সারাদেশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জবি শিক্ষার্থীর জামিন 

ডেস্ক রিপোর্ট: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জবি শিক্ষার্থীর জামিন 

ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় ১৫ মাস কারাগারে ছিলেন খাদিজা। 

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বেঞ্চ খাদিজার হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রাখেন। মুক্তিতে বাধা নেই। 

এর আগে, ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। অনলাইনে সরকার বিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় পৃথক মামলা করে পুলিশ। 

একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম। অন্যটির বাদী কলাবাগান থানার এসআই আরিফ হোসেন। 

২০২২ সালের মে মাসে পুলিশ দুই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। সেই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাতুল কুবরাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা-পুলিশ। এরপর থেকে কারাগারে আছেন তিনি।

শেকৃবি কৃষি অনুষদের যত সমস্যা, সমাধানে দীর্ঘসূত্রিতা

ছবি: বার্তা ২৪

রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকা ক্লাসরুম গুলোর অবস্থা শোচনীয়। প্রায় ১০০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্লাসরুম গুলোর কোনোটিতেই নেই সাউন্ড সিস্টেম। এছাড়াও অনুষদটিতে নেই পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থা, নেই পর্যাপ্ত সাস্থ্যসম্মত ওয়াশরুম। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১২ শতাধিক শিক্ষার্থীর কৃষি অনুষদে এত অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

তবে এসব সমস্যার সমাধান প্রশাসন পরিকল্পনায় রেখেছে এবং দ্রুতই তার ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় শেকৃবি প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীনতম অনুষদ ভবন কৃষি অনুষদ। ভবনটি তে শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক ক্লাসের জন্য রয়েছে ৭ টি শ্রেণি কক্ষ। এছাড়াও প্রতিটি বিভাগের ব্যবহারিক ক্লাস পরিচালনার জন্য রয়েছে ১৬ এর অধিক শ্রেণি কক্ষ। তবে ভবন পুরাতন হওয়ায় অনেক ক্লাসরুমের সিলিং থেকে খসে পড়ছে সিমেন্ট। এর ভেতরেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

তাত্ত্বিক ক্লাস পরিচালনার জন্য প্রায় ১০০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্লাস সংখ্যা ৭ টি। যার একটিতেও নেই কোনো সাউন্ড সিস্টেম এর ব্যবস্থা। এছাড়াও শ্রেণীকক্ষে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ বৈদ্যুতিক বাতি।

শ্রেণি কক্ষে শিক্ষকগণ কতটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল ফয়েজ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, “আমাদের ক্লাসরুমগুলো একটু বড় এবং বেশি শিক্ষার্থী থাকে। এজন্য ক্লাসরুমগুলোতে সাউন্ড সিস্টেম থাকাটা খুব প্রয়োজন। আমরা যে বিষয়গুলো পাঠদান করে থাকি, অনেক সময়ই পেছনে থাকা শিক্ষার্থীরা মনোযোগ দিতে পারে না। এছাড়াও আমাদের দীর্ঘসময় উচ্চস্বরে লেকচার দিতে হয়। এতে শিক্ষকদেরও অসুবিধা হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ না করে দিতে পারলে পাঠদান ফলপ্রসূ করা কঠিন। ক্লাসরুম গুলোতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টেরেও অনেক সময় সমস্যা করে থাকে।”

সরেজমিনে দেখা যায়, অনুষদ ভবনে ৭ টি শ্রেণি কক্ষের জন্য রয়েছে একটি খাবার পানির ব্যবস্থা। মাঝে মাঝে সেটিও নষ্ট থাকে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ছোট্ট একটি কমন রুম ও একটি ওয়াশরুম। অন্যদিকে ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে মাত্র দুইটি ওয়াশরুম। ১২ শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য ভবনে মাত্র একটি খাবার পানির ব্যবস্থা ও তিনটি ওয়াশরুম কিভাবে যথেষ্ট হয় সে নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল আহমেদ বলেন, সম্প্রতি খুব গরমের ভেতরে অস্বস্তিকর পরিবেশে আমাদের ক্লাস করতে হয়েছে। পানির জন্য একটা ফিল্টার আছে সেটিও মাঝে মাঝে নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও ওয়াশরুম এর ব্যাবস্থা খুবই শোচনীয়। প্রয়োজন হলে যেতে হয় তৃতীয় তলায় আবার তা যদি মোটামুটি স্বাস্থ্যসম্মত হতো তাহলেও ভালো হতো।

কৃষি অনুষদের কোনো তাত্ত্বিক শ্রেণীকক্ষেই নেই শীততাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। ফলে অতিরিক্ত গরমের মাঝেও অস্বস্তিকর পরিবেশেই নিয়মিত ৯ টা থেকে ৪ টা অবধি ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

পাশাপাশি ভবনটি দীর্ঘদিনের হওয়ায় কয়েকটি ক্লাসরুমের সিলিং থেকে সিমেন্ট খসে পড়ছে। কৃষি অনুষদের একজন শিক্ষার্থী জানান, আমাদের ব্যবহারিক পরীক্ষা চলাকালীন সময় ক্লাস রুমের ছাদের অংশ খসে পড়ে। কোনো শিক্ষার্থী ঐ স্থানে না বসায় আহতের ঘটনা ঘটেনি।

অনুষদের এগ্রোফরেস্ট্রি বিভাগ থেকে মূল ভবনে আসার পথের টিন প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি হলে ভিজেই আসতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এর স্থায়ী কোনো সমাধান করাও হয় না কখনো। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়েই।

এ বিষয়ে শেকৃবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড অলোক কুমার পাল বলেন, ” আমরা দ্রুতই ক্লাস রুমে সাউন্ড সিস্টেম এর ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে ৩ বা ৪ টি ক্লাস এ তা করা হবে। এছাড়াও আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য পানির ব্যবস্থা করার চিন্তাও রেখেছে। কৃষি অনুষদ এ ওয়াশরুম বৃদ্ধিরও চেষ্টা করছি। এজন্য কয়েকটি বিভাগের সাথে দ্রুতই বসবো আমরা।”

;

তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে জাবিতে ছাত্রদলের ২ গ্রুপের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি: বার্তা২৪.কম

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে তফসিল ঘোষণা করার প্রতিবাদে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টায় শেখ মুজিবুর রহমান হলের যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ূন হাবিব হিরন এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি স্কুল এন্ড কলেজ সংলগ্ন রাস্তা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিশমাইলে পরিবহন ডিপোতে গিয়ে শেষ হয়।

পরবর্তীতে রাত ৯টায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকতের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে আরেকটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভ-মিছিলে নেতাকর্মীরা অবিলম্বে ঘোষিত তফসিল বাতিল করার জোর দাবি জানান। অন্যথায় যে কোন মূল্যে নির্বাচন প্রতিহত করার হুশিয়ারি দেন।

বিক্ষোভ-মিছিল পরবর্তীত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শাখা ছাত্রদলের সাবেক ১নং সহ-সভাপতি মো: নবীনূর ইসলাম নবীন বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাব। দাবি আদায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রতিটি নেতাকর্মী প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

শেখ মুজিবুর রহমান হলের যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ূন হাবিব হিরন বলেন, ‘ভোট চোর শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অবৈধ তফসিল ছাত্রসমাজ মানে না। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল ঘরে ফিরবে না। বিশ্ববিদ্যালয় সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পাস কারো বাবা তালুকদারী নয়।’

ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকত বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান দেশ রক্ষার যে ডাক দিয়েছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল তা বাস্তবায়নে দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ। জনগন এই তফসিল ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। এই তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকার মুলত নিজের পতনের দিন-ক্ষণ নিদিষ্ট করেছে। এখন থেকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ঠিকানা হয় রাজপথ না হয় কারাগার।

ছাত্র দল নেতা নাইমুল হাসান কৌশিক বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের দল দাস নির্বাচন কমিশনের অবৈধ তফসিল মানি না। অবিলম্বে ফ্যাসিস্ট সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে, তামাশার নির্বাচন এদেশে আর হতে দেয়া হবে না।

ছাত্রদল নেতা হুমায়ূন হাবিব হিরনের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ মিছিলে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি নবীনুর ইসলাম নবিন, সদ্য সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম আহমেদ অনিক, শেখ মুজিবুর রহমান হলের যুগ্ম আহবায়ক মেহেদী হাসান, ছাত্রনেতা মশিউর রহমান রোজেন, আল বেরুনী হলের যুগ্ম আহ্বায়ক জার্জিস মোঃ ইব্রাহিম, ছাত্রনেতা রায়হান হোসাইন মিল্টন প্রমুখ।

এছাড়া জাবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকতের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ মিছিলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক গালিব ইমতেয়াজ নাহিদ, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুর রহমান সোহান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল বিপ্লব, জাবি শাখা ছাত্রদলের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখার যুগ্ম আহবায়ক রাকিবুল হাসান শুভ, ছাত্রনেতা সেলিম রেজা, রফিক জব্বার হলের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল কাদির মার্জুক, মীর মশাররফ হোসেন হলের যুগ্ম আহবায়ক ইকবাল হোসাইন, ছাত্রদল নেতা রাশেদ হোসাইন বাদল, সাহানুর রহমান সুইট, এম আর মুরাদ, রাজু আহমেদ রাজন, নিশাত আব্দুল্লাহ, আল আমিন, রাজু, জিল্লুর, মুজাহিদ, ফুয়াদ, মাসুম প্রমুখ।

;

‘শিক্ষক সমিতি অসুস্থ বাবাকে সিন্ডিকেট পেছানোর চিঠি দেন’

ছবি: বার্তা২৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেই সিন্ডিকেট সভা আয়োজন করতে চাইলেও শিক্ষক সমিতি থেকে বার বার সেটি পেছানোর জন্য চিঠি দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন তার একমাত্র মেয়ে তাসলিম হক মোনা। একইসাথে বাবার (প্রয়াত জবি উপাচার্য) অসুস্থতাকালীন সময়ে শিক্ষকদের কিছু আচরণ নিয়েও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন তিনি।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) প্র‍য়াত উপাচার্যের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে শোকসভা আয়োজন করা হয়। সভায় বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাসলিম হক মোনা এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, বাবা সিন্ডিকেট সভা করার অনেক চেষ্টা করেছিলেন এত শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির লোকজন বারবার সিন্ডিকেট সভা পেছানোর জন্য চিঠি দিয়েছিলেন। শিক্ষকতা একটি মহান পেশা৷ কিন্তু এ পেশার কিছু মানুষের এমন অসুস্থ মানসিকতা হতে পারে সেটা ভাবিনি৷ তারপরও আমি কিছু বলতে চাইনি কারণ এক হাতে পাঁচটা আঙ্গুল সমান হয় না। তবে এমন অসুস্থ মানসিকতার শিক্ষকদের মধ্যেও কিছু ভালো মানুষ ছিলেন যারা আমাদের সবসময় সহযোগিতা করেছেন।

তিনি বলেন, জীবিত থাকা অবস্থায় আমরা যেসব মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে গেছি সেটা আসলে অবর্ণনীয়। উনি সুস্থ থাকা অবস্থায় উনার অক্ষমতা দেখিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাবা আইসিউতে গিয়েছেন মাত্র একদিন হয়েছিল তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে আমি জানতে পারি বাবা ৫দিন ধরে আইসিউতে আছেন এমন একটি সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ এটাত এক প্রকার এমন বিষয় যে বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায়ই বাবাকে মেরে ফেলা হচ্ছে।

আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, শেষের দিকে বাবা যেসব নির্দেশনাগুলো দিয়েছিলেন সেগুলোর সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। তার মানে আপনারা আপনাদের ভিসি স্যারকে বিশ্বাস করেন না। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ফোন দিয়ে চার্জ করা হয়েছে, যে উনার আসলে কি অবস্থা। তখন যারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন তাদের কাছে আমি সবসময় মন থেকে কৃতজ্ঞ থাকবো।

বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে তাসলিম হক মোনা বলেন, কোন মানুষই ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। আমার বাবাও একজন মানুষ। তিনি কোন ভুল করে থাকলে আপনারা ক্ষমা করে দিবেন। আপনাদের অনেক আক্ষেপ আছে আমি জানি৷ অনেকের প্রমোশন হয়নি বা অনেক কিছুই হয়নি। এটা নিয়ে অনেকের আক্ষেপ ছিল সেটার সংবাদ আমাদের কাছে এসেছে । তিনি অসুস্থতার মধ্যেও অনেক চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কিছু পারেন নি। আমার বাবাকে যেন আল্লাহ জান্নত নসীব করেন সেজন্য সবাই দোয়া করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং হামদ ও নাত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শোকসভা শুরু হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান শোক প্রস্তাব পাঠ করেন৷

শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। এসময় প্র‍য়াত জবি উপাচার্যের সহধর্মিণী নুরুন নাহার বেগম উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডীন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, প্রক্টর, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট, জবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন, কর্মচারী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যরা।

বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়

;

রাবিতে নবান্ন উৎসব উদযাপন

ছবি: বার্তা ২৪

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নবান্ন উৎসব উদযাপন করা হয়েছে। বুধবার (১৫ নভেম্বর) ১ অগ্রহায়ণ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ ভবন চত্বরে এই উৎসবের আয়োজন করে এগ্রোনমি এন্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগ।

এদিন সকাল সাড়ে ৯ টায় বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন রাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম।

উদ্বোধনকালে রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বাঙালির ইতিহাস ও গ্রামীণ ঐতিহ্যের সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে আমাদের কৃষি অনুষদ কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের এ নবান্ন উৎসব। আমাদের দায়িত্ব হলো ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। যদি আমরা তাতে ব্যর্থ হই, তাহলে আমরা পরবর্তী প্রজন্মকে গ্রাম-বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পকে জানা থেকে বঞ্চিত করবো।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ওবায়দুর রহমান প্রামাণিক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক, কৃষি অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক আব্দুল আলিম, বিভাগের শিক্ষকবৃন্দসহ প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। উদ্বোধন শেষে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ক্যাম্পাাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর পিঠা উৎসব, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কারের আয়োজন করা হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা, পিঠা খাওয়া, নাচ-গান-আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে চলে এ উৎসব। এবারের উৎসবে ১২টি পিঠার স্টল নিয়ে বসেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ১০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে পিঠা।

দুধপুলি, চন্দ্র পুলি, নারকেল পুলি, খোলা চিতই, তেল পিঠা, নকশী পিঠা, মালাই বিহার, সুজির বড়া, জামাই পিঠা, পাটি সাপটা, গোলাপ ফুল, ডাবের পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, শামুক পিঠা, রুপালি পিঠা, বুটের বরফি, মোহন ভোগ, ডিম সুন্দরী, মাছের পিঠা, গাজরের হালুয়া ডিমপুরি, গোলাপ, আরশি নগর, ঝাল-মিষ্টি, হৃদয়হরণ পিঠা, সূর্যমুখী, পাকোয়ান পিঠা, শামুক পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসে ভরা সবজি পিঠা, রস মলাই খিরপুলিসহ প্রায় দেড় শতাধিক পদের পিঠা শোভা পাচ্ছে স্টলগুলোতে। বাহারি নামের এসব পিঠা খেতে শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

আয়োজনের বিষয়ে এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা কৃষির ছাত্র। গ্রাম বাংলা নিয়েই আমাদের পড়াশোনা। নবান্ন উৎসবের মাধ্যমে আমরা সবাইকে জানান দিতে চাই যে, আমাদের গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্য আছে। সেই ধারাবাহিকতায় এ নবান্ন উৎসবের আয়োজন।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *