সারাদেশ

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতে বঙ্গভবন যাচ্ছেন রওশন এরশাদ

ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপি জামায়াতসহ সমমনা দলের ডাকা হরতাল কর্মসূচিতে রাজধানীতে কমেছে গাড়ির চাপ। ফলে গণপরিবহন সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

রোববার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর আসাদগেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামটরসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে গণপরিবহন সংকটে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের চিত্র চোখে পড়েছে।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মো. আজিম উদ্দিন। কর্মের তাগিদে ফার্মগেট এলাকা থেকে নিয়মিত যাতায়াত করেন রাজধানীর ব্যাংক পাড়া মতিঝিল এলাকায়। তবে প্রতিদিন বাসা থেকে এসেই গাড়ি পেলেও কিছুটা বিপাকে পড়েছেন আজকে। ৩০ মিনিটের বেশি সময় দাঁড়িয়ে থেকেও উঠতে পারেননি কোন পরিবহনে।

আজিম উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রতিদিন স্ট্যান্ডে এসেই গাড়ি পাই। কিন্তু আজ ৩০ মিনিটের উপরে রাস্তাই দাড়িয়ে আছি গাড়ি পাচ্ছি না। বেশ কিছু সময় পর পর একটা দুইটা গাড়ি আসছে কিন্তু তাতেও উঠার কোন পরিবেশ নেই। গেটে পর্যন্ত মানুষ ঝুলছে। অফিসে কখন পৌছাতে পারবো কিছুই বলতে পারছি না।

পারিবারিক প্রোয়োজনে সদর ঘাটের লঞ্চে করে বাড়িতে যাবেন মো. আলী আজম। দীর্ঘ অপেক্ষার পরও বাসে উঠতে না পেরে বেশি টাকা দিয়েই অবশেষে সিএনজি অটো রিকশাতে চেপে বসেছেন তিনি।

তিনি বলেন, নিজের প্রয়োজনে দ্রুত বাড়িতে যেতে হবে। তাই সকাল সকাল বের হয়েছি। কিন্তু অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও কোন গাড়িতে উঠতে পারিনি। তাই কি করবো বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়ে সিএনজি অটোরিকশা রিজার্ভ করেছি। এই হরতাল অবরোধের নামে শুধু শুধু মানুষের ভোগান্তিতে ফেলার কোন মানে হয়?

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন বড় ভাই। সারা রাত ভায়ের ওখানে রয়েছেন ছোট ভাই নাসের। রাজধানীর শ্যামলী থেকে হাসপাতালে যাবেন ছোট বোন এবং অসুস্থ ভায়ের স্ত্রী। পরে বাসাই ফিরে আসবেন ছোট ভাই নাসের।

ছোট বোন বলেন, আমার ভাই ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি রয়েছে। ছোট একটা অপারেশন হয়েছে। তাই সব সময় তার কাছে কেউ না কেউ থাকতে হচ্ছে। রাতে ছোট ভাই ছিল। এখন আমরা গেলে সে বাসাই আসবে। কিন্তু আমরা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি কোন গাড়ি পাচ্ছি না। যেসব গাড়ি আসছে তাতে উঠতেই পারছি না। গেটে পর্যন্ত মানুষ ঝুলছে।

এদিকে পরিবহন শ্রমিকেরা বলছেন, রাস্তাই গাড়ি কম থাকায় অধিকাংশ গাড়িতে পা ফেলার জায়গাও থাকছে না।

আয়াত পরিবহনের চালকের সহকারী বলেন, হরতালের কারণে রাস্তায় গাড়ি নেমেছে কম। গাড়ির মালিকদের মধ্যে কিছুটা ভয় হচ্ছে যদি গাড়িতে আগুন দেয়। আর একটা গাড়ি পুড়িয়ে দিলে মালিকের কত টাকার ক্ষতি। তাই সবাই গাড়ি বের করেনি। গাড়ি কম থাকার কারণে গাড়ির গেটে পর্যন্ত মানুষ ঝুলছে। ভেতরে যাত্রী নেওয়ার মতন কোন জায়গাই থাকছে না। একজন নামলে তিনজন উঠছে।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন বাস পয়েন্ট সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাস পয়েন্টে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকছেন। বেশ কিছুসময় পর পর গণপরিবহন আসলেও সেগুলোতে ঠাঁই থাকছে না তিল ধারণের। এদিকে সড়কে বেড়েছে নিজস্ব পরিবহনের সংখ্যাও।

গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে পুলিশি হামলার অভিযোগ করে ২৯ অক্টোবর সারা দেশে হরতাল ডাকে বিএনপি। পরে সেই হরতালে সমর্থন জানান জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দল।

একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা তিনদিন সর্বাত্মক অবরোধ ডাকে দলগুলো। পরে দ্বিতীয় দফায় ৫ থেকে ৬ নভেম্বর এবং তৃতীয় দফায় ৮ থেকে ৯ নভেম্বর অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি-জামায়াত। পরে চতুর্থ দফায় রবি ১৩ ও সোমবার ১৪ তারিখ অবরোধ পালন করে দলটি। পঞ্চম দফায় ১৫ নভেম্বর বুধবার ও ১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার অবরোধের ডাক দেয় দলটি। সবশেষ ষষ্ঠ দফায় আবারও  দুইদিন ব্যাপি হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। বিএনপির ডাকা হরতালে প্রথমদিন আজ। ফলে হরতালকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সড়কে কমেছে গণপরিবহনের সংখ্যা।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *