সারাদেশ

নাশকতার অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেফতার

ডেস্ক রিপোর্ট: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ‘একতরফা’ তফসিল বাতিল করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে এক পেশাজীবী সমাবেশে সংগঠনের নেতা রুহুল আমিন গাজী এই আহ্বান জানান।

রুহুল আমিন গাজী বলেন, আমি পেশাজীবীদের পক্ষ থেকে সরকারকে বলতে চাই, সকল রাজবন্দিদের মুক্ত করে দিন, এই সাজা দেওয়া নাটক বন্ধ করুন। একটা গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের জন্য সকল দলের সাথে উন্মুক্ত আলোচনা করুন। এই সংলাপের মধ্য দিয়ে… তফসিল পেছান, এই তফসিলের দরকার নেই।

তিনি বলেন, আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের একটা উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন এবং নতুন তফসিলের মধ্য দিয়ে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করুন। পেশাজীবীদের ওপর হামলা বন্ধ করুন, বন্দী রাজনীতিবিদদের মুক্তি দিন।

ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক এই সভাপতি বলেন, সরকারকে বলতে চাই, আপনারা যদি ভেবে থাকেন ২০১৪ অথবা ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন করবেন, সরকার পরিচালনা করবেন সেকথা আপনি ভুলে যান। সেরকম নির্বাচন মানুষ হতে দেবে না।

‘দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াতসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এভাবে হঠাৎ সাজা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। আপনি সবাইকে জেলে পুরে নির্বাচন করবেন আর নির্বাচনী খেলা করবেন এটা চলতে পারে না,’ যোগ করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম বলেন, আজকের এই পরিস্থিতিতে জনগণ হতাশ। তারা চায় ভোট দিতে, তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়, তারা চায় গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে।

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দস বলেন, কিসের জন্য আজকে এই অবস্থা? আজকে কেন ১৫ বছরের নির্বাচন নিয়ে যে জাতীয় সমস্যা এটা আজকে প্রতিটা মানুষ অনুভব করে। একপেশে নির্বাচন করে কোনো অবস্থাতেই সরকার পার পাবে না।

তিনি আরও বলেন, যেভাবে ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবরে মানুষকে লগি-বৈঠা দিয়ে হত্যা করেছিল ঠিক ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ একটি মহাসমাবেশে যেভাবে গোলমাল করেছে, পুলিশ ভাইকে হত্যা করেছে, বিএনপির বহু ভাইকে গ্রেফতার করেছে সর্বোপরি বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় অফিসসহ বিভাগ, জেলা, উপজেলা, থানা, মহল্লার অফিসে তালা মেরে রেখেছে … আর আপনি সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সাহেব নির্বাচন করবেন? আর শেখ হাসিনার আপনি একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসবে … অসম্ভব। দেশের মানুষ কোনো অবস্থাতেই একতরফা নির্বাচনে যাবে না।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে পেশাজীবীদের গ্রেফতার ও নির্যাতন বন্ধ, পেশাজীবীসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের এই পেশাজীবী সমাবেশ হয়। এতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, কৃষিবিদ, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন অংশ নেন।

সমাবেশে সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকায় আসতে পারেননি বলে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব জানান। সমাবেশে শেষে পেশাজীবীরা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে মিছিল বের করে।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুতফুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাশিদুল হাসান হারুন, জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশসের অধ্যাপক আবদুস সেলিম, ডা. শহীদ হাসান, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, শহীদুল ইসলাম, খুরশীদ আলম, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা বেগম, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাখাওয়াত হোসেন, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *