সারাদেশ

‘এবারও পাসের হারে এগিয়ে মেয়েরা, ছেলেরা পিছিয়ে পড়ছে’

ডেস্ক রিপোর্ট: বগুড়া জেলা এ্যাডভোকেটস্ বার সমিতির নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ প্যানেলের ভরাডুবি হয়েছে। ১৩টি পদের মধ্যে তারা একটি পদেও জিততে পারেনি। অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল সভাপতি ও -সাধারণ সম্পাদক সহ ১৩টি পদেই জয়লাভ করেছে।

ভরাডুবির জন্য ১৮৪টি সরকারি আইন কর্মকর্তার পদ নিয়ে ক্ষোভ থেকে দ্বন্দ্ব, বিভক্তি, ঐক্যের অভাব এবং দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যারা কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা না নেয়াকে দায়ী করেছেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী গোলাম ফারুক।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বগুড়া জেলা এ্যাডভোকেটস্ বার সমিতির   নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষে রাত ১১টায় ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার এ্যাডভোকেট বিনয় কুমার রজত।

বগুড়া জেলা এ্যাডভোকেটস্ বার সমিতির সদস্য রয়েছেন ৮৬০ জন। এরমধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ৮৪০ জন।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছেদ জানান, তাদের ফোরামে সদস্য রয়েছেন ৩৬০ জন। এছাড়াও জামায়ত পন্থী আইনজীবিদের সংগঠন বাংলাদেশ ল ইয়ার্স কাউন্সিলের সদস্য ৬০ জন এবং এলডিপি ও গণফোরামের ৮ জন সর্বমোট ৪২৮ জন আইনজীবী নিয়ে গঠিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল থেকে  সভাপতি পদে আতাউর রহমান খান মুক্তা ৫০৭ ভোট পেয়ে  নির্বাচিত হন। সাধারণ সম্পাদক পদে জহুরুল হক জাফর ৩৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। অপরদিকে বঙ্গবন্ধু  আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী গোলাম ফারুক পেয়েছেন ২৭৫ ভোট।  এবং সাধারণ সম্পাদক পদে  জাকির হোসেন নবাব পেয়েছেন ৩০৪ ভোট।

এই দুই প্যানেলের বাহিরে,জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদ, কমিউনিস্ট এবং ওয়াকার্স পার্টির সমন্বয়ে গনতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি নামে আরেকটি প্যানেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেই প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী বাসদ নেতা সাইফুল ইসলাম পল্টু ভোট পেয়েছেন ২১ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জাসদ নেতা আব্দুল লতিফ পশারী ববি পেয়েছেন ৯৩ ভোট।

আব্দুল লতিফ পরাশী ববি বলেন, আমরা গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে আওয়ামী আইনজীবীদের সাথে নির্বাচনে ঐক্য করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঐক্য হয়নি। তিনি বলেন আমাদের নিয়ে ঐক্য করা হলে আওয়ামী আইনজীবিদের আজকে এই ভরাডুবি হতো না। গত বছরও আমরা ঐক্যের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু ঐক্য না করায় গত বছর ভরাডুবি হলেও সভপতিসহ একটি সসদ্য পদে তারা জিতেছিল। আর এবারের পরাজয় লজ্জাজনক।

এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি প্রার্থী গোলাম ফারুক  বলেন, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ দাবি করায় তাদের সাথে ঐক্য হয়নি। তিনি বলেন, আমাদের মধ্য বিভক্তির কারণে ভোট ধরে রাখা যায়নি। গত বছর নির্বাচনে আমাদেরই দুইটি প্যানেল ছিল। এবার প্যানেল একটি হলেও আমাদের লোক আমাদেরকে ভোট দেয়নি। সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও তা ভেতরে ভেতরে।

তিনি বলেন, যারা দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কাজ করে তাদের কোন দলীয় শাস্তি হয় না। শাস্তি না হওয়ার কারণে হিসেবে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের কমিটি নেই গত ২০১৭ সাল থেকে। এ কারণে এখন সবাই নেতা। কেউ কারো কথা শোনে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের কয়েকজন সদস্য বলেন, ১৮৪ জন সরকারি আইন কর্মকর্তার পদে একই ব্যক্তি ১৫ বছর ধরে আছেন। তিন বছর পরপর পরিবর্তন হওয়ার নিয়ম থাকলেও তা হচ্ছে না। এ কারণে ক্ষোভ থেকে বিএনপির প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন অনেকেই।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সমন্বয়কারী ও বার সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছেদ বলেন, আমাদের ভোট বাইরে তেমন যায়নি। বরং আমরা সভাপতি পদে অন্য গ্রুপ থেকে ভোট পেয়ছি। সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও অপর পদ গুলোতে আমাদের প্রার্থীদের ভোট পর্যালোচনা করলেই বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা যায়।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *