নাগরিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে এগিয়ে যাচ্ছে মসিক সিটি কর্পোরেশন
ডেস্ক রিপোর্ট: প্রতিষ্ঠার ৪ বছরে মাতৃসদন ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন, করোনা মহামারি ব্যবস্থাপনা, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন টিকাদান কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন।
২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে এর বিস্তার রোধ, মানবিক সহায়তা বিতরণ এবং সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন নির্দেশনা বাস্তবায়নে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটুর সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত সারা দেশে প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষতঃ করোনা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি কাজে সশরীরে উপস্থিতি থেকে করোনা নিয়ন্ত্রণ, সচেতনতা তৈরি, মানবিক সহায়তা বিতরণ এবং কোভিড ১৯ এর সর্বাধিক টিকাদান নিশ্চিতে বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন।
কোভিডকালীন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে প্রায় ০৯ লক্ষাধিক মাস্ক, ৭৫ হাজার বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৪ হাজার ৫০০ পিপিই বিতরণ করা হয়েছে। সরকার থেকে পাওয়া বরাদ্দ এবং সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে ১৩২৭ টন চাল, ৭৫ লক্ষ টাকার বিভিন্ন সহায়তা বিতরণ করা হয়। মসিক মেয়র তার নিজের উদ্যোগেও এক লক্ষাধিক প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন।
আবার, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোভিড ১৯ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হলে কোভিড ১৯ রেজিস্ট্রেশন সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন, সচেতনতা কার্যক্রম এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা ভিত্তিক টিকা কার্যক্রম পরিচালনার ফলে টিকাদানে সফলতা দেখিয়েছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন। সিটি কর্পোরেশনের টিকা পাওয়ার যোগ্য জনসংখ্যার প্রায় ৯৫ ভাগ মানুষকে ২ ডোজ কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হয়েছে।
পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশনে উত্তরণ হলেও এখনও বিলুপ্ত পৌরসভার জনবল নিয়ে কাজ পরিচালনা করছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন। এর মাঝেও গত ২০২২ এর সেপ্টেম্বর থেকে সরকারের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রাহ্মপল্লীতে একটি নগর মাতৃসদন এবং খাগডহর, শম্ভুগঞ্জ ও জামতলায় মোট তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পরিচালনা করছে মসিক।
এসব সেবাকেন্দ্র থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ সেবা গ্রহণ করেছে। এছাড়া, এখান থেকে মানুষ বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে ডেলিভারি অপারেশন, বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ডাক্তারের পরামর্শও ইত্যাদি পাচ্ছেন নাগরিকরা। ব্রাহ্মপল্লীর নগরমাতৃসদন থেকে এ পর্যন্ত ১১৬ প্রসূতিকে মায়ের ডেলিভারি অপারেশন করা হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রসমূহ দূরবর্তী প্রান্তিক অঞ্চলে স্থাপিত হওয়ায় যেকোনো প্রয়োজনে নাগরিকদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসার প্রয়োজনীয়তাও কমে গেছে, এতে নাগরিকরা নিজ এলাকা থেকেই প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাসমূহ পাচ্ছেন।
এছাড়া, বাগমারা এলাকায় একটি ৬ তলা নগর মাতৃসদন নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। নতুন এ ভবনে নগর মাতৃসদন স্থানান্তর করা হলে সেবার মান ও পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।
ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন, কৃমি নিয়ন্ত্রণ, ইপিআই কার্যক্রমেও লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জন করছে মসিক। সর্বশেষ ক্যাম্পেইনে ৬৬ হাজার ৭৮৬ জন শিশুকে ভিটামিন এ খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১ লক্ষ ১৫ হাজার কৃমিনাশক ট্যাবলেট সেবন করিয়েছে মসিক। এছাড়া, এ বছর ৯ হাজার ২৫২ জন শিশুকে ইপিআই টিকা প্রদান লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৯ হাজার ৩০৩ জন শিশুকে ইপিআই টিকা প্রদান করা হয়েছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিস মশার বিস্তার রোধেও গুরুত্বের সাথে কাজ করতে দেখা গেছে মসিককে। নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম, নিয়মিত বিরতিতে ক্রাশ প্রোগ্রাম পরিচালনা, সচেতনতা ক্যাম্পইন ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কারণে সিটি এলাকায় স্থানীয়ভাবে এডিস মশার সংক্রমণে কোন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়নি। নাগরিকদের পুষ্টি পরিস্থিতি এবং সচেতনতার মাধ্যমে এর মান বৃদ্ধিতেও এখন কাজ করছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন।
মসিক মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ মহামারি করোনা। এ সময় স্বাস্থ্যগত, সামাজিক, মানবিক ও অর্থনৈতিক যে সংকট তৈরি হয়েছিলো তা নজিরবিহীন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সকল নির্দেশনা তার বাস্তবায়নের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি আমরা। নাগরিকদের সুস্থতা, নিরাপত্তা সহ সার্বিক জীবনমানের উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।। তবে, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়নসহ সার্বিক যে অগ্রগতি হয়েছে করোনা মহামারি ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ না থাকলে এর থেকে আরও উন্নয়ন সম্ভব হতো।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।