বিনোদন

ভারতকে কাঁদিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

ডেস্ক রিপোর্টঃ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হবে ভারত- ফাইনালের আগ পর্যন্ত যেইভাবে প্রতিপক্ষকে তুলোধুনো করছিল রোহিত শর্মার দল; তাতে ভারতের পক্ষে বাজি ধরার লোকের অভাব ছিল না। লক্ষাধিক দর্শক ধারণক্ষমতার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামও তাই স্বাভাবিকভাবেই সেজেছিল উৎসবের নীল রংয়ে। কে সামিল হতে চাইনি সেই উৎসবে। বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান থেকে শুরু করে সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী আশা ভোঁশলে। এমন কি ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিশিষ্ট রাজনৈতিক বর্গ। একযুগের অবসান যে ঘটল বলে!

তবে না নীল যে বেদনার রং। হলুদের আভায় ক্রমেই ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েছে গ্যালারির সেই নীল। উৎসব করতে করতে ঘরে ফিরবে বলে মাঠে আসা ভারতীয় সমর্থকদের হতাশায় ডুবিয়ে আগেভাগেই গ্যালারি ছাড়তে বাধ্য করলেন ট্র্যাভিস হেড-মার্নাস লাবুশেন জুটি। শুরুর শঙ্কা ঝেড়ে হেড যখন ৯৫ বলে সেঞ্চুরি আদায় করে নিলেন; তখন থেকেই গ্যালারি ছাড়া শুরু ভারতীয় সমর্থকদের।

আর যারা তবুও মাঠে ছিলেন; যদি কিছু একটা হয় এই আশায়। তাদের দুঃখটা দায়িত্ব নিয়ে বাড়িয়ে দিয়েছেন হেড-লাবুশেন জুটি। টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি আদায় করার পর আরও আগ্রাসী হয়েছেন ভারতীয় বোলারদের ওপর। ৪৭ রানে তিন উইকেট হারানো অজিরা শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিতেছে ৪২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের ব্যবধানে। ভারতের শিরোপা উৎসবে পানি ঢেলে ষষ্ঠ শিরোপা ঘরে তুলেছে অজিরা। যেখানে নায়ক হেড। জয়ের পথে হেডের ব্যাট থেকে আসে ১২০ বলে ১৩৭ রান। অন্যপ্রান্তে ১১০ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে শিরোপা নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন লাবুশেন।

অথচ ১১ ম্যাচের বিশ্বকাপে কি কঠিন পথটাই না পারি দিতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। বিশ্বকাপে ভালো করতে আগেভাগে ভারতে এসে সিরিজ হারতে হয়েছে। এরপর প্রথম দুই ম্যাচের দুটিতেই হার। তৃতীয় ম্যাচে এসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম জয় পেলেও তা ছিল না দাপুটে। দলটি যে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেবে সেই বিশ্বাসটা হারিয়ে ফেলেছিল দর্শকদের একটা অংশ।

তবে না বিশ্বসেরা বোধয় এমনই হয়ে থাকে। কখনোই হাল ছাড়ে না। শেষটা দেখে তবেই ঘরে ফিরে। নয়তো কি আর এমনি এমনি রেকর্ড পাঁচটি শিরোপা তাদের দখলে। টানা ৯ ম্যাচ জয় তুলে বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরে সেটাই যেন আরও একবার প্রমাণ করে দেখাল অস্ট্রেলিয়া। কেন তারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।

আগ্রাসী ভারতকে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে পাঠানোটা ভয়ের। টুর্নামেন্টের আগের ১০টি ম্যাচে যেইভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে তারা। তাতে তাদের আগে ব্যাট করতে পাঠানোর চ্যালেঞ্জ নিতে চাইবে না কোনো অধিনায়ক। তবুও সেটা করলেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। এরপর যা করলেন অজি বোলাররা তাতে অবাক সবাই। আগ্রাসী ভারত পরল বড় পরীক্ষার মুখে। যেই পরীক্ষা গোটা আসরেই দিতে হয়নি তাদের।

মিচেল মার্শ, জস হ্যাজেলউড ও প্যাট কামিন্সের বোলিং তাণ্ডবে আগ্রাসী ভারতের ইনিংস থামে ২৪০ রানে। যেখানে লোকেশ রাহুলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ১০৭ বলে ৬৬, কোহলির ৬৩ বলে ৫৪ ও রোহিতের ৩১ বলে ৪৭।

ছোট পুঁজিতে শিরোপা জিতেতে যেই শুরুটা দরকার ছিল ভারতের। সেটা হয়েছে শামি-বুমরাহ নৈপুণ্যে। ৭ ওভারের আগেই অস্ট্রেলিয়ার তিন টপঅর্ডার ব্যাটারকে ফেরায় ভারত। তাতে জয়ের স্বপ্নটা গাঢ় হয় ভারতের। যদিও ওই পর্যন্তই থেকেছে গল্পটা। এরপর গল্পটা নিজেদের করে নিয়েছেন অজি ব্যাটার ট্র্যাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেন জুটি। দু’জনের ১৯২ রানের জুটিতে ৬ উইকেটের জয় তুলেছে অস্ট্রেলিয়া।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *