আন্তর্জাতিক

মানব পাচার সক্রিয়: ইন্দোনেশিয়ায় পালিয়েছে ১০০০ রোহিঙ্গা

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকা কক্সবাজার থেকে মানবপাচারের শিকার হয়ে ইন্দোনেশিয়াতে পৌঁছেছেন প্রায় ১ হাজার রোহিঙ্গা। এরা সকলেই ইঞ্জিন চালিত কাঠের নৌকায় সমুদ্র পাড়ি দিয়েছেন। এতে বাংলাদেশে আবারো মানবপাচার চক্র সক্রিয় হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইন্দোনেশিয়ার উত্তরে আচেহ প্রদেশে গত ৮ দিনে প্রায় ১০০০ রোহিঙ্গা মুসলিম পাড়ি জমিয়েছেন। বারবার স্থানীয়রা তাদের পাড়ে ভিড়তে বাধা দিলেও শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘের শরনার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এর তত্ত্বাবধানে শেষ পর্যন্ত আপাতত থাকার সুযোগ মেলে এই রোহিঙ্গাদের।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঁচটি নৌকায় গড়ে প্রায় ২০০ জন করে রোহিঙ্গা সাগর পাড়ি দিয়েছেন। নারী ও শিশুদের সংখ্যাই বেশি নৌকাগুলোতে। প্রথমে দুই দফায় স্থানীয়রা তাদের বাধা দেয়। পরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হস্তক্ষেপে আচেহ প্রদেশের বাইরিয়ান জেলায় আশ্রয় মেলে তাদের।

ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে স্থানীয়দের ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও মানুষের জন্য এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছে।

আচেহ’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই শরনার্থীরা প্রায় সকলেই বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে এসেছেন। তাদের ক্যাম্প নাম্বার এবং পরিচয় সংরক্ষণ করা হয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ইন্দোনেশিয়ার নির্বাহী পরিচালক উসমান হামিদ বলেছেন, পূর্বেও ইন্দোনেশিয়ার জনগণ শরনার্থীদের প্রতি সহায়তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করেছে এবং অগণিত শরনার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। নিজেদের সমস্যা থাকার পরেও আরো ১ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া ইন্দোনেশিয়ার মানুষের মানবিক দিকের পরিচয়।

জাতিসংঘ শরনার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষর করা দেশগুলোর অন্তর্ভুক্ত নয় ইন্দোনেশিয়া। বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লালু মুহাম্মদ ইকবাল বলেন, ইন্দোনেশিয়া শুধুমাত্র মানবিক কারণে এই শরনার্থীদের আপাতত আশ্রয় দিয়েছে। তবে জাতিসংঘ শরনার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষর করা অনেক দেশই রোহিঙ্গা শরনার্থীদের আশ্রয় দিচ্ছে না। তাদেরকেও চাপ দেয়া উচিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের।

আচেহ’র স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মুহাম্মদ নাসের বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয়দের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন বিষয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরী হচ্ছে। স্থানীয়দের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। এছাড়াও মানবপাচারের শিকার হওয়া এ মানুষগুলো এখানেও পালিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত চলে যাওয়ার চেষ্টা করে।

মানবপাচারের শিকার হওয়ার এসব রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, কক্সবাজার থেকে দালালরা তাদের মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে নৌকায় উঠালেও আচেহতে পাঠিয়ে দেয়। প্রায় ২০ থেকে ২৪ দিন সাগরে ভাসে তারা। মালয়েশিয়ায় পাঠানো কথা বলে ২০ হাজার থেকে ১ লাখ বাংলাদেশি টাকা নেয়া হয়েছে এই রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *