রাঙামাটির অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করলো প্রশাসন

ডেস্ক রিপোর্ট: ফেনী পৌরসভার ১৬ নাম্বার ওয়ার্ডের পুরাতন পুলিশ কোয়ার্টার এলাকায় যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১ জন কর্মী গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়েছে।

বুধবার (২৯ নভেম্বর)  রাত ৮টার দিকে শহরের শাহীন একাডেমি সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শহীদ উল্ল্যাহ কায়সার সড়কের এসি মার্কেটের সামনে এক দল কিশোরকে অবস্থান নিতে দেখা যায়।

জানা গেছে, ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি জ্যাকি ও সম্পাদক শুভ’র অনুসারীদের সাথে সদ্য জামিনে মুক্ত যুবলীগ নেতা সাব্বিরের অনুসারীদের সাথে এ সংঘর্ষ হয়। এতে মো: মানিক নামে জ্যাকি-শুভ’র এক কর্মী গুলিবিদ্ধ ও সাব্বিরের অনুসারীদের ১০ জন আহত হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ মো: মানিককে (১৬)  আহত অবস্থায় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর। ফেনীতে সে মায়ের সাথে ভাড়া বাসায় থাকে। সে রড-সিমেন্ট দোকানে লেবারের  কাজ করে বলে জানা যায়।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়,  কিছুদিন পূর্বে শহীদ শহীদুল্লাহ্ কায়সার সড়কের ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁয় হামলার অন্যতম  আসামী যুবলীগ নেতা সাব্বির জেল থেকে জামিনে বের হয়ে আসায় পুলিশ কোয়ার্টার এলাকায় তার অনুসারীরা শোডাউন করার সময় শাহীন একাডেমি এমরান মিয়ার কলোনী সংলগ্ন স্থানে  জ্যাকি-শুভ’র অনুসারীদের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়।  দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১ জন গুলিবিদ্ধ ও ১০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, এলাকার বিভিন্ন কিশোর গ্যাং এর গ্রুপ রয়েছে। এর  জেরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ফেনী শহরের পাঠানবাড়ি রোডের মাথায় ১৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সফিউল্লাহ শুভর ধানসিঁড়ি রেস্তোরায় হামলা করে যুবলীগ নেতা পিটু বাহিনীর সদস্যরা।

এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন শুভ ও তার মামা ওবায়দুল হক। পরে পিটু বাহিনীর প্রধান সাইফুল ইসলাম পিটু ও তার প্রধানসহযোগী যুবলীগ নেতা সাব্বিরসহ ৩১ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়।

ওই মামলায় পিটু বাহিনীর প্রধান সাইফুল ইসলাম পিটু ও যুবলীগ নেতা সাব্বিরসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সম্প্রতি সাব্বির ওই মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে এলে শুভ ও সাব্বির গ্রুপের মাঝে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পরপরই ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আহত মো: মানিক বার্তা ২৪ ডট কমকে জানায়, বিএনপি জামায়াতের অবরোধ সহিংসতা ঠেকাতে ওয়ার্ড যুবলীগের বড়ভাই জ্যাকি ও শুভর সাথে এসি মার্কেটের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলাম। হঠাৎ খবর আসে সাব্বির ভাই শুভ ভাই’র অনুসারীদের মারধর করছে। জ্যাকি ও শুভ ভাই সহ আমরা ১০ থেকে ১২ জন সেখানে পৌঁছানো মাত্রই সাব্বির ভাই আমাদের উদ্দেশ্য করে গুলি ছুঁড়ে। গুলি এসে আমার ডান হাতে লাগে। এরপর কি হয়েছে আমি কিছুই বলতে পারবো না।

মানিকের মা নুর নাহার বলেন, আমার ছেলেকে যারা গুলি করেছে তাদের বিচার দাবি করছি। আমরা গরীব মানুষ রাজনীতি বুঝিনা৷ আমার ছেলেকে যারা  এ পথে নিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে তাদেরও বিচার দাবি করছি।

এ ঘটনায় যুবলীগ নেতা সফিউল্লাহ শুভ বলেন, ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁয় আমার ওপর হামলার অন্যতম আসামী সাব্বির জামিনে মুক্ত হয়ে এসেই আমার ছোট ভাইদের ওপর সশস্ত্র হামলা করেছে। আমার এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

যুবলীগ নেতা সাব্বিরের স্ত্রী তাৎক্ষণিক সাংবাদিকদের জানান, আমার স্বামী কারাগার থেকে মুক্তি লাভের পর সে বাসায় থাকেন না। হামলার ভয়ে সে আত্মগোপনে রয়েছে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সফিউল্লাহ শুভ ও তার বাহিনী আমার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ফেনীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আসিফ ইকবাল জানান,মানিক নামের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাতে হাসপাতালে আসে। তার ডান হাতে কনুইয়ের উপর গুলি এক দিক দিয়ে ঢুকে অপর দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি দেয়া হয়েছে।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শাহীন একাডেমি রোডে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির সাথে কথা বলেছি আমরা। যেহেতু সে অসুস্থ তাই পরিপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে৷

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।