কাজ করলে মাথার মণি, না করলে শিল্পীদের কেউ মনে রাখে না: নাসিম
ডেস্ক রিপোর্টঃ দুই যুগের অভিনয় ক্যারিয়ার আহসান হাবিব নাসিমের। এখন অভিনয় আর শিল্পীসংঘের নেতৃত্ব- এ নিয়েই ব্যস্ততা। আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে মাছরাঙার টিভিতে প্রচার হবে তার অভিনীত দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটক ‘ক্যাম্পাস’। তুহিন হোসেন পরিচালিত এই ধারাবাহিক ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন নাসিম
নতুন ধারাবাহিক ‘ক্যাম্পাস’ নিয়ে জানতে চাই…
নাম শুনেই বুঝতে পারছেন, এটা একটি বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গল্প। প্রতিটি ক্যাম্পাসে যেমন আনন্দের গল্প থাকে, অর্জনের গল্প থাকে, তেমনি থাকে সংকটের গল্প, হতাশার গল্প। সেখানে পড়াশুনা যেমন থাকে, পাশাপাশি প্রেম-ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, রাজনীতি, বিচ্ছেদের গল্পও থাকে। এই সব নিয়ে ‘ক্যাম্পাস’ ধারাবাহিক নাটকের গল্প এগিয়ে যাবে। এরইমধ্যে আমরা দুই লটের শুটিং শেষ করেছি। আগামী ১৭ তারিখ থেকে মাছরাঙা টিভিতে ধারাবাহিক নাটকটি প্রচার শুরু হবে।
ক্যাম্পাস ধারাবাহিকের পোস্টারে অর্ষা ও নাসিম
এই নাটকে আপনার চরিত্রটি কেমন?
আমার চরিত্র স্থানীয় কমিশনারের। ফলে তার একটি প্রভাব বিশ^বিদ্যালয়ের ওপর রয়েছে। তবে চরিত্রটি বেশ ইন্টারেস্টিং। কখনো মনে হবে তার চেয়ে ভালো মানুষ আর হয় না, কখনো মনে হবে এর চেয়ে কুরুচিপূর্ণ মানুষ আর নেই। মোটকথা বৈচিত্র্যময় একটি চরিত্র এই ‘জুলমত’। এখানে একটি বিপ্লবী নারী চরিত্রে রয়েছেন অর্ষা। আমার ছোট ভাইয়ের চরিত্রে রয়েছেন শিবলী নোমান। যেহেতু কমিশনারের চরিত্র আমার, ফলে সবার সঙ্গেই বিভিন্ন দৃশ্য রয়েছে। আরও অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, সুষমা সরকার, চাষী আলম, মিরাক্কেলের পাভেলসহ অনেকে।
ইদানিং দেখা যায়, একজন অভিনেতা নির্দিষ্ট একটি চরিত্রে ভালো করলে তাকে সেই চরিত্রেই বার বার নেওয়া হয়। আপনি প্রায় দুই যুগ ধরে অভিনয় করছেন। আপনার শুরুর দিকেও কি একই চিত্র ছিল?
হ্যাঁ! এটা সব সময়ই হয়। আমার সঙ্গেও হয়েছে। শুরুর দিকে আমি রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলের গল্পে ভালো করেছিলাম। এরপর আমাকে আরও অনেক প্রস্তাব দেওয়া হয় রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের গল্পে। আমি সেখান থেকে বুঝে বুঝে কিছু কাজ করেছি পরবর্তীতে। তবে এই পর্যায়ে এসে আমাকে আর কোন টাইপ কাস্টে ফেলে না কেউ। এখন নানা ধরনের চরিত্রে কাজ করছি।
আহসান হাবিব নাসিম
ছোটপর্দার অভিনয়শিল্পীদের সংগঠনের সভাপতি হিসেবে সামগ্রিকভাবে নাটকের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে তুষ্ট?
আসলে তুষ্ট কখনোই হওয়া যায় না। শৃঙ্খলা-বিশৃঙ্খলা সব সময়ই ছিল, এখনো আছে। তবে আমরা এখন চেষ্টা করছি যতোটা সম্ভব সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখা যায়। শিল্পীরা যাতে একে অণ্যের পাশে দাঁড়ায়, ঐক্যবদ্ধ থাকে, সে একাকী অনুভব না করে এসব ব্যাপারেও আমরা নজর রাখছি। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, শোবিজ হলো ইরেজ মিডিয়া। যতোদিন শিল্পী কাজ করেন সবার মাথার মণি হয়ে থাকেন, যখন কাজ করেন না কেউ তাকে মনে রাখে না। কতো শিল্পী আছে একাকী, নীরবে নিভৃতে জীবনযাপন করছেন। অথচ একটা সময় তারা দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে টিভি পর্দা মাতিয়ে রেখেছেন।
সেই জায়গা থেকে যারা নানা কারণে সরে যাচ্ছেন বা নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারছেন না, তারও যাতে আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচতে পারে সেদিকেও আমরা খেয়াল রাখছি। আমরা ওয়েলফেয়ার নিয়ে কাজ করছি। সামাজিক মর্যাদা নিয়ে যাতে থাকতে পারে সে বিষয়েও কাজ করছি। মোটকথা অভিনয়ে যাতে পেশাদারিত্ব আসে সেই চেষ্টা করছি অভিনয়শিল্পী সংঘ থেকে।
আহসান হাবিব নাসিম
অন্যান্য কাজের খবর জানতে চাই…
নাটকেই বেশি কাজ করা হচ্ছে। আজকে বিটিভিতে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে আমার অভিনীত একটি নাটক প্রচার হবে। এটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন মামুনুর রশীদ। তিনি অভিনয়ও করেছেন।
ওটিটি ও সিনেমাতে আপনাকে কম দেখা যায় কেন?
এখন তো নাটক, ফিল্ম, ওটিটি সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। যেখানেই ভালো কাজের সুযোগ আসে আমি করতে চাই। যদিও ফিল্ম সেভাবে করা হয়নি কখনোই। তবে ওটিটির কাজ নিয়ে আমি আশাবাদী। সম্প্রতি ‘হারাধনের দশটি ছেলে’ নামে একটি ওয়েব সিরিজের কাজ করলাম। খুব শিগগিরই এটি টফিতে মুক্তি পাবে। এছাড়া জি সিরিজ প্রযোজিত ‘ডোডোর গল্প’ নামের একটি সিনেমাতেও কাজ করেছি। অর্ধেক কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে।
নাসিম ও পরীমনি কাজ করছেন ‘ডোডোর গল্প’ সিনেমায়
‘ডোডোর গল্প’তে আপনার সহশিল্পী পরীমণি। তাকে কিভাবে পেলেন শুটিং সেটে?
পরীর সঙ্গেই আমার বেশি দৃশ্য এই সিনেমায়। আমি নাটকের মানুষ। আর সে তো সিনেমা দিয়েই প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তার মধ্যে আলাদা কোন আচরন লক্ষ্য করিনি, যেটা ফিল্মের তারকাদের ক্ষেত্রে একটা সময় শোনা যেত। সে খুবই পেশাদার ও সিনসিয়ার। নিজের চরিত্র ঠিকঠাক পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে সে যথেষ্ট আন্তরিক। নিয়মমাফিক আমরা রিহার্সেল করে তারপর ক্যামেরার সামনে যাই। তার তো গীয়াসউদ্দিন সেলিমের সেটে একটা স্কুলিং পিরিয়ড গিয়েছে। ফলে আগে কি ছিল জানি না। এখন সে পরিণত আর্টিস্ট।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।