আন্তর্জাতিক

ইসরায়েল-লেবানন সংঘর্ষে ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ

ডেস্ক রিপোর্ট: ফিলিস্তিনি জঙ্গি, সিরিয়ার যুদ্ধবিমান, ইসলামিক স্টেট, পশ্চিমাসমর্থিত বাহিনী কিংবা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কারণে এক জীবনে বহুবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন রোজ রোস্তম, নাহিদা মাশৌজ এবং আম্মার হাজেহ।

রয়টার্স জানিয়েছে, সম্প্রতি গাজায় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলি বাহিনী এবং ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষের পর তারা অন্তত ২০বার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন ।

রোস্তম লেবানিজ, মাশৌজ সিরিয়ার উদ্বাস্তু এবং হাজেহ এখন একজন ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু।

ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ রোস্তমকে দক্ষিণ লেবাননে তার বাড়ি থেকে সরে যেতে বাধ্য করেছে এবং মাশৌজকে তার নিকটবর্তী অস্থায়ী বাসস্থান থেকে তাড়িয়ে দেয়।

জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্যকার লড়াইয়ের সময় হাজেহ এই বছর চারবার তার জনাকীর্ণ শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়েছেন।

পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও তিনজনই এমন একটি দেশের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন, যেটি বারবার গৃহযুদ্ধের দ্বারা ধাক্কা খেয়েছে এবং সাম্প্রতিক সহিংসতা অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোকে আরও জটিল করে তুলেছে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, সাত সপ্তাহ আগে গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল-লেবাননের সীমান্তে সংঘর্ষে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

এদিকে লেবাননের কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান যুদ্ধে লেবাননে অন্তত ১৩ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।

রোস্তম বলেন, ‘গাজা যুদ্ধ শুরু হলে হিজবুল্লাহ গুলি চালাতে শুরু করে এবং তারপরে আমাদের বাড়ির চারপাশে গোলা বর্ষণ শুরু করে ইসরায়েল। ওই সংঘর্ষ আমাকে তৃতীয়বারের মতো বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।’

অন্যদিকে, মাশৌজ সিরিয়ার রাক্কা শহর ছেড়ে চলে যান, যখন এটি ইসলামিক স্টেটের হাতে ছিল। মার্কিন সমর্থিত বাহিনী আক্রমণ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে তার বাড়িতে বোমা হামলার কিছুক্ষণ আগে তিনি প্রস্থান করেন।

রোস্তম বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম অবশেষে দক্ষিণ লেবাননে একটি স্থিতিশীল জীবন খুঁজে পাব। সেই আশাও শেষ হয়ে গেছে। আমরা জানি না কোথায় যাবো।’

উল্লেখ্য, লেবানন স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের একটি দেশ। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল সৃষ্টির পর ফিলিস্তিনিদের আগমন কয়েক দশক পরে লেবাননের গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত করতে সাহায্য করেছিল। ২০০৬ সালে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধ সেখানে কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।

২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় দেড় মিলিয়ন সিরীয় শরণার্থীর আগমন লেবাননের উপর নতুন চাপ সৃষ্টি করে এবং শরণার্থীরা বিপজ্জনক সামুদ্রিক রুট দিয়ে স্থানান্তরিত হওয়ায় তা ইউরোপেও ছড়িয়ে পড়ে।

সাম্প্রতিক স্থানচ্যুতি কম কিন্তু সংঘাত চলতে থাকলে তা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *