বিনোদন

‘আ.লীগে দুর্ভিক্ষ হয়নি যে বিএনপি’র বিভক্তির সুযোগ নিতে হবে’

ডেস্ক রিপোর্টঃ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সমর্থনের দুর্ভিক্ষ তো দেখছি না। আওয়ামী লীগ এতো বিপদে পড়েছে যে বিএনপির বিভক্তির সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগকে শক্তি প্রদর্শন করতে হবে, সামর্থ্য প্রদর্শন করতে হবে আমি তো সেটা মনে করি না।’ 

শনিবার (২ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টায় ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এটা তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটাও গণতন্ত্র। আমার এ দল ভালো লাগেনা, আমি আর এক দলে যাব সেটা তো আমরা হস্তক্ষেপ করিনি। তিনি স্বেচ্ছায় এসেছেন এটা তিনি নিজেই তার বক্তব্যে বলেছেন।’ 

ব্ল্যাকমেইল করে বিএনপি নেতাদের আওয়ামী লীগে যোগদান করানো হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাব কাদের বলেন, ‘ব্ল্যাকমেইল করে কাকে নেওয়া হচ্ছে? তাহলে বিএনপির নেতৃত্ব কি এতই দেউলিয়া যে ব্ল্যাকমেইল করলেই চলে আসবে। এতদিন রাজনীতি করল, তাদের রাজনৈতিক পরীক্ষায় তারা এতই ব্যর্থ তারা কারো ব্ল্যাকমেলিংয়ে প্রলুব্ধ হয়ে অন্য দলে যাবে।’ 

কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে অনেক বাধা বিপত্তি আন্দোলনের নামে আগুন সন্ত্রাস, অবরোধ, হরতাল এসব কর্মসূচি দিয়েও বাংলাদেশের মানুষকে নির্বাচন থেকে বিমুখ করা সম্ভব হয়নি।’ 

বাংলাদেশের জনগণ এখন পুরোপুরি নির্বাচনমুখী জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন এক কথায় বলা যায় বিএনপির নেতৃত্বে কিছু কিছু দল নির্বাচন বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকলেও বাংলাদেশের জনগণ এখন পুরোপুরি নির্বাচনমুখী হয়ে পড়েছে। জনগণ এখন নির্বাচনমুখী এই কথা নির্দ্বিধায় বলা চলে। তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছিল, ঠেকাতে চেয়েছিল এবং এখনো সে অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিজয়ের মাসে নবশক্তিতে বলিয়ান জনগণ আরেকটা বিজয়ের সুবর্ণ দুয়ারে পৌঁছাতে চায় এবং ভোট দেওয়ার জন্য জনগণ উন্মুখ হয়ে আছে। সারা বাংলাদেশ নির্বাচনী পরিবেশ অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। শত বাধা নিষেধের মধ্যে, আন্দোলনের হুমকি, সন্ত্রাস, অগ্নি সন্ত্রাস এ পরিবেশের মধ্যেও মানুষ নির্বাচন বিমুখ হয়নি। 

বিএনপির এক দফা গভীর গর্তে পড়ে গেছে। তাদের আন্দোলন ভুলের চোরাবালিতে আটকে গেছে। যত চেষ্টাই করুক আজকে আবারও তারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে যে নেতাকর্মীদের মাঠে নামিয়ে ছিল তারাও এখন হতাশ। তাদের নিজেদের দলের লোকেরাই এখন বিএনপির উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তারা বিএনপি নেতৃত্বের ডাকে ভবিষ্যতে কখনো মাঠে নামবে না, আন্দোলন করবে না এটা এখন বাস্তব সত্য’, বলেও জানান তিনি।

কোন দলকে ভাগ করা আওয়ামী লীগের নীতি নয় জানিয়ে কাদের বলেন, ‘আমরা জানি গণমুখী রাজনীতি না করে ষড়যন্ত্রের চোরাগলিতে পা রাখায় বিএনপির আজকে এই দুরবস্থা। তাদের দলের বিভক্তি আমরা করতে যাইনি। কোন দলকে ভাগ করা এটা আমাদের নীতি নয়। তারা নিজেরাই নিজেদের স্বার্থে সর্বনাশা ভুল নীতিতে তাদের দলে বিভাদ সৃষ্টি করেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি এ কথা যারা উচু গলায় বলেন তারা সত্য বলছেন না। কারণ আজকে তৃণমূল বিএনপিতে এতো প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। এরা সকলেই বিএনপি’র লোক। বেশিরভাগই বিএনপি থেকে আসা । বিভক্তির বিষয়টা না আসলেও আজকে বিএনপির নেতৃত্বের উপর হতাশ হয়ে তারা নির্বাচন করছেন। বিএনপির সাবেক নেতা, বর্তমান নেতাদেরও অনেকে নির্বাচন করছেন এবং নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে যা বোঝায় তাতে ২৯টি নির্বাচন দল এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। নির্বাচন থেকে দূরে আছে বিএনপিসহ ১৪/১৫ টি দল। কিন্তু বেশিরভাগ নিবন্ধিত দল আজকে নির্বাচনে এসেছে, তারা নির্বাচন করছে। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশে যারা ভোটার টার্ন আউট নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন ইতিমধ্যে আমরা যে দৃশ্যপট নির্বাচনে দেখতে পাচ্ছি তাতে কিন্তু রেকর্ড সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি আমরা দেখতে পাবো।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে যে উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেওয়ার জন্য মানুষের যে আগ্রহ সেটা থেকে বুঝা যায় ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত করে জনগণকে নির্বাচনের বিপক্ষে নেয়া যাবে না। তাদের ষড়যন্ত্রের কালো হাত দেশের জনগণ ভেঙে দিবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে।’ 

কাদের বলেন, এ কথা চিরদিনই শুনে আসছি। আওয়ামী লীগের সাথে ভারতকে জড়িয়ে যে প্রোপাগান্ডা এটা পাকিস্তানি স্বাধীনতার পর থেকেই শুরু হয়েছে। যে প্রোপাগান্ডা সময় সময় বাড়ে। আবার কখনো কখনো একটু স্থিমিত হয়ে যায়। নির্বাচনের মতো পরিবেশ যখন আসে তখনই ভারত বিরোধী প্রপাগান্ডা সবচেয়ে বেশি হয়। এটার জন্য আমরা একটুও বিচলিত নয়।’ 

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এখন প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সাব অরডিনেট অফিস নয়। এটি একটি আইনসিদ্ধ প্রতিষ্ঠান। পার্লামেন্টে আইন করে এই প্রতিষ্ঠানকে বর্তমান অবস্থায় আনা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন। এখন আর সরকারের কথায়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বা অন্য কোন নির্বাচন সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড এখন আর সরকারের কথায় চলবে না। সরকার এখন রুটিন ওয়ার্ক করবে। মেজর কোন পলিসি ডিসিশন এখন আর সরকারের হাতে নেই। নির্বাচনী ব্যবস্থাটা এখন সম্পূর্ণভাবে তাদের হাতে। যখন যে ব্যবস্থা প্রয়োজন সেটা এখন তারা নিতে পারে। সে ব্যবস্থা আমাদের বিরুদ্ধে গেলেও আমরা স্বাগত জানাই। তাদের যৌক্তিক যে কোন সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই।’ 

ক্লাইমেট মুভিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জলবায়ু বিষয়ে কর্মকাণ্ড নেতৃত্বের কণ্ঠস্বর হিসেবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ভুক্তভোগী মানুষের পক্ষে বিশ্বব্যাপী অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রীকে ক্লাইমেট মুভিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ডে ঘোষিত করেছে আইওএম ও জাতিসংঘ সমর্থিত গ্লোবাল ক্লাইমেট মুভিলিটি সংস্থা।

আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাদের সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আমরা অভিনন্দন জানাই। তিনি আমাদের গর্ব, এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা ও শক্তি। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের নতুন নতুন গৌরব ও উচ্চতা দেশের জন্য তিনি নিয়ে আসছেন। সেটা আমাদের মূল্যবান সম্পদ। শেখ হাসিনা ও বাঙালি জাতির এটা বিশাল সম্পদ। তাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। তাকে আমরা আবারও অভিনন্দন জানাই।’ 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *