সিগারেট চোরাচালান: ব্রুনাই আদালতে বাংলাদেশিকে জরিমানা

ডেস্ক রিপোর্ট: নেদারল্যান্ডসের পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর সরকার গঠনে জোটের অংশীদার খুঁজছেন কট্টর ইসলাম বিরোধী গ্রিট ওয়াইল্ডারের পার্টি ফর ফ্রিডম (পিভিভি)। পার্লামেন্টে ১৫০টি আসনের মধ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা কোন দল পায়নি। সরকার গঠন করতে হলে ৭৬টি আসনের প্রয়োজন। সেজন্য ফ্রিডম পার্টিকে অবশ্যই জোট সরকার গঠন করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) আংশিক ফলাফলে দেখা যায়, ডাচ পার্লামেন্ট নির্বাচনে আংশিক ভোট গণনা শেষে পিভিভি ১৫০টি আসনের মধ্যে ৩৭ টি আসনে জয় পেয়েছে এছাড়া বামপন্থী জোট ২৫টি এবং বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের রক্ষণশীল পিপলস পার্টি ফর ফ্রিডম অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (ভিভিডি) ২৪ টি আসনে জয়লাভ করেছে।

নেদারল্যান্ডসের দৈনিক এনআরসি বলেছে, ডানপন্থী জনতাবাদীদের বিজয় সমস্ত প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। দলটি এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিতে এবং প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের জন্য কমপক্ষে আরও দুটি দলের সাথে একটি জোট গঠন করতে চলেছে।

মধ্যপন্থী আইন প্রণেতা পিটার ওমজিগটের ভিভিডি এবং নিউ সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট (এনএসসি) পার্টির একটি জোট ৮১ টি আসন পাবে।

নির্বাচনের ফলাফল স্পষ্ট হওয়ার সাথে সাথে বুধবার সন্ধ্যায় টিভিতে উইল্ডার্স বলেন, ভোটাররা কথা বলেছেন। কোন অবস্থাতেই ভোটারদের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করা উচিত নয় বলে তিনি শাসন করার তার অভিপ্রায় স্পষ্ট করেছেন।

উইল্ডার্স তার বিজয়ী বক্তৃতায় বলেন, আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছতে পারব। আমরা শাসন করতে চাই এবং … আমরা শাসন করব।

পিভিভি এর চরম ডানপন্থী আদর্শ কিছু ডাচ বিরোধীদের মধ্যে শঙ্কা জাগিয়েছে। তারা বলছে, ওয়াইল্ডারের নেতৃত্বে ফ্রিডম পার্টির জয় ইউরোপজুড়ে একটি বড় ধাক্কা দেবে। কারণ, নেদারল্যান্ডস হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম।

নির্বাচনী বিজয় সত্ত্বেও একটি স্থিতিশীল সরকার গঠনে একটি বিস্তৃত জোটের জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিজয় অধরা প্রমাণিত হতে পারে।

অন্য তিনটি শীর্ষ দলের নেতারা এর আগে পিভিভি নেতৃত্বাধীন জোটে কাজ করার কথা অস্বীকার করেছিলেন। তবে নির্বাচনে তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে থাকা বড় দুটি দলের সমর্থনে চেষ্টা করবে ফ্রিডম পার্টি।

বামপন্থী জোট নির্বাচনে ২৫টি আসনে বিজয়ী হয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই জোটের নেতা ফ্রাঁ টিমারম্যানস বলেছেন, ফ্রিডম পার্টির সাথে কোন সমঝোতায় তিনি যাবেন না।

ভিভিডি ওয়াইল্ডার্সের সাথে জোটের কথা অস্বীকার করেনি। তবুও ভিভিডি-এর শীর্ষ প্রার্থী ডিলান ইয়েসিলগোজ, যিনি প্রথম মহিলা সরকার প্রধান হওয়ার লক্ষ্যে রয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ওয়াইল্ডারদের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সরকারে প্রবেশ করবেন না।

পিটার ওমটিজিটের এনএসসি পার্টি ২০ টি আসন জিতবে বলে আশা করা হচ্ছে। তার অবস্থানকেও নরম করতে দেখা গেছে। তিনি বলেছিলেন, এ বিষয়ে উপলব্ধ, যদিও জোটের আলোচনা সহজ হবে না।

ওয়াইল্ডার্স জোটের চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে বলেছেন, আমি দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই… এখন আমাদের একে অপরের সাথে চুক্তির সন্ধান করতে হবে।

তিনি বুধবার উল্লাসিত সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছেন, পিভিভিকে আর উপেক্ষা করা যাবে না।

পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য দলগুলো বৃহস্পতিবার তাদের পক্ষের প্রত্যেকের সাথে দেখা করবে। শুক্রবার, দলের নেতারা একজন “অন্বেষণকারী” সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে মিলিত হবেন।

পিভিভি সংসদীয় নির্বাচনে জয়ী প্রথম ডানপন্থী জনতাবাদী দল। ওয়াইল্ডার্সকে তার রাজনৈতিক অবস্থানে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে প্রায়শই তুলনা করা হয়। তার দলের ইসলাম-বিরোধী, ইইউ-বিরোধী প্ল্যাটফর্ম একটি কট্টরপন্থী অবস্থানের সাথে অভিবাসী বলে বিরোধীরা প্রচারণা চালিয়েছে।

ওয়াইল্ডার্স বলেছেন, ডাচরা আশা করে জনগণ তাদের দেশ ফিরে পাবে। আমরা নিশ্চিত করব আশ্রয়প্রার্থী এবং অভিবাসনের সুনামি হ্রাস পাবে।

ইসলামিক ও মরক্কোর সংগঠনগুলো ওয়াইল্ডার্সের জয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নেদারল্যান্ডের জনসংখ্যার প্রায় ৫ শতাংশ মুসলিম।

ডাচ মরক্কোর প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংস্থার প্রধান হাবিব আল-কাদ্দৌরি ডাচ সংবাদ সংস্থা এএনপিকে বলেছেন, দুর্ভোগ এবং ভয় অনেক বেশি। আমরা ভয় পাচ্ছি তিনি আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসাবে চিত্রিত করবেন।

পিভিভির ইশতেহারে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ওয়াইল্ডাররা নেদারল্যান্ডসের জন্য ভবিষ্যতের কী কল্পনা করে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ইসলামিক স্কুল, কোরআন ও মসজিদ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকারি ভবনে হেডস্কার্ফ নিষিদ্ধ করার কথাও বলা হয়েছে। এছাড়া নেদারল্যান্ডের ইইউ ছেড়ে যাওয়ার জন্য একটি “আবদ্ধ গণভোট” অনুষ্ঠানের কথাও বলা হয়েছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।