আন্তর্জাতিক

 ক্রমেই বাড়ছে ইসরাইলি বিধিনিষেধ

ডেস্ক রিপোর্ট: গাজা ও পশ্চিম তীরে প্রতিনিয়তই হামলা ও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন সেখানকার ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা। তিন সপ্তাহ ধরে দফায় দফায় চলছে হামলা-তল্লাশি। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর হয়েছে। বন্ধ করে দিয়েছে দোকানপাট ও ব্যবসা-বাণিজ্য। মজুরি পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। ধ্বংস করে দিচ্ছে চাষিদের জমিজমা। সবকিছু মিলিয়ে চরম অর্থনৈতিক সংকটে দিন পার করছেন পশ্চিম তীরের বেসামরিক ফিলিস্তিনিরা।

ইসরাইলিদের ক্রমবর্ধমান বাধা-ধরা নিয়মে অনেকেই ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারছেন না। এমনকি অবস্থা এতটাই করুণ যে খাবার কেনারও সামর্থ্য নেই অনেকের। চোখেমুখে হতাশা নিয়ে বুরিন গ্রামের কাউন্সিলর প্রধান ইব্রাহিম ওমরান মিডল ইস্ট আইকে জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরেই তার গ্রাম উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ।

নাবলুস শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দক্ষিণের এ গ্রামের দোকানপাটগুলো প্রায় সবসময় বন্ধ থাকছে। গ্রাম থেকে শহরে এবং এমনকি আশপাশের গ্রামের মধ্যে ভ্রমণ করতেও ভয় পাচ্ছেন সবাই।

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামের সবখানেই এখন দারিদ্র্য। খাবার নেই, বেতন নেই। আমার পকেটে আছে মাত্র ১২ শেকেল! কাউন্সিল জনগণের কাছে বিদ্যুৎ বা পানির জন্য টাকা চাইতে পারছে না! কারণ জনগণ এখন অর্থ দিতে পারছে না।’

ওমরানের মতে, তার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হয় যখন ইসরাইল ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া বন্ধ করে দেয়। ফলে বুরিনের প্রায় ৫০০ নির্মাণ শ্রমিক তাদের চাকরি হারান। তাছাড়াও অধিকৃত অঞ্চলটিতে তীব্রহারে সহিংসতা বেড়ে গেছে। ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৩,০০০টিরও বেশি জলপাই গাছ ধ্বংস করেছে ইসরাইলের বসতি স্থাপনকারীরা। এমনকি সেখানকার অনেক বাসিন্দারাও এ ধরনের হামলা চালায়।

ওমরান বলেন, ‘বসতি স্থাপনকারীরা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সুসংগঠিত হয়ে আক্রমণ করে। ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য ছড়িয়ে দেয় গাছে, যেন মরে যায়। গাছ কেটে ফেলে, পুড়িয়ে দেয় বা স্প্রে করে। গ্রামের কিছু এলাকায় গাছ থেকে জলপাই সংগ্রহ করতে দিচ্ছে না। জলপাই পাড়তে গেলেই বসতি স্থাপনকারীরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করছে। অনেক সময় আমরা পুরো ফসল সংগ্রহ করার পরেই তারা এসে জলপাই নিয়ে যায়।’

দক্ষিণ-পশ্চিমে জাম্মাইন গ্রামের এক স্থানীয় জলপাই তেল কোম্পানির ব্যবস্থাপক বলেন, ইসরাইলি নিষেধাজ্ঞার কারণে তার ফারমে উৎপাদন ৪০ শতাংশ কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘গত মাসে আমার আয় শূন্য। এখন কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। এমনকি বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার মতো টাকাও নেই।’ জাতিসংঘের মতে, এ যুদ্ধ যদি তৃতীয় মাসে চলে যায়, তবে জাতিসংঘের প্রকল্প ১২ শতাংশ পতন হবে। ফলে ৬ লাখ মানুষ দারিদ্র্যে নিমজ্জিত হবে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *