সারাদেশ

‘মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরা মানবাধিকারের প্রেসক্রিপশন দেয়, এটিই দুর্ভাগ্য’

ডেস্ক রিপোর্ট: বগুড়ার সোনাতলায় আব্দুর রশিদ (৪৫) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ধাওয়া করে ধরে কুপিয়ে এক পা বিচ্ছিন্ন এবং অপর পা ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে প্রতিবেশী কয়েক যুবক। হামলাকারীরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছেন আব্দুর রশিদের ভায়রা আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেছুর রহমান।

গত ৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সোনাতলা উপজেলার জোরগাছা ইউনিয়নের গ্রাম করমজা গ্রামের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।

আব্দুর রশিদ জোড়গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য। তিনি গ্রাম করমজা গ্রামের মৃত ছালেক প্রামানিকের ছেলে। রশিদ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জোরগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান বলেন, আমার ভায়রা আব্দুর রশিদ ৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পায়ে হেঁটে তার কর্মস্থল সৈয়দ আহম্মেদ কলেজ স্টেশনে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে গ্রামের রাস্তায় একই এলাকার রঞ্জু মিয়া, মঞ্জু মিয়া, আজিজার, আলমগীর, বাবলু, দেলোয়ার পথ রোধ করে। রশিদ দৌড় দিলে তাকে ধাওয়া করে খালেকের দোকানের সামনে ধরে রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে দুই পা রামদা দিয়ে কোপায়। এতে রশিদের বাম পা হাঁটুর নিচ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং ডান পা ক্ষতবিক্ষত হয়। সেখান থেকে রশিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হামলার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রশিদের ভাতিজি জামাই জাহিদকে একই গ্রামের মিলন দুই বছর আগে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে দুবাই পাঠায়। সেখানে চুক্তি অনুযায়ী কাজ না পেয়ে জাহিদ ফিরে আসে। পরে গ্রামের সালিসে মিলন ৭০ হাজার টাকা জাহিদকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেয়। গ্রামের রঞ্জু,মঞ্জুকে ছাড়া সালিস করায় তারা মিলন ও রশিদের ওপর ক্ষুদ্ধ হয়। এনিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে মারামারিতে রঞ্জু টেঁটাবিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় রঞ্জুর ভাই মঞ্জু মিয়া রশিদের নামে থানায় মামলা করেন।

মোখলেছুর রহমানের অভিযোগ রঞ্জু তার চিকিৎসার জন্য তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে রশিদের কাছে সেই টাকা দাবি করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে আবারও বিরোধ শুরু হয়। সেই বিরোধের জের ধরেই রশিদের ওপর হামলা করে পা কেটে নেওয়া হয়।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের (শজিমেক) অধ্যক্ষ ও শজিমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান ডা. রেজাউল আলম জুয়েল জানান, আব্দুর রশিদ নামের যে রোগী ভর্তি আছেন এখন তার অবস্থা আগের তুলনায় উন্নত হয়েছে। তার যা ক্ষতি হওয়ার তা হাসপাতালে নেওয়ার আগেই হয়েছে। একটি পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, যা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়। অপর একটি পা বিচ্ছিন্ন না হলেও আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।

রশিদের স্ত্রী সুমি বেগম বলেন, এ ঘটনায় আমার ভাসুর ৬ জনের নামে সোনাতলা থানায় মামলা করেছে। পুলিশ বাবুল নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাতলা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘটনার পরপরই বাবুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যরা পলাতক রয়েছে। তিনি আরও বলেন আসামিরা সবাই শ্রমজীবী মানুষ। তারা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *