সকাল ৮ টায় খুলে দেওয়া হবে কাপ্তাই বাঁধের জলকপাট
ডেস্ক রিপোর্ট: ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লহ্মিপুর, খাগড়াছড়িসহ বন্যাদুর্গত এলাকায় জরুরি খাবার, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ ও বিধ্বস্ত এলাকার মানুষদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ সাধারণ মানুষ।
বন্যা মোকাবেলায় নৌকা ও স্পিডবোট নিয়ে দুর্গত এলাকায় ছুটে বেড়াচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীসহ আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ও মানবিক জনগণ। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্র জনতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মাঠে নেমেছে বরিশালের বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ। সবাই যে যার অবস্থান থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছে।
বরিশাল সদর উপজেলার কর্নকাঠি গ্রামের বাসিন্দা আট বছর বয়সী শিশু কন্যা আমেনা। একটি ব্যাগে করে তার কিছু জামা-প্যান্ট নিয়ে এসেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে। আমেনা জানান, বন্যায় তার বয়সী শিশুদের জামা প্যান্ট নেই। তাদের জন্য কিছু জামা-প্যান্ট দিতে এসেছে সে। তার মতো শিশু-নারী ও পুরুষরা নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী বিভিন্ন মালামাল ত্রাণ সংগ্রহে নিয়োজিত শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের কাছে তুলে দেয়া হচ্ছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক চত্বরে ত্রাণ দিতে ঢল নেমেছিল। মানুষ লাইন দিয়ে ত্রাণ দিচ্ছে। যে যা পারছে তাই দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঘুরে ঘুরে অর্থসহ বিভিন্ন পণ্য সংগ্রহ করেছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী রুটের কীর্তনখোলা নদীর উপর নির্মিত আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর ১২ ঘণ্টার টোল আদায় করে বন্যার্তদের সহায়তায় ব্যয় করবে।
রবিউল জানান, সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সেতুর টোল শিক্ষার্থীরা আদায় করা হয়েছে । রাতে ৮ টায় পর্যন্ত দুই লাখ ৭৬ হাজার টাকা উঠেছে। আমাদের টিম বন্যার্ত এলাকায় রয়েছে। মঙ্গলবার ত্রাণ নিয়ে রওনা দেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে অবস্থান নিয়ে নগরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ত্রাণ সংগ্রহের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। শনিবার বিকেলে প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকার খাদ্য উপকরণ নিয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বন্যা কবলিত এলাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা বন্যার্তদের জন্য মুড়ি, চিড়া, গুড়, খেজুর, খাবার স্যালাইন, মিনারেল ওয়াটার ২ লিটার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ২টা, ফিটকারী, বিস্কুট, ওষুধ, পাউডার দুধ সহ শিশুখাদ্য প্যাকেটজাত করে সরবরাহ করা হবে।
বরিশাল নগরের সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে ট্রাকে ট্রাকে করে এসেছে ত্রাণ সহায়তা। কলেজের কলা ভবন ও অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাসে পোশাকের পাহাড় তৈরি হয়েছে। সেগুলো সাইজ অনুযায়ী বেছে বেছে রাখছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি কলেজের জিরো পয়েন্টে নানা ধরণের খাদ্য সামগ্রী দিয়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
শংকর মঠ পূজা উদযাপন কমিটিও টাকা তুলছে। সেই টাকা খাগড়াছড়িতে পাঠানোরর পরিকল্পনা করেছেন বলে জানিয়েছেন কমিটির সভাপতি লিমন কৃষ্ণ সাহা কানু। বরিশাল মহানগর পূজা উদযাপন কমিটিও নগরের বিভিন্ন মন্ডপ থেকে সহায়তা সংগ্রহ করে বন্যার্তদের জন্য পাঠানোর সিদ্বান্ত নিয়েছেন সভাপতি ভানু লাল দে ও সাধারণ সম্পাদক গোপাল চন্দ্র সাহা।
এ দিকে, ডাঃ মনীষা চক্রবর্তীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দুই শিশু তাদের মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা ঢেলে দিলেন গণত্রান সংগ্রহের বাক্সে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে বরিশালের অশ্বিনী কুমার টাউনহলের সামনে বাসদ আয়োজিত গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচিতে এসে নিজেদের জমানো টাকার ব্যাংক ভেঙে ফেলেন শিশু আসফি মাসরিব ও আরসিয়া মুনজারিন।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।