আন্তর্জাতিক

গাজাবাসীর জন্য আমেরিকান মুসলিম নারীদের দোয়া

ডেস্ক রিপোর্ট: দখলদার ইসরায়েলের হামলায় জর্জরিত ফিলিস্তিনের পক্ষে সংহতি জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেটন আইসল্যান্ডে মুসলিম নারীদের উদ্যোগে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডংগান হিলস সেন্টারে অনুষ্ঠিত মুসলিম আমেরিকান সোসাইটি আয়োজিত ‘প্যালেস্টাইন স্পিকস’ শীর্ষক সভায় বিভিন্ন রাজ্যের ৮০ জন নারী ও তরুণী অংশ নেন। এতে ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান উইদিন আওয়ার লাইফটাইম (ডাব্লিউওএল) ইউনাইটেড ফর প্যালেস্টাইনের সহপ্রতিষ্ঠাতা নারদিন কিসওয়ানি।

তিনি বলেন, ‘একজন ফিলিস্তিনি নারী হিসেবে মানুষ এবং যেকোনো স্থানের নিপীড়িত মানুষের স্বাধীনতার পক্ষে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব।

আমি নারীদের সহযোগিতা করতে চাই, যেন তারা গাজায় চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলেন এবং এর বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অবস্থান নেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের আয়োজনগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এসবের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কীভাবে আলোচনা করব এবং অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলব। একজন মুসলিম হিসেবে যথাসাধ্য অবিচারের বিরুদ্ধে কথা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের নবীজি (সা.) বলেছেন, তুমি অন্যায় দেখলে তা হাত দিয়ে পরিবর্তন করো। এর অর্থ তা প্রতিরোধে কোনো উদ্যোগ নাও। তা না পারলে তুমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলো। আর আজকের আয়োজনে আমরা জানব, কীভাবে নিরাপদে প্রতিবাদ করা যায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিরাপদে কথা বলা যায়।

একজন মুসলিম নারী হিসেবে আমাদের সমাজে প্রচলিত ফিলিস্তিন-বিরোধী বর্ণবাদ ও ঘৃণামূলক অপরাধেল বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।’

নিউ ইয়র্ক ল স্কুলের শিক্ষার্থী ও প্যালেস্টাইন স্পিকস ইভেন্টের সহ-আয়োজক সানদারা আবদুল্লাহ বলেন, ‘এটা কোনো রাজনৈতিক যুদ্ধ নয়; এটা মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোর বিষয়। আপনি এক মিনিট সময় নিয়ে ফিলিস্তিনে কী ঘটছে তা পড়লে এর ভয়াবহতা বুঝতে পারবেন। মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা মানুষদের গণনাও করা যাচ্ছে না।

এমনকি হাসপাতালে বোমা ফেলে শিশুদের মারা হচ্ছে। চলমান যুদ্ধের কারণে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর মধ্যে শোক, হতাশা ও অসহায়ত্ব বিরাজ করছে।’

মুসলিম আমেরিকান সোসাইটির অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর আবদুল্লাহ আকল বলেন, ‘মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আপনার চোখ দুটি খোলা রাখাই যথেষ্ট। আমাদের সবার মধ্যে এখন হতাশাবোধ দেখা দিয়েছে। একজন আমেরিকান হিসেবে বসবাস করা এখন দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। কারণ গাজায় থাকা আপনার বাস্তুচ্যুত পরিবারের জন্য অর্থ পাঠানো খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। তখন জিজ্ঞাসার সম্মুখীন হতে হবে যে আপনি সন্ত্রাসবাদে সহযোগিতা করছেন কেন? এমনকি এসব বিষয়ে কথা বললে আপনাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।’

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী হামাস ও দখলদার ইসরায়েলের মধ্যে নজিরবিহীন সংঘর্ষ চলছে। এতে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ মারা গেছে। এর মধ্যে দুই হাজারের বেশি শিশু রয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এখন পর্যন্ত দেড় হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। তা ছাড়া গাজা উপত্যকায় সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৩১টি মসজিদ পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *