বিনোদন

ঢাকার মডেলদের ন্যাচারাল ব্যাপারটা হারিয়ে যাচ্ছে

ডেস্ক রিপোর্টঃ কলকাতার প্রথমসারির মডেল দেবলীনা বিশ্বাস। অভিনয়েও রয়েছে তার ব্যস্ততা। সম্প্রতি ‘মিউজিক এন্ড ফ্যাশন ফিয়েস্তা’ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসেছিলেন ঢাকায়। ফটোশুটের ফাঁকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বার্তা২৪.কমকে

এবার বাংলাদেশে আসলেন কোন উদ্দেশ্য নিয়ে?

এ নিয়ে চারবার বাংলাদেশে আসলাম। এর আগে বিভিন্ন ফ্যাশন রিলেটেড কাজ করতে এসেছিলাম। প্রথমবার এসেছিলাম ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘ঢাকা ফ্যাশন উইক’-এ অংশ নিতে। তাও অনেক বছর আগে। এবারও এসেছি একটি ফ্যাশন এন্ড অ্যাওয়ার্ড শোতে অংশ নিতে। আমি র‌্যাম্পে শো স্টপার হিসেবে হাটার পাশাপাশি সেরা মডেল হিসেবে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। এই কাজের ফাঁকে নাজারা নামের বিখ্যাত একটি ব্র্যান্ডের ব্রাইডাল ফটোশুট করেছি।

বাংলাদেশের সিনেমা নাটক দেখা হয়?

অনেক বেশি দেখা না হলেও কিছু কিছু দেখা হয়।

দেবলীনা বিশ্বাস /   পোশাক : অরশি

বাংলাদেশের কোন কোন তারকাকে চেনেন?

পরীমিনকে সবাই চেনে! আর জয়া আহসান তো আমাদের ওখানেই বেশি কাজ করেন। বিদ্যা সিনহা মিমকেও চিনি। তিনিও আমাদের ওখানে ভালো ভালো কাজ করেছেন। আমি জয়া আহসান আর মিমের সঙ্গে একটি ফ্যাশন ব্র্যান্ডের ফটোশুট করেছি। এছাড়া সিনিয়র নায়িকা মৌসুমী, শাবনূরসহ অসংখ্য মেধাবী অভিনেত্রী রয়েছেন ঢাকায়। আমি হয়ত সবাইকে চিনে উঠতে পারিনি। নুসরাত ফারিয়া রয়েছেন, তার কাজও ভালো লাগে।

বাংলাদেশ থেকে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন কখনো?

হ্যাঁ। কয়েক বছর আগে ঢাকার নির্মাতা রুমানি রুনির কাছ থেকে একটি সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছিলাম। আমার আসার সব পরিকল্পনাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কলকাতায় কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় সেবার আর সিনেমাটি করা হয় নি।

বাংলাদেশে কাজের কোন পরিকল্পনা আছে কি?

অবশ্যই। কেন নয়? এ দেশে যতোবার এসেছি খুবই ভালোলাগা নিয়ে নিজের দেশে ফিরেছি। সবাই আন্তরিকতা নিয়ে আমার সঙ্গে মিশে যায়। সত্যি বলতে কলকাতাতে এটা খুব একটা পাই না! এখন মডেলিংয়ের চেয়ে এদেশে অভিনয় করতে বেশি আগ্রহী আমি।
২০১৪ থেকে মডেলিং করছি। দশটা বছর মডেলিংকেই প্রাধ্যান্য দিয়েছি। এরমধ্যে কলকাতার অনেকগুলো সিরিয়ালের প্রধান নায়িকা চরিত্রের জন্য প্রস্তাব পেয়েও করিনি। এখন অভিনয়ে বেশি সময় দিতে চাই। এখনই বলতে চাই না, শিগগিরই নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব। পাশাপাশি মডেলিং করব।

দেবলীনা বিশ্বাস /   পোশাক : নাজারা

এখন ওটিটির কাজগুলো জনপ্রিয় হচ্ছে। কলকাতার ওয়েব সিরিজে বেশ বোল্ড দৃশ্য দেখা যায়। এমন দৃশ্য করতে আপনার আপত্তি আছে কি?

এখন ওটিটিতে সত্যি খুব ভালো কাজ হচ্ছে। আমিও করতে চাই। আর বোল্ড সিনের ব্যাপারে বলতে গেলে, আমাদের ওখানে কেউ এসবকে আলাদাভাবে দেখে না। ইটস ভেরি নরমাল, ভেরি কমন আমাদের ইন্ডিয়াতে। এখানে কেমন আমি জানি না। তবে আমি কাজ করতে গেলে এ ধরনের সিন একটু এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করব।

পারিশ্রমিক, সামাজিক মর্যাদা, দর্শক গ্রহণযোগ্যতা- সব মিলিয়ে কলকাতার মডেলিং ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন?

দেখুন, মডেলিং একটি আলাদা জায়গা, অভিনয় আরেকটি জায়গা। আপনি কখনো আশা করবেন না যে, আপনি একজন মডেল হয়ে একজন অ্যাকট্রেসের সমান জনপ্রিয়তা পাবেন। ভারতে সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে প্রত্যেক বাড়ির টিভিতে একের পর সিরিয়াল চলে। ফলে একটা-দুটো সিরিয়াল করে আপনি যতো মানুষের কাছে পৌঁছাবেন, সারাজীবন মডেলিং করেও তা পারবেন না।
যেহেতু একজন মডেলকে অনেক মানুষ চিনতেই পারে না, সেখানে একজন অভিনেত্রীর সমাজে যতোটা গ্রহণযোগ্যতা সেটি একজন মডেল পাবেন না এটাই স্বাভাবিক। পারিশ্রমিকের বেলাতেও একই কথা। অভিনয়শিল্পীদের চেয়ে মডেলদের পারিশ্রমিকও কম। তবে মডেলদের যতোটা পাওয়া উচিত অতোটাই পান। মুম্বাইয়ের মডেলদের সঙ্গে কলকাতার মডেলদের পারিশ্রমিকের অংক তুলনা করাটাও বোকামি। কারণ সেটি অনেক বড় ইন্ডাস্ট্রি, অনেক কম্পিটিশিন।
তবে আমাদের ওখানে মডেলরা খুব সচেতন তাদের জীবনযাপন, কাজ সবকিছু নিয়ে। প্রতিনিয়ত অনেক স্মার্ট মেয়েরা আসছে কাজ করতে। আমি এখন তাদের বিচারক হিসেবে কাজ করছি।

আপনি বলছিলেন, কলকাতার চেয়ে বাংলাদেশের মডেলদের মধ্যে সার্জারি, বোটক্স, ফিলার করার প্রবণতা বেশি…

কথাটা সরাসরি বলতে গেলে কেমন শোনাবে জানি না। এটা শুনলে হয়ত বাংলাদেশের মডেলরা আমার ওপর রেগে যাবেন। কিন্তু সত্যিটা তো সত্যিই। আমি যখন থেকে এখানে কাজ করছি তখন থেকেই বিষয়টি খেয়াল করেছি। ঢাকার প্রত্যেকটা মডেল তার চেহারা নিয়ে অনেক বেশি সচেতন। এতে করে ন্যাচারাল ব্যাপারটা হারিয়ে যাচ্ছে। দে আর অল বিকামিং প্ল্যাস্টিক লাইক অ্যা বিট। যেটা আমাদের ওখানের মডেলদের মধ্যে খুব একটা নেই। তারা লিপ জব, নোজ জব, ফিলার- এগুলো কিছুই করে না। শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস আর শরীরচর্চার ওপর গুরুত্ব দেয়।

দেবলীনা বিশ্বাস /   পোশাক : অরশি

এখন ইন্ডাস্ট্রিতে চর্চিত বিষয় সুপার ড্যাডি, সুগার মামি। কলকাতাতেও এসব কতোখানি দেখেন?

দেখুন এই কালচারটা যেহেতু ওয়েস্টার্ন কান্ট্রি থেকে এসেছে ফলে তার প্রভাব সব জায়গাতেই কম বেশি আছে। আর ইন্ডিয়া যেহেতু বাংলাদেশ থেকে একটু হলেও প্রগ্রেসিভ, ফলে সেখানে একটু বেশি থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের ওখানে এই বিষয়টাকে আলাদা করে দেখা হয় না। সবাই ওখানে বন্ধুর মতো মেশে। বন্ধুর বয়স ছোট-বড় হতেই পারে। সবাই সবাইকে যার যার জায়গা থেকে সাহায্য করে। আমরা বিষয়টাকে এভাবে দেখি।

একজন নির্মাতা ও নায়কের নাম বলুন, যার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা…

অবশ্যই প্রথমে সৃজিত মুখার্জির নাম বলতে চাই। তার সিনেমায় কাজ করার ইচ্ছে। আর অনেক আগে থেকেই ইন্টারভিউতে বলে আসছি, নায়ক দেবের সঙ্গে কাজ করতে চাই।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *