আন্তর্জাতিক

হামাসকে আত্মসমর্পনের আহ্বান ইসরায়েলের

ডেস্ক রিপোর্ট: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র আল-শিফা হাসপাতালে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এবার আল শিফা তে লুকিয়ে থাকা হামাস যোদ্ধাদের আত্মসমর্পনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্সের একটি পোস্টে আইডিএফ বলেছে, এই হাসপাতালটিকে অব্যাহতভাবে সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহার করে আসছিল হামাস। হাসপাতালের অপব্যবহার বন্ধের জন্য হামাসকে বার বার প্রকাশ্যে সতর্ক করা হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং হামাসের এই কৌশল হাসপাতালের সুরক্ষিত মর্যাদাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

এক্স বার্তায় আইডিএফের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, আল শিফা হাসপাতালে লুকিয়ে থাকা সব হামাস যোদ্ধাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে। তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েই অভিযান শুরু হয়েছে।

ইসরায়েল বলেছে আল শিফার নিচে হামাসের একটি কমান্ড সেন্টার রয়েছে। তারা সামরিক অভিযান গোপন করতে এবং জিম্মি করার জন্য হাসপাতালের নিচের টানেল ব্যবহার করে। তবে হামাস এ বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

এক বিবৃতিতে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, গোয়েন্দা তথ্য এবং একটি অপারেশনাল প্রয়োজনীয়তার কারণে আইডিএফ বাহিনী শিফা হাসপাতালের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে একটি সুনির্দিষ্ট অভিযান চালাচ্ছে।

সামরিক বাহিনী আরও জানিয়েছে, আইডিএফ বাহিনীতে মেডিক্যাল টিম এবং আরবি ভাষাভাষীরও সদস্য রয়েছেন। তারা এই জটিল এবং সংবেদনশীল পরিবেশে যাতে কোন বেসামরিকদের ক্ষতি না হয় তার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল পিটার লার্নার বলেন, হাসপাতাল এবং কম্পাউন্ডটি ছিল হামাসের জন্য তাদের অপারেশনের মূল কেন্দ্রবিন্দু।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালটিতে এখনও প্রায় ৭০০ রোগী, ৪০০ হাসপাতালের কর্মী এবং তিন হাজারের মত বেসামরিক নাগরিক রয়েছে যারা ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টানা বোমা বর্ষণে ঘর-বাড়ি হারিয়ে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত মঙ্গলবার বলেছে, তাদের নিজস্ব গোয়েন্দারা ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) আল শিফা হাসপাতাল হামলার ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে বলে হামাস দাবি করেছে। তারা এই অভিযানের জন্য ইসরায়েল এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করেছে।

হামাসের এ অভিযোগকে অস্বীকার করে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা আকাশ থেকে হাসপাতালের ওপর হামলা করাকে সমর্থন করি না এবং আমরা এমন একটি হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ দেখতে চাই না যেখানে নিরপরাধ মানুষ, অসহায় মানুষ, অসুস্থ ব্যক্তিরা তাদের প্রাপ্য চিকিৎসা সেবার পরিবর্তে ক্রসফায়ারে নিহত হয়।

ইসরায়েলি বাহিনী গত ১০ দিন ধরে গাজা শহরের কেন্দ্রে এবং আল শিফাকে ঘিরে হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ভয়ংকর লড়াই চালিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে চলমান সংঘাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রতিশোধ হিসেবে হামাসকে ধ্বংস করার শপথ নিয়েছে। ইসরায়েলের দাবি হামাস তাণ্ডব চালিয়ে ১২’শ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে এবং ২৪০ জনকে জিম্মি করেছে। এরই প্রেক্ষিতে টানা ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে পুরো গাজা শহর জুড়ে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *