খেলার খবর

নির্বাচনের দিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় হওয়ার শঙ্কা

ডেস্ক রিপোর্ট: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে বিবদমান সশস্ত্র গ্রুপগুলো সক্রিয় হয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে এমন গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন’র (এপিবিএন) কাছে।

এদিকে নির্বাচন চলাকালীন রোহিঙ্গাদের যাতে কেউ ব্যবহার করতে না পারে সে লক্ষ্যে ক্যাম্পজুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেই সাথে একমাস আগে থেকেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান।

১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবাল সশস্ত্র গ্রুপগুলো সক্রিয় হয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে এমন তথ্য জানিয়ে মুঠোফোনে বার্তা২৪’কে বলেন, ‘নির্বাচনের দিন পুলিশ যেহেতু নির্বাচনী কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকবে, তাই ক্যাম্পে বিবদমান গ্রুপগুলোর মধ্যে একটা গ্রুপ বেশি সক্রিয় হবে, এমন কিছুর পরিকল্পনা করছে। সেটা আমরা নজরদারি করছি এবং তা আমরা শক্ত ভাবে দমন করবো।’

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু রোহিঙ্গারা অলস সময় পার করে, নির্বাচনে তাদের ব্যবহার করার শঙ্কা তো থাকেই। শুধু নির্বাচন নয়, বিভিন্ন অপরাধীরাও তাদের ব্যবহার করতে চায়। তাই নির্বাচন মৌসুমে রোহিঙ্গাদের ব্যস্ত রাখতে নেয়া হয়েছে বিশেষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার। জমকালো ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমে রোহিঙ্গা যুবকদের যুক্ত রাখা হবে, রাখা হবে ব্যস্ত।’

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে কেউ যাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সে ব্যবস্থার পাশাপাশি নির্বাচনের পূর্বে ক্যাম্পগুলোতে বিশেষ অভিযান চলছে। রোহিঙ্গারা যেন ক্যাম্প ছেড়ে বের হতে না পারে সেজন্য উখিয়া টেকনাফের ইউএনওদের (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

এছাড়াও যারা রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করার উদ্যোগ নেবে, তার যথাযথ প্রমাণ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান শাহীন ইমরান।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সময়ে রোহিঙ্গারা যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তাই মহাসড়কের তল্লাশি চৌকিগুলোতে কড়াকড়ির করতে বলা হয়েছে।’

শরণার্থী বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. রাহমান নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আশ্রিত জীবনের সুযোগ নিয়ে রোহিঙ্গাদের কম খরচে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে উখিয়া টেকনাফ অঞ্চলে। ঠিক তেমনি নির্বাচনে রোহিঙ্গাদের ব্যবহারের অভিযোগ অনেক পুরোনো। রোহিঙ্গারা ব্যবহৃত হয় ব্যাপারটা এরকম নয় বরং দৈনিক শ্রম কেনার মতো করে তাদের নির্বাচনে লাগানো হচ্ছে।’

ছবি: বার্তা২৪.কম

নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ত করা আইনি ভাবে অবৈধ, তাই যারা তাদের কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন ড. রাহমান নাসির উদ্দীন।

বাইরে থেকে নানান প্রলোভনের কথা স্বীকার করে রোহিঙ্গা নেতা ডা. জোবায়ের বলেন, ‘আমরা এদেশের মেহমান। তাই মেহমান হিসেবে এদেশের নিজস্ব কর্মসূচিতে রোহিঙ্গাদের যুক্ত হওয়া উচিত নয়। এব্যাপারে রোহিঙ্গাদের সজাগ করা হচ্ছে বলেও জানান ডা. জোবায়ের।’

প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস উখিয়া টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে। প্রলোভনে ফেলে এসব মানুষকে খাটানো হয় যেকোনো কাজে। বিশেষ করে কম খরচে মিছিল, সভা-সমাবেশে জমায়েত দেখাতেই রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করা হয়।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *