সারাদেশ

গাজীপুরের ৫ আসনে ৪১ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, বাতিল ৩

ডেস্ক রিপোর্ট: চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শেষ করেছে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন কার্যালয়। দুদিন ধরে চলা এই কার্যক্রমে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ৩০ জন প্রার্থীর। তবে ‘পরীক্ষায়’ পাস করেছেন ১১৮ জন প্রার্থী।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ১০টির রিটার্নিং কর্মকর্তা। আর নগর ও নগর সংলগ্ন ছয়টি আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ছিল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিন। এইদিন জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া), চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া), চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ), চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া), চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়।

অন্যদিকে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর, পাহাড়তলী, ডবলমুরিং, খুলশী), চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এই ৮ আসনের মধ্যে ১২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী।

রোববার (৩ ডিসেম্বর) বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড), চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসন এবং জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই), চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি), চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ), চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) ও চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এর মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে ১১ জন এবং জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে ৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। অর্থাৎ দুইদিনে ১৪৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩০ জনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ২১ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী। বাকিরা বিভিন্ন দলের।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর বেশিরভাগই এক শতাংশ ভোটার তালিকায় ভোটারের নাম ও স্বাক্ষরে গরমিল থাকায় মনোনয়নপত্র বৈধ হয়নি। আর দলের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বাতিল করা হয়েছে কাগজপত্র জমা না দিতে পারার কারণে।

চট্টগ্রাম-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস, চট্টগ্রাম-২ আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম নওশের আলী, মোহাম্মদ শাহজাহান, রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৩ আসনে জাকের পার্টির নিজাম উদ্দিন নাসির, সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের আমিন রসুল, চট্টগ্রাম-৪ আসনে চার স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন মোহাম্মদ ইমরান, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, দিদারুল আলম, আকতার হোসেন, চট্টগ্রাম -৫ আসনে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, নাছির হায়দার করিম, চট্টগ্রাম ৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজম, চট্টগ্রাম-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আরশেদুল আলম বাচ্চু, আবদুছ সালাম ও বিজয় কুমার চৌধুরী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোহাম্মদ মহিবুর বুলবুল ও মনজুর হোসেন বাদলের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

সোমবার ৮ আসনের মধ্যে ছয়টি আসনে প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ছয় আসনের ১২ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

চট্টগ্রাম-১২ আসনে চার প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ শতাংশ ভোটারের গরমিলের অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াস মিয়া ও গোলাম কিবরিয়া চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী এম এ মতিনের বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকায় মনোনয়ন বাতিল হয়। এ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী এম ইয়াকুব আলীর মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়। এছাড়া চট্টগ্রাম ৭ ও চট্টগ্রাম-১৪ আসনেও দুই প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়।

চট্টগ্রাম-১০ আসনেও চারজনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এক শতাংশ ভোটারের নাম ও স্বাক্ষর জমা দিতে হয় মনোনয়নপত্রের সঙ্গে। এর মধ্যে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে ১০ ভোটার যাচাই করা হয়। সেখানে তিনজনকে শনাক্ত করা যায়নি বলে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ওসমান গনি ও ফয়সাল আমীন এবং বিএনএফের মঞ্জুরুল ইসলামের মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়। এই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।

চট্টগ্রাম-৯ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই বাছাই করা হয়। এ আসনেও একজনের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়।

চট্টগ্রাম-১৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেব ও ডা. আ ন ম মিনহাজুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তা। দুই জনেরই ১ শতাংশ ভোটারে তথ্যে গরমিল পাওয়া যায়। অন্যদিকে ঋণ খেলাপি হওয়ায় চট্টগ্রাম-১৬ আসনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি আশীষ কুমার শীল ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল হয়। চট্টগ্রাম-১১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেখা আলমের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে ওই ১ শতাংশ সমর্থকের তালিকায় গরমিল থাকায়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৬৩ লাখ ৯৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩২ লাখ ৭৯ হাজার ৬২ জন এবং নারী ভোটার ৩০ লাখ ২১ হাজার ৯০২ জন।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, আমার কার্যালয়ে ১০টি আসনে ৮৮ জন প্রার্থীর মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এর মধ্যে দুইদিনে ১৪ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। ৭৪ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। বাতিল হওয়া প্রার্থীদের বেশিরভাগই ১ শতাংশ সমর্থকের নামে গরমিল, ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য বাতিল হয়েছে। তবে বাতিল হওয়া প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে আপিল করার সুযোগ রয়েছে। ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই আপিল করতে পারবেন তারা।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *