সারাদেশ

‘সহিংসতা নারীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্যতম বাধা’

ডেস্ক রিপোর্ট: ‘সহিংসতা নারীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্যতম বাধা’

আলোচনা সভার বক্তারা। ছবি : সংগৃহীত

যেকোনও সমাজে সহিংসতার প্রভাব সাংঘাতিক। সহিংসতা পুরো প্রজন্মকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আর নারীর প্রতি সহিংসতা নারীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বিনিয়োগ বৃদ্ধি জরুরি। রবিবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘ বাংলাদেশ এবং এলসিজিওয়েজের যৌথ উদ্যোগে ১৬ দিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষের উদবোধনী দিনে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, ‘বিশ্বে প্রতি তিনজনে একজন নারী সহিংসতার শিকার। সহিংসতা নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিকসহ সকল অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে নতুন আকার দিতে পারি। নারীর প্রতি সহিংসতা কমাতে পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি, বদ্ধমূল মানসিকতা এবং আচরণের পরিবর্তন অপরিহার্য।’

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।

তিনি বলেন, ‘আইন প্রণয়ন ও দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত তহবিল বরাদ্দ অপরিহার্য। সামগ্রিকভাবে লিঙ্গসমতা বাজেট বরাদ্দ ট্র্যাক করার জন্য একটি সুসমন্বিত ব্যবস্থা প্রয়োজন।

বিশেষ অতিথি সুইডিশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে বলেন, ‘একটি সমাজ হিসাবে, একটি সম্প্রদায় হিসাবে, একটি পরিবার হিসাবে এবং মানুষ হিসাবে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার জন্য আমাদের অপরিসীম মাশুল গুণতে হয়। সহিংসতার প্রভাব প্রজন্মকে আবিষ্ট করে রাখে। সমস্ত স্তরে সম্পদ নষ্ট করে। তাই লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে বিনিয়োগ কেবল সঠিক নয়, বুদ্ধিমানের কাজ।’

ইউএন উইমেন কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টটিভ গীতাঞ্জলী সিং বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইনগুলোর বার্ষিক পর্যবেক্ষণ এবং তাদের প্রাসঙ্গিক রাখার জন্য সময়োপযোগী সংশোধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে বর্তমানে বিনিয়োগ যথেষ্ট নয়। সরকারকে অবশ্যই বিভিন্ন সেক্টর থেকে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে এবং জেন্ডার-প্রতিক্রিয়াশীল বাজেটিংয়ের মাধ্যমে জাতীয় বাজেট সামঞ্জস্য করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইউএনএফপিএ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টটিভ ক্রিস্টিন ব্লকউস, অধ্যাপক তানিয়া হক ও ব্যারিস্টার ফারজানা মাহমুদ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধে মাল্টিসেক্টোরাল প্রোগামের প্রকল্প পরিচালক ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী।

গার্হস্থ্য সহিংসতা এবং কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি সংক্রান্ত বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মূল্যায়ন করে একটি বিস্তারিত গবেষণাপত্র সভায় উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার ফারজানা মাহমুদ। আইএলও, ইউএনএফপিএ এবং ইউএন উইমেনের সাম্প্রতিক গবেষণার ওপর ভিত্তি করে গবেষণাপত্রটি তৈরি করা হয়। এতে প্রয়োজনীয় উন্নতির ওপর আলোকপাত করে আইনি ফাঁকফোকর বন্ধ করা এবং এর সামর্থ্যের ওপর জোর দেওয়া হয়।

বক্তারা বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা কোনও দেশের একক সমস্যা নয়। এটি বৈশ্বিক সমস্যা। অধিকাংশ নারী পরিবারের কোনও না কোনও সদস্য দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়। এ সহিংসতা সামাজিক রীতিনীতি, আচার, আচরণ এবং পুরুষের মনমানসিকতা দ্বারাও প্রভাবিত হয়। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে।’

‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নকে মাথায় রেখে নৌবাহিনীকে গড়ে তোলা হচ্ছে’

ছবি: সংগৃহীত

স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নকে মাথায় রেখে নৌবাহিনীকে যুগোপযোগী এবং টেকনোলজি সম্পন্ন স্মার্ট নৌবাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান।

রোববার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমিতে মিডশিপম্যান ২০২১ এ ব্যাচ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২৩ বি ব্যাচের শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

নৌ প্রধান বলেন, বর্তমান সরকারের অসামান্য প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ একটি আধুনিক ও ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে সুপরিচিত। বর্তমানে বাংলাদেশের উত্তরোত্তর উন্নয়নে ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নকে মাথায় রেখে নৌবাহিনীকে যুগোপযোগী এবং টেকনোলজি সম্পন্ন স্মার্ট নৌবাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে যা দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সমুদ্রভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

একটি সমৃদ্ধশালী নৌবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নৌবহরে বিভিন্ন শ্রেণীর জাহাজ, স্পেশাল ফোর্স, হেলিকপ্টার, এমপিএ এবং সাবমেরিন যুক্ত হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে একটি স্মার্ট নৌবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন অত্যাধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও আধুনিক প্রযুক্তি নৌবাহিনীতে প্রতিনিয়ত সংযোজিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আজকের নবীন কর্মকর্তারা নেভাল একাডেমি থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে যোগ্য কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে।

এসময় তিনি পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেয়ায় নবীন কর্মকর্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। নৌপ্রধান কঠোর প্রশিক্ষণ প্রদানে যে সকল কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক ও নৌসদস্যগণ অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতিও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সেইসাথে নৌপ্রধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নবীন কর্মকর্তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করার নির্দেশনা প্রদান করেন।

এর আগে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০২১এ ব্যাচের ৫৩ জন মিডশিপম্যান এবং ২০২৩বি ব্যাচের ১০ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ৬৩ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। এদের মধ্যে ৮ জন মহিলা মিডশিপম্যান এবং ২ জন মহিলা ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার রয়েছেন।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান বিভিন্ন বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারীদের হাতে পদক তুলে দেন। সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের মধ্যে মিডশিপম্যান ২০২১এ ব্যাচের মিডশিপম্যান মো. ফারহান আলী, (এক্স), বিএন সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী সেরা চৌকস মিডশিপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ অর্জন করেন।

এছাড়া মিডশিপম্যান ইফতেখার আজম, (ই), বিএন প্রশিক্ষণে ২য় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণপদক’ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২৩বি ব্যাচের অ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট আসিফ মোহাম্মদ সামী, (শিক্ষা), বিএন শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। পরে সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাগণ আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা এবং সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের অভিভাবকেরা উপস্থিত ছিলেন।

;

কোটি টাকার সার আত্মসাতের অভিযোগ: সাবেক এমপিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

অভিযুক্ত নরসিংদী-২ আসনের সাবেক এমপি কামরুল আশরাফ খান

৫৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৯ হাজার ৬৪ টাকার সরকারি সার সরবরাহ না করে আত্মসাতের অভিযোগে নরসিংদী-২ আসনের সাবেক এমপি কামরুল আশরাফ খানসহ (পোটন) পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (২৬ নভেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপপরিচালক মোঃ রফিকুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে ওই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

আসামিরা হলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্সের মালিক ও সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান (পোটন), ওই প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক মোঃ শাহাদত হোসেন (নিপু) ও মোঃ নাজমুল আলম (বাদল), পোটন ট্রেডার্সের উত্তরবঙ্গ প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন এবং প্রতিনিধি (খুলনা ও নওয়াপাড়া) মোঃ আতাউর রহমান।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বিদেশ হতে ইউরিয়া সার সরবরাহের জন্য আমদানি করলেও চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে চুক্তিকৃত বাফার গুদামে না দিয়ে ৫৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৯ হাজার ৬৪ টাকার ৭১ হাজার ৮০১ টন ৩১ কেজি সার আত্মসাৎ করেছেন।

এতে আরও বলা হয়, কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স ৫০ দিনের মধ্যে সার গুদামে পৌঁছে দেওয়া কথা ছিল। সেটা না করে সার ট্রানজিটে রয়েছে বলে বিসিআইসিকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। 

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জিটুজি চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সৌদি আরব, দুবাই ও কাতার থেকে আমদানি করা ইউরিয়া সার পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের সঙ্গে স্থানীয় প্রতিনিধি মেসার্স পোটন ট্রেডার্স এবং প্রিন্সিপাল ড্রাই বাঙ্ক শিপিং (প্রা.) লিমিটেডের মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৫.৫৩০ টন ইউরিয়া সার বিভিন্ন গুদামে সরবরাহ দেওয়ার জন্য মোট ১৩টি স্থানীয় পরিবহন চুক্তি সই হয়। যার মধ্যে ৩৭টি চুক্তির অধীনে আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৭৭.৫৬৬ টন ইউরিয়া সার বুঝে নিয়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৬.২৫৮ টন ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হলেও ৭১ হাজার ৮০১ টাকা ৩১ কেজি ইউরিয়া সার সরবরাহ না করে আত্মসাৎ করেন।

দুদকের অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, ট্রানজিটে থাকা অসরবরাহকৃত ইউরিয়া সার দ্রুত সরবরাহ দেওয়ার জন্য মেসার্স পোটন ট্রেডার্সকে ধারাবাহিকভাবে পত্র এবং তাগিদ পত্রসহ মোট ৪৩টি পত্র দেওয়া হয়েছিল। বিসিআইসি গঠন করা তদন্ত কমিটিতেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

;

মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা, নিখোঁজের চারদিন পর স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

তৌহিদুল ইসলাম

রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকা থেকে নিখোঁজের চারদিন পর তৌহিদুল ইসলাম (১৯) নামের এক স্কুল ছাত্রের ক্ষত বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহতের পরিবারের দাবি অপহরণ করে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এই টাকা না পেয়ে খুন করা হয়েছে তাকে।

রোববার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকার এক কাশবন থেকে তৌহিদুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে জুয়েল রানাকে (২৭) দিনাজপুর জেলার কাহারোল থানার গাসারিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ভাটারা থানা পুলিশ।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন তৌহিদুল।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বাড্ডা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) রাজন কুমার সাহা বলেন, গতকাল শনিবার (২৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৪টার দিকে দিনাজপুর জেলার কাহারোল থানার গাসারিয়া (ছাপড়া পাড়া) এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জুয়েল রানাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার হওয়া জুয়েল রানা জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল পুলিশকে জানিয়েছে, গত ২৩ নভেম্বর রাত অনুমান সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ভিকটিম তৌহিদুলকে টাকা আদায়ের জন্য কৌশলে ডেকে আনে জুয়েল। পাওনা ১০ লাখ টাকা ফেরত পেতে তৌহিদুলকে চাপ দিলে জুয়েলের উপর ছুড়ি নিয়ে হামলা চালায় সে। পরে সেই ছুরি কেড়ে নিয়ে তৌহিদুলকে আঘাত করলে মৃত্যু হয় তার। পরে তার মরদেহ ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পি ব্লকের কাশবনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। জুয়েল রানা একটি প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন বলে জানান এসি রাজন।

ডিএমপির ভাটারা থানায় তৌহিদুলের বাবা নবী হোসেনের করা মামলা সূত্রে জানা গেছে, তৌহিদুল ডুমনি আমিরজান স্কুল এন্ড কলেজে নবম শ্রেনীতে পড়েন। ২৩ নভেম্বর রাত ৯ টার দিকে তৌহিদুল বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে যান। দীর্ঘক্ষণ বাসায় ফিরে না আসায় তার মোবাইল ফোনে কল করলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তৌহিদুলের মোবাইল ফোন থেকে তার মাকে ফোন করে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি জানান তৌহিদুল তাদের কাছে আছে। তৌহিদকে পেতে হলে ২ ঘণ্টার মধ্যে ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে এবং তাদেরকে দাবিকৃত টাকা না দিলে তৌহিদুলকে মেরে ফেলার হুমকিসহ বিভিন্ন প্রকারের হুমকি দেওয়া হয়। পরে ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে পরিবার।

তদন্তকারী এ অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কাজ করা জুয়েল ১০ লাখ টাকা নিহত তৌহিদকে দেওয়ার পক্ষে কোনো তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারে নি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

;

জিপিএ-৫ কমে অর্ধেক, কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জিপিএ-৫ কমে অর্ধেক, কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা

এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৯২ হাজার ৩৬৫ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ২০২২ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন।

গতবারের তুলনায় এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ কমেছে। এ বছর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৮৩ হাজার ৯১৭ জন। পাসের হারও এবার কিছুটা কমেছে। গতবার পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এবার এইচএসসি ও সমমানে সব বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর সেগুনবাগিঁচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ফলাফল নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন- করোনার পর থেকে আমাদের পরীক্ষা শর্ট সিলোবাসে হয়েছে। অটোপাসও দেয়া হয়েছিলো। তাই জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেশি ছিলো। আমাদের এবারের ফলাফলের সাথে তুলনা করতে হবে করোনার আগের বছরের সাথে। তাহলে সামঞ্জস্য পাওয়া যাবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ ড. জাকারিয়া মিয়া বার্তা২৪-কে বলেন, রেজাল্ট জিপিএ-এর এমন ধ্বস আমাদের জন্য এলার্মিং। আগে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পাঠদান করাতো এখন সেখানে অনেক ঢিলেঢালা ভাব চলে এসছে। আবার গত কয়েক বছর ধরে শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও হেলামি চলে এসেছে। তারা এবারও শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষার জন্য, পরীক্ষা পেছানোর জন্য আন্দোলন করেছে। ঠিকভাবে পড়াশোনা করলে এই সমস্যা হতো না। সর্বোপরি বিষয়গুলোকে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নিয়মিত তদারকি করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মজিবুর রহমান বার্তা২৪-কে বলেন, করোনাকালিন সময়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে গ্যাপটা হয়েছে, সেটি পূরণ হয়নি। যার কারণে চূড়ান্ত ফলাফলে এসে তারা খারাপ করেছে। আমাদের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছিলো লার্নিং গ্যাপগুলো পূরণের জন্য ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কিন্তু সে অনুযায়ী কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায়নি। আবার একেক বছর শিক্ষার্থীদের একেকরকম মনোভাব থাকে আর্থ-সামাজিক অবস্থা, সাংস্কৃতিক অবস্থার কারণে।

তিনি আরও বলেন, জিপিএ-৫ অনেক সময় নির্ভর করে মেজাম্যান্টের উপর। প্রশ্নের প্যাটার্ন একেক বছর একেক রকম হয়ে থাকে যার উপর ফলাফল নির্ভর করে। প্রশ্ন সহজ হলে রেজাল্ট ভালো হয় আবার প্রশ্ন কঠিন হলে রেজাল্টে সেরকম প্রতিফলন দেখা যায়। আবার অনেক সময় রেজাল্টের ক্ষেত্রে শিক্ষাবোর্ডের একরকম নির্দেশনা থাকে, সেটাও রেজাল্টের উপর নির্ভর করে। এটা নিয়ে আতঙ্কিত বা অতি আশঙ্কার কিছু নেই।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *