সারাদেশ

‘রওশন এরশাদ ২০১৪ সালের মতো করতে পারবেন না’ 

ডেস্ক রিপোর্ট: ‘রওশন এরশাদ ২০১৪ সালের মতো করতে পারবেন না’ 

ছবি: সংগৃহীত

২০১৪ সালের মতো রওশন এরশাদের প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ নেই। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মতো নির্বাহী ক্ষমতা তার নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ও বিশেষ দূত মাসরুর মাওলা।

তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন আর ২০২৩ সালের নির্বাচন এক না, অনেক পার্থক্য রয়েছে। ২০১৪ সালে রওশন এরশাদ যা করেছিলেন এবার তার সেই সুযোগ নেই। ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আর তখন বেগম রওশন এরশাদ ছিলেন তার স্ত্রী। যে কারণে অনেক কিছু করার ‍সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। আগের মতো সুবিধা করতে পারবেন না।

তিনি বলেন, রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদে রয়েছেন। ওই পদের নির্বাহী কোনো ক্ষমতা নেই। ওনি সিনিয়র পার্সন হিসেবে সম্মানিত করে রাখা হয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া কিংবা না নেওয়ার প্রশ্নে তার সিদ্ধান্ত দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই। তার সঙ্গে পার্টির কোনো নেতা নেই। তিনি যে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার পদ ব্যবহার করেন, সেটিও পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের দিয়েছেন ।

আমি যতদূর জানি তিনি (রওশন এরশাদ) নিজে নির্বাচন যাওয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি। তার আশপাশের কিছু লোকজন এসব বলা বলি করছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরিস্থিতি আর বর্তমান পরিস্থিতি এক নয়। তখন আন্তর্জাতিকভাবে এমন চাপ ছিল না। প্রভাবশালী দেশগুলো তখন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এতটা সরব ছিল না। ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের সঙ্গে মেলানো ঠিক হবে না বলেও মনে করেন তিনি।

নির্বাচন প্রশ্নে জাতীয় পার্টির সর্বশেষ অবস্থান কী? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা সরকারের ডাকের অপেক্ষায় রয়েছি। আমরা মনে করছি আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান আসবে।

পাল্টা প্রশ্ন ছিল আপনি কোন সংলাপের কথা বলছেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকার সংলাপের জন্য যে চিঠি দিয়েছে তার সঙ্গে কোন যোগসূত্র রয়েছে। ওই চিঠিতো ৩টি দলকে দেওয়া হয়েছে? জবাবে মাসরুর মাওলা বলেন, আমি জাতীয় পার্টির মুখপাত্র। আমি জাতীয় পার্টির কথা বলতে পারি। অন্যদের বিষয়ে বলতে পারবো না।

তফসিল ঘোষণার পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এখনও কোন মতামত দেননি। তিনি নির্বাচন প্রশ্নে ভেবে চিন্তে পা ফেলতে চান। কিন্তু পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ নির্বাচনে এক পা দিয়ে রেখেছেন। তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। অনেকেই ২০১৪ সালের নির্বাচনের আলামত দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। ২০১৪ সালে নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করার পর হঠাৎ করেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে রওশনের নেতৃত্বে ৮৭জন প্রার্থী নির্বাচনে থেকে যান।

নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে তফসিলের পর জিএম কাদের-এর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি। সর্বশেষ গত ১৪ নভেম্বর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় জিএম কাদের বলেন, ”আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যাবে কি না তা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে নানাভাবে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে। যখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে যাই, তখনই পিছুটান আসে। কিন্তু সরকার দল ভাঙতে পারছে না। আমার অনুরোধ, যে সিদ্ধান্ত নেব, সবাই সে সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন। হয়তো সবার মতামতের প্রতিফলন নাও হতে পারে। রাজনীতিতে আবেগের মূল্য দিলে পথভ্রষ্ট হতে হবে, বাস্তবতাকে মূল্য দিতে হবে।’’

রওশন এরশাদের বাসায় রুদ্ধদ্বার সভা

ছবি: সংগৃহীত

ঘনিষ্ঠ সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এমপি। যে কোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে আবারও দৃঢ় মতামত ব্যক্ত করেছেন।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রওশন এরশাদের গুলশানের বাসায় অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলা বৈঠকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে মতামত দিয়েছেন উপস্থিত নেতারা। এতে অবশ্য রওশন এরশাদের অনুসারী নেতারাই শুধু অংশ নিয়েছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, রওশন এরশাদ নেতাদের জানিয়েছেন শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে। তারপর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার থেকেই গুঞ্জন চলছে রওশন এরশাদ ও জিএম কাদের যে কোনো সময় যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেখানেই হয়ত দেবর-ভাবির মধ্যে একটি সমঝোতা আসতে পারে। বিশেষ করে আসন ভাগাভাগি ও মনোনয়ন প্রশ্নে একটি সিদ্ধান্ত আসবে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, রওশন এরশাদ খুবই আত্মবিশ্বাসী অবস্থানে রয়েছেন। তিনি মনে করছেন, জিএম কাদেরসহ সকলেই নির্বাচনে আসবে। এর মধ্যে সংশয় দেখছেন না তিনি।

বৈঠকে জাতীয় পার্টির কিছু নেতার বক্তব্য তুলে ধরেন দু’একজন নেতা। তারা বলেন, আপনাকে (রওশন এরশাদ) নিয়ে অনেক আপত্তিকর কথা বলেছে। তাদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জবাবে রওশন এরশাদ বলেন, এসব বিষয় ধরলে চলবে না, তারাও আমাদের পার্টির নেতা। সবাইকে নিয়েই রাজনীতি করতে হবে।

বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ম্যাডাম (রওশন এরশাদ) বলেছেন, যে কোনো পরিস্থিতি হোক জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে। আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি নেওয়া এবং প্রার্থীদের নিজ নিজ আসনে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

কখন থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম ছাড়া হবে। এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম মসীহ্ বলেন, আমরা পার্টির চেয়ারম্যানের বিষয়টি এখনও পরিষ্কার না। তার অবস্থান দেখে সিদ্ধান্ত নিতে চাই। তবে তিনি না এলেও রওশন এরশাদের নেতৃত্বে আমরা নির্বাচনে থাকছি।

বৈঠকে অংশ নেওয়া জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সবাইকে নিয়েই নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী রয়েছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা।

পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ নির্বাচনে এক পা দিয়ে রাখলেও। পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এখনও নির্বাচন প্রশ্নে কোনো মতামত দেন নি। তিনি নির্বাচন প্রশ্নে ভেবে চিন্তে পা ফেলতে চান। সময়ক্ষেপণ করে দেখতে চান অন্যকিছু ঘটে কিনা। বিশেষ করে আমেরিকার দৌড় ঝাপের দিকেও নজর রাখছে দলটি। অনেকেই ২০১৪ সালের নির্বাচনের আলামত দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

২০১৪ সালে নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করার পর হঠাৎ করেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে রওশনের নেতৃত্বে ৮৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে থেকে যান। একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন বিশাল ক্ষমতা ও ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তিনি নেতাদের নির্বাচনে যাওয়া ঠেকাতে পারেন নি, জিএম কাদের সে তুলনায় কিছুই না। অনেক নেতাই চান যে কোনোভাবে এমপি নির্বাচিত হতে।

সর্বশেষ ১৪ নভেম্বর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় জিএম কাদের বলেন, ”আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যাবে কি না তা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে নানাভাবে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে। যখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে যাই, তখনই পিছুটান আসে। কিন্তু সরকার দল ভাঙতে পারছে না। আমার অনুরোধ, যে সিদ্ধান্ত নেব, সবাই সে সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন। হয়ত সবার মতামতের প্রতিফলন নাও হতে পারে। রাজনীতিতে আবেগের মূল্য দিলে পথভ্রষ্ট হতে হবে, বাস্তবতাকে মূল্য দিতে হবে।’’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ১৬ নভেম্বর বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, ‘‘আমরা এখন পর্যন্ত নির্বাচন প্রশ্নে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারি নি। আরও তিন-চার দিন পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নিতে চাই। আমরা মনে করছি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একটি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে।’’

;

যেভাবে অনলাইনে কেনা যাবে আ.লীগের মনোনয়ন ফরম

ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সরাসরি (অফিস) ছাড়াও অনলাইনে কেনার ব্যবস্থাও রেখেছে। সেই সাথে অনলাইনেই জমা দেয়া যাবে মনোনয়ন ফরম।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অনলাইনে মনোনয়ন ফরম কিনতে ‘Smart Nomination App’ নামের এপস ডাউনলোড করতে হবে। এটি গুগল প্লে-স্টোর অথবা IOS অ্যাপ-স্টোরে পাওয়া যাবে। এছাড়া nomination.albd.org ওয়েবসাইট থেকেও কেনা যাবে মনোনয়ন ফরম।

এপস অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ফরম রেজিষ্ট্রেশন ও জমা দিতে হবে এবং নির্ধারিত ৫০ হাজার টাকা ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে পেমেন্ট সম্পন্ন করতে হবে। এরপর লগ-ইন করে নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়ন ফরম পূরণ ও জমা দেওয়া যাবে।

উল্লেখ্য গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের  তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশনার। তফসিল অনুযায়ী আগামী জানুয়ারির ৭ তারিখে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি হবে ৬-১৫ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ১৮ ডিসেম্বর।

প্রতীক বরাদ্ধের পর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল আটটা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার চালানো যাবে। এবারের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ব্যালট পেপারে। বিগত নির্বাচন কমিশনগুলো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে যে দৌড়ঝাঁপ আর প্রচেষ্টা চালিয়েছিল, কাজী হাবিবুল আউয়ালের অধীনের কমিশন শুরু থেকেই এই প্রচেষ্টায় যায়নি, এবং ব্যালট পেপারের ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্তে প্রায় সকল রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দিয়েছে।

;

‘সংলাপ’ করার যথেষ্ট সময় নেই, যুক্তরাষ্ট্রকে জানাল আ.লীগ

ডোনাল্ড লু ও ওবায়দুল কাদের

সংলাপ করার জন্য যথেষ্ট সময় নেই উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সংলাপ বিষয়ক চিঠির প্রতি উত্তরের চিঠিতে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। 

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। আজ সন্ধ্যায় দলটির পক্ষ থেকে সেই চিঠির জবাব দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের মার্কিন হাইকমিশনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পক্ষে চিঠির জবাব নিয়ে যান দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত। 

চিঠিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমি আপনার (ডোনাল্ড লু), রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতি ১২ নভেম্বরের চিঠির জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত করতে আন্তর্জাতিক বন্ধুদের সাহায্য ও সহায়তার প্রশংসা করছি।

দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখতে আমি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমাদের দলের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকারকে একটি পবিত্র অধিকার বলে মনে করে আওয়ামী লীগ। সেই অধিকার রক্ষায় নিরলস সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য ত্যাগের ইতিহাস রয়েছে আওয়ামী লীগের।

চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশে সরকার সংবিধানের আলোকে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) একটি সত্যিকারের স্বাধীন সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে বেশ কিছু কাঠামোগত, আর্থিক, মানব সম্পদ, আইনি ও অন্যান্য সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ছবিযুক্ত ভোটার আইডি কার্ড, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য আইন প্রণয়ন।

চিঠিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। নির্বাচনটি ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, অনেক মাস ধরে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে নিঃশর্ত সংলাপের জন্য দরজা খোলা রেখেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এই জাতীয় সংলাপের পূর্বশর্ত হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের উপর অনড় থাকায় এ জাতীয় সংলাপ বাস্তবায়িত হয়নি।

চিঠিতে ওবায়দুল কাদের আরও জানান, বর্তমানে বিএনপি এবং জামায়াত-ই-ইসলামীর মতো তাদের সমমনা মিত্ররা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অবরোধের নামে অগ্নিসংযোগের মতো জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মতে, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত অবরোধ সমর্থকদের দ্বারা মোট ১৫৪টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, আগামী সপ্তাহগুলিতে, রাজনৈতিক দলগুলিকে তাদের নির্বাচনী কাজগুলি চূড়ান্ত করতে তাদের সমস্ত সময় দিতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে ৩০০টি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পর্যালোচনা এবং চূড়ান্ত করা, তাদের ইশতেহার তৈরি করা, প্রচারণার কৌশল চূড়ান্ত করা, ভোটারদের কাছে প্রচারণা ইত্যাদি। যার অর্থ, সংলাপ আয়োজনের অবস্থা যদি এখন থেকে থাকেও, তবুও অর্থবহ সংলাপের পর্যাপ্ত সময় এখন নেই।

এছাড়াও চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সকল আন্তর্জাতিক বন্ধুদের সাথে অংশীদারিত্বকে গুরুত্ব দেয় এবং আশা করে যে তারা একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণের সামনে উপস্থাপনের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে। 

;

নির্বাচন পরিচালনায় আওয়ামী লীগের ১৫টি উপ-কমিটি গঠন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচলনার জন্য ১৫টি উপ-কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি

কমিটির চেয়ারম্যান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। কো-চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করবেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। সদস্য সচিব হিসেবে আছেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটি আহবায়ক করা হয়েছে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাককে ও সদস্য সচিব করা হয়েছে ড. সেলিম মাহমুদকে। নির্বাচন সম্পর্কিত আইনি সহায়তা বিষয়ক উপ-কমিটি আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও সদস্য সচিব করা হয়েছে অ্যাড. নজিবুল্লাহ হিরু কে। নির্বাচন কমিশন সমন্বয় বিষয়ক উপ-কমিটির সভাপতি করা হয়েছে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে.কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খানকে আর সদস্য সচিব করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সদস্য তারানা হালিমকে।

এছাড়া দপ্তর বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ আর সদস্য সচিব দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সমন্বয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অ্যাম্বাসেডর মো. জিয়া উদ্দিন এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খানকে। লিয়াজোঁ উপ-কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. রশিদুল আলমকে আর সদস্য সচিব করা হয়েছে সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হককে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ উপ-কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীকে আর সদস্য সচিব করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সদস্য সানজিদা খানমকে। প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবু নাসের চৌধুরীকে এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপকে। 

মিডিয়া বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরকে, আর সদস্য সচিব করা হয়েছে সাংসদ মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে। পেশাজীবী সমন্বয় উপ-কমিটির আহ্বায়ক প্রধানমন্ত্রী অর্থ উপদেষ্টা মশিউর রহমান আর সদস্য সচিব স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা। আইটি বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. হোসেন মনসুর আর সদস্য সচিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, বিদেশি মিশন/সংস্থা বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক অ্যাম্বাসেডর মো. জমির আর সদস্য সচিব শাম্মী আহমেদ।

সাংস্কৃতিক সামাজিক ও ক্রীড়া উপ-কমিটির আহ্বায়ক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু আর সদস্য সচিব সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কৃমার উকিল। অর্থ বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, সদস্য সচিব শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান। ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার গোলাম মাওলা নকশবন্দী আর সদস্য সচিব ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামীকাল শনিবার (১৮ নভেম্বর) থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমার কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *