায়ীদের প্রায় ১০০ কোটির টাকার মত অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। এছাড়া সরকার বড় অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।

বাণিজ্যিক সংশিষ্টরা জানান, কোটা সংস্কার নিয়ে ঢাকার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে দেশব্যাপী। আর এ আন্দোলকে পুঁজি করে কিছু দুর্বৃত্ত দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট ও সরকার হঠাৎ দেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নাশকতা চালায়। তবে ডেটা সেন্টারে আগুন দেওয়ায় সারা দেশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ইন্টারনেট সংযোগ। সার্ভার অচলে বেনাপোল বন্দরের সাথে ভারতের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য ও বন্দর থেকে পণ্য খালাস কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে দুই বন্দরে শতশত পণ্য বোঝায় ট্রাক আটকা পড়ে। ছাত্রদের দাবি মেনে নেওয়ার পরে ঘরে ফেরা তারা। তবে দুর্বৃত্তদের নাশকতা চলতে থাকায় বন্ধ থাকে নেট সেবা।

অবশেষে দেশে জরুরী অবস্থা জারিতে সেনাবাহিনী নামলে গতকাল থেকে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ডেটা কেবল মেরামতে বুধবার থেকে সীমিতভাবে দেশে নেট সেবা চালু হয়। এতে বন্ধ হয়ে পড়া বাণিজ্য আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বন্দর থেকে আমদানি ও রফতানি পণ্য খালাস হচ্ছে ও যাচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে।

ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক চালক অমিত জানান, নেট চালুতে তারা বেনাপোল বন্দরে পণ্য নিয়ে প্রবেশ করতে পারছে। গত ৪ দিনে পেট্রাপোল বন্দরে আড়াই হাজারের বেশি ট্রাক প্রবেশের অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছে।

সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী জানান, সীমিত পরিসরে নেট সচলে আটকে থাকা পণ্য বন্দর থেকে খালাস শুরু হয়েছে। তবে কাজের খুব ধীরগতি।

আমদানিকারক সাহেব আলী জানান, দ্রুত পণ্য খালাসের জন্য সংশিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত চারদিনে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। জরুরী পণ্য সরবরাহ বন্ধ থাকায় শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদন ব্যহত হয়েছে। বেকার হয়ে পড়ে শ্রমিকরা। অনেকের ধারণা এসবের ক্ষতি ১০০ কোটির কাছাকাছি হবে।

বেনাপোল সিঅ্যন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহামুদ বিপুল জানান, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৬০০ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি ও ২০০ ট্রাক পণ্য ভারতে রফতানি হয়ে থাকে। আমদানি পণ্য থেকে দিনে সরকারের রাজস্ব আসে ৩০ কোটি টাকার মত। চার দিন আমদানি বন্ধে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় কমেছে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক রেজাউল করিম জানান, বুধবার থেকে নেট চালু হওয়ায় তারা বাণিজ্যিক কাজ সম্পাদন করতে পারছেন। ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রুত পণ্য খালাস নিতে পারেন সব ধরনের সহযোগীতা করা হচ্ছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *