সারাদেশ

বগুড়ায় গ্রেফতার আতঙ্কে ঘরছাড়া বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা

ডেস্ক রিপোর্ট: রাজশাহীর আমচাষিরা এই মৌসুমে চরম বিপদের মুখে পড়েছেন। ছাত্র আন্দোলনের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা তাদের ফজলি আম সঠিক সময়ে সংগ্রহ করতে পারেননি। ফলে, গাছেই নষ্ট হয়েছে বিপুল পরিমাণ আম। চাষিরা হতাশার সাথে জানাচ্ছেন, গাছে পেকে নষ্ট হয়েছে প্রচুর আম, এতে চাষিদের চরম ক্ষতি হয়েছে। শেষ সময়ে তারা যে লাভের আশা করেছিলেন, সেটি আর সম্ভব হয়নি। লাভের আশা ছেড়ে দিয়ে অনেক চাষি এখন স্থানীয় বাজারে নামমাত্র দামে আম বিক্রি করছেন, তবু ক্ষতির পরিমাণ কমাতে পারছেন না।

রাজশাহীর পবা এলাকার আমচাষি জিয়াউর রহমান জানান, এবছর গাছে যে আম ছিল, তাতে এমনিতেই চাষিদের মন ভালো ছিল না। তবে, দাম অন্যবারের তুলনায় কিছুটা বেশি পাওয়ায় তারা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ সময়ে ফজলি এবং আম্রপালি আমের ভালো দাম পাওয়া যায়নি। ১৫ থেকে ২০ ভাগ আম গাছে থাকতেই ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। প্রথম দিকে শাটডাউনের কারণে রাজশাহী থেকে বাইরের জেলায় আম পাঠানো যায়নি। এরপর কারফিউর কারণে সব বন্ধ হয়ে যায়। সব মিলিয়ে ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে চাষিদের মাথায় হাত পড়ে।

রাজশাহীর বাঘা এলাকার আমচাষি মোহাম্মদ আলী জানান, ছাত্র আন্দোলনের কারণে তাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, আমগুলো ঠিকমতো বাজারে নিয়ে যেতে পারেননি, ফলে গাছে পেকে নষ্ট হয়ে গেছে। তারা আশা করেছিলেন শেষ সময়ে ভালো দাম পাবেন, কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। আম সংগ্রহ করতে না পারায় এবং সঠিক সময়ে বিক্রি করতে না পারায় তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

চারঘাট এলাকার আমচাষি আব্দুল কুদ্দুস জানান, এই মৌসুমে আমের ভালো ফলন হয়েছিল, কিন্তু ছাত্র আন্দোলনের কারণে আমগুলো বাজারে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, প্রথমে শাটডাউন, তারপর কারফিউ, সব মিলিয়ে তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আম সংগ্রহ করতে দেরি হয়ে যাওয়ায় গাছে পেকে নষ্ট হয়ে গেছে। যে লাভের আশা করেছিলেন, তা আর সম্ভব হয়নি। অনেক কষ্টে যে ফসল হয়েছিল, তা থেকে কিছুই পাননি।

রাজশাহীর শালবাগান এলাকার আম ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখন আমের বিদায় বেলা। গাছে ফজলি আম এখন প্রায় শেষ। কিছু গাছে আম্রপালি আছে। আর এর পরে আশ্বিনা পাকলে আমের এবারের মত বিদায়। ৪ থেকে ৫দিন ধরে ব্যবসা নেই। অনেক গাছেই আম পেকে পড়ে নষ্ট হয়েছে, ক্রেতা নাই। রাজশাহী থেকে প্রতিদিনই কুরিয়ার এবং ট্রাক যোগে বিপুল পরিমান আম যায়। এগুলো কয়েকদিন ধরে বন্ধ। হাজার হাজার মন আম গেলো না। এই আমের অনেকগুলোই পেকে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক বাগান মালিক স্থানীয় বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি করে আম বিক্রি করেছে। আবার কারো কারো গাছেই আম নষ্ট হয়েছে। অথচ এই সময়ে ফজলির দাম ১শ টাকা কেজি থাকার কথা। আজকালের মধ্যে যদি যানবাহন চলাচল স্বাভবিক হয়, তাহলে হয়তো শেষ সময়ের কিছু আম বাইরে পাঠানো সম্ভব হবে।

রাজশাহী ফ্রুটস প্রডিউসর এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বলেন, আম এমন একটা ফল যা পেকে গেলে আর ধরে রাখার সুযোগ থাকে না। গত ৪-৫ দিনে পেকে গিয়ে অনেক আম নষ্ট হয়েছে। এবারে আমের উৎপাদন কম হলেও, যেভাবে ক্রয় বিক্রয় ও বাজারজাত হচ্ছিলো সেভাবে শেষ করতে পারলে চাষিরা খুশি হতেন। কিন্তু শেষ সময়ে এসে ঝামেলাটা পেকে গেলো। এখনো যাদের গাছে আম রয়েছে তারা চরম মন খারাপের মধ্যে আছেন।

বিশেষ করে ফজলি আমের বাজারটা একেবারেই নষ্ট হয়ে গেল। ৪ থেকে ৫দিন আগে প্রতিমন ফজলি আম বিক্রি হচ্ছিলো ২ হাজার বা ২২শ টাকায়। এটি প্রতিদিনই দাম বাড়ার দিকে যায়। কিন্তু গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় বাইরের জেলায় আম পাঠানো যায়নি। এখনতো বাজারে আম নিয়ে যাবারই সুযোগ নাই। যাদের গাছে আম আছে তারা চেষ্টা করছেন না পেড়ে যে কদিন গাছেই রাখা যায়। কারণ পাড়লেওতো দাম পাচ্ছে না। আবার গাছেও থাকছে না। ঝরে পড়ছে। এরই মাঝে হতাশা নিয়ে চেয়ে থাকা আরকি।

তিনি বলেন, যান চলাচল আবারো শুর হলে হয়তো কিছুটা স্বস্তি মিলবে। বিশেষ করে ফজলি আমের বাজার একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। এটি প্রতিদিনই দাম বাড়ার দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় বাইরের জেলায় আম পাঠানো যায়নি। এখন তো বাজারে আম নিয়ে যাবারই সুযোগ নেই। যাদের গাছে আম আছে তারা চেষ্টা করছেন না পেড়ে যতদিন সম্ভব গাছেই রাখতে। কারণ পাড়লেও তো দাম পাওয়া যাচ্ছে না। আবার গাছেও থাকছে না, ঝরে পড়ছে। এরই মাঝে হতাশা নিয়ে চেয়ে থাকা ছাড়া কিছু করার নেই। যান চলাচল আবার শুরু হলে হয়তো কিছুটা স্বস্তি মিলবে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *