সারাদেশ

সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সম্পাদকসহ আটক ৪

ডেস্ক রিপোর্ট: ‘কোনো স্বতন্ত্র মতন্ত্ব্য চিনি না, মাইরের ওপর ঔষধ নাই। ছাত্রলীগের কোনো পোলাপান স্বতন্ত্ররে মানতো না। স্বতন্ত্ররে কেমনে পিডাতে হয় তা জানা আছে। হেরে আমরা এমনেই পিডামু। সদরের কোন এলাকায় তাদেরকে জায়গা দেয়া যাবে না। তারা নৌকার বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী, তারা দেশ বিরোধী।’

নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমনের দেয়া এমন বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে আগামী সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নরসিংদী সদর-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু (বীরপ্রতিক) এঁর নৌকা প্রতিককে বিজয়ের লক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্যকালে এমন মন্তব্য করেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন।

নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে শহরের বাসাইল এলাকার নরসিংদী ক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংষদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু (বীরপ্রতিক), জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনির হোসেন ভুইয়া, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন ভুইয়া, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালিব পাঠান, আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম ভুইয়া, মোন্তাজ উদ্দিন ভুইয়া, এস.এম কাইয়ুমসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্র নির্বাচন করার অনুমতি দেয়ার পরও ছাত্রলীগ সভাপতির এমন বক্তব্যে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়েআলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি সাব্বির আহমেদ শিবলী জানান, এমন বক্তব্যে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিব্রত। এমন বক্তব্যের নিন্দা জানান সংগঠনের অন্যান্য নেতারা। বিষয়টি সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের অবহিত করা হয়েছে। কেন্দ্রিয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক ছাত্রলীগ কাজ করবে।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন জানায়, যারা নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবে, আমি মনে করি তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী। আমি তাদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়েছি, আমার জেলা ছাত্রলীগ তাদের বাধাগ্রস্ত করবে। নৌকাকে পাস করানোর জন্য যা যা করার দরকার তাই করবো।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, এমন বক্তব্যের সময় আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম না।

ছাত্রলীগ নেতার এমন বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে অনেকে অনেক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা লিডাররা গ্রহণযোগ্য বক্তব্য দিয়েছি, এখন পোলাপান মানুষ কোথায় কীভাবে বক্তব্য দিচ্ছে, সেটা উল্লেখ করে পত্রপত্রিকায় দেয়া ঠিক না বলে মনে করেন। এমন বক্তব্য সমর্থন করি না। নৌকার জয় ঘটাবো সকলকে সোথে নিয়ে। সকলের প্রতি আহবান সকলে যেন নৌকার মিছিলে আসে। নৌকাকে আক্রান্ত করে ডামি প্রার্থী বিজয় লাভ করুক, প্রধানমন্ত্রীও চান না।

এ বিষয়ে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. বদিউল আলম জানান, নির্বাচনী আচরণ পরের বিষয়, স্বাভাবিকভাবে কেউ কাউকে পেটানোর হুমকি দিলেই সেটা ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। যে প্রার্থীকে হুমকি দিয়েছেন, সে যদি পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদি ভুক্তভোগী প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ কোনো প্রার্থীকে হুমকি দিলে সেটা নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্গিত হবে। তবে, আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি।

উল্লেখ্য, নরসিংদী সদর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ আলী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাবেক পৌর মেয়র কামরুজ্জামান প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *