খেলার খবর

মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির পর ১৪৯ রানে হারল বাংলাদেশ

ডেস্ক রিপোর্ট: হার, হার, হার এবং হার। এক লাইনে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শেষ চার ম্যাচের অর্জন। হারের বৃত্তেই ঘুরছে বাংলাদেশ। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে বিশাল ব্যবধানের এই হারে সেমির স্বপ্ন প্রায় অসম্ভব করে ফেললেন সাকিবরা। দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ৩৮২ রানের জবাবে ২৩৩ রানেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। 

বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ধীরগতির শুরুর পর কিছুটা রানে ফিরছিলেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। তবে বিপত্তি আসে সপ্তম ওভারে। শুরুর দুই বলেই দুই ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান পেসার মার্কো ইয়ানসেন। দলীয় ৩০ রানের মাথায় লেগ সাইডে ইয়ানসেনের এক বাউন্সারে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পিছে ধরা পড়েন তানজিদ (১২)। আম্পায়ারের ইশারায় সঙ্গে সঙ্গেই পিচ ছাড়লেন এই ব্যাটার। লিটন দাসের দিকে তার ইশারা, বল লেগেছে ব্যাট বা গ্লাভসে, দরকার নেই রিভিউয়ের।

এরপর নাজমুল হাসান যেন এলেন, আর গেলেন। আগের উইকেটেরই প্রতিচ্ছবি, তাও আবার পরের বলেই। রান খাতা না খুলেই প্যাভিলিয়নে পাড়ি জমালেন শান্ত। পরের ওভারেই একই রাস্তা মাপলেন সাকিব আল হাসানও। আবারও উইকেটের পিছে ধরা ক্যাচ নিলেন হেনরিখ ক্লাসেন। লিজাড উইলিয়ামসের বলে কেবল ১ রানের ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম উইকেট পেলেন লিজাড।

সেখান থেকে ম্যাচে ফিরতে হলে দরকার এক বড় জুটি। তবে তা আর হলো কোথায়! যেন চাপে আরও এক স্তর পিষ্ট হল। দলীয় ৪২ রানের মাথায় আরেক পেসার কুটসিয়ার বলে ফেরেন মুশফিক (৮)। ১৫তম ওভারের শেষ বলে ফিরলেন আরেক উইকেটরক্ষক ব্যাটার লিটনও (২২)। এরপর মিরাজকে নিয়ে ধাক্কা সামলে এগোতে থাকেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যদিও জয়ের পথ তখনও অনেকটাই দূরে। সেই পথে আরও এক ধাক্কা ২২তম ওভারের শেষ বলে। দলীয় ৮১ রানের মাথায় কেশব মহারাজের বলে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ (১১)।

টপ-অর্ডার নয়, টপ-মিডল অর্ডার নয় এমনি মিডল অর্ডারও নয় দলীয় ব্যাটিং ব্যর্থতা দেখল বাংলাদেশ। তবে ব্যতিক্রম কেবলই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। জয়ের পথ তখনও অনেক দূরে। সেখান থেকে যেন একাই লড়লেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এ যেন সম্মান বাঁচানোর লড়াই। বয়সটা বেশি হলেও ব্যাট হাতে নিজেকে আরেকবার প্রমাণ করার লড়াই। বল হাতে এদিন বাংলাদেশের অর্জন শুন্যের কোটায়। শুরুতেই ২ উইকেট নেয়ার পর পুরো ম্যাচে আর চালকের অবস্থানে যেতে পারেননি বাংলাদেশি বোলাররা। ব্যাটাররা ছিলেন পুরোই নিষ্প্রভ। সেখানে কেবলই জ্বলে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ১০৪ বলে পেলেন সেঞ্চুরির দেখা। ১১ চার ও ৪ ছক্কার মারে ১১১ বলে ১১১ রানে শেষ হয় তার অনবদ্য এই ইনিংস।

২৩৩ রানের মাথায় সাকিবরা হারায় তাদের শেষ উইকেট। জেরাল্ড কুটসিয়া নেন তিনটি উইকেট, ইয়ানসেন, লিজাড ও রাবাদা নেন দুটি করে।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে শুরুটা বেশ ভালোই করেছিল সাকিবরা। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা প্রোটিয়াদের শুরুতেই চাপে ফেলে তার দল। দলীয় ৩৩ রানের মাথায় ওপেনার রিজা হেন্ডরিক্সকে (১২) বোল্ড করে ফেরান পেসার শরিফুল ইসলাম। পরের ওভারেই রাসসি ফন ডার ডুসেনকে (১) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ।

সময় গড়ালে শুরুর নিষ্প্রভ প্রোটিয়ারা ক্রমেই হয়ে উঠল ভয়ংকর। দলীয় ১৬৭ রানের মাথায় সাকিব আল হাসানের বলে মার্করাম (৬০) ফিরলে ভাঙে তৃতীয় উইকেটে ১২১ রানের দুর্দান্ত এক জুটি।

তবে থামানো যায়নি ডি কককে। ১০১ বলে তুলে নেন আসরের নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ১৭৪ রানে থামেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। তার দুর্দান্ত এই ইনিংসে ছিল ১৫টি চার ও ৭টি ছক্কার মার। ব্যাট হাতে মাঠে নামার সময় ছিলেন আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার ৮ নম্বরে। সাজঘরের ফেরার সময় বিরাট কোহলিকে ছাড়িয়ে ৪০৭ রান নিয়ে আপাতত শীর্ষে আছেন ডি কক।

ডি কককে ফেরালেও কমেনি রানের গতি। নিজেদের আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হেনরিখ ক্লাসেন এদিনও ব্যাট হাতে ছিলেন আগ্রাসী। শেষে দিকে দারুণভাবে এগোলেও সেঞ্চুরিতে আক্ষেপ থাকল ১০ রানের। ৪৯ বলে ২ চার ও ৮ ছক্কায় ৯০ রান করে হাসান মাহমুদের বলে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তাতেই গড়ে যায় ৩৮২ রানের বিশাল লক্ষ্য। 

হাসান মাহমুদ নেন দুটি উইকেট। সাকিব, মিরাজ ও শরিফুল নেন একটি করে উইকেট।

 

 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *