সারাদেশ

লাল সবুজের পতাকা ফেরি করে জীবিকা চলে তার 

ডেস্ক রিপোর্ট: লাল সবুজের পতাকা ফেরি করে জীবিকা চলে তার 

ছবি: বার্তা ২৪

দেশের পতাকাকে ভালোবেসে জীবিকা হিসেবে নিয়েছেন আলম ইসলাম। জাতীয় দিবসগুলো উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলছে তার পতাকা। দেশের পতাকা গায়ে জড়িয়ে হাতে পতাকার পশরা নিয়ে ব্যবসায় করছেন জমিয়ে। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্করাও কিনছেন পতাকা। এভাবেই যা উপার্জন হয় তাই দিয়ে চলে সংসার। তবে আগের মত এ বছর বিক্রি তেমন নেই বলে জানান তিনি।

রংপুর টাউন হলের সামনে দেখা মিললে দীর্ঘ আলাপচারিতায় বলেন তার জীবন কাহিনী। ছোটবেলায় বাবা- মা মারা যাওয়ার পর থেকে খাবারের অভাবে পথে পথে ঘুরলে এক মহৎ ব্যক্তি তাকে বেশকিছু পতাকা কিনে দিয়েছিল তখন থেকেই তিনি পতাকা বিক্রিওয়ালা।

দীর্ঘ ২৩ বছর থেকে এই ব্যবসা। তার বয়স ৩৪ বছর। পেশাটা তার পছন্দ, দেশকে ভালবেসে দেশের পতাকা ছাড়া অন্য কোন পতাকা বিক্রি করেন না তিনি। পতাকার দাম নিয়ে তিনি বলেন, ‘ছোট কাটি পতাকা ১০-১৫ টাকা, হ্যান্ড বেল্ট প্রতিটি ১০ টাকা, বড় আকারের একটি পতাকা ১০০ থেকে ৩০০ টাকা, মাঝারি আকারের পতাকা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, ছোট আকারের পতাকা আকারভেদে ২০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। তবুও অনেকেই দর দাম করেই কিনে থাকেন পতাকা। দিনে হাজার টাকার বেশি বিক্রি হয়। যার অর্ধেকই লাভ বলে হয়। এভাবে অন্য পেশার চেয়ে অনেক ভালো আছি।’ 

দেশকে ভালবেসে তিনি আরও বলেন, ‘দেশকে যারা স্বাধীন করছেন তাদের বিনিময়ে পাইছি এই পতাকা। আমাদের সকলের উচিত মনে প্রাণে দেশকে ভালোবাসা। শুধু জাতীয় দিবস ছাড়াও তাদের প্রতি সম্মান দেয়া। পতাকা বিক্রি করেই ২৩ বছর কাটাইলাম বাকি দিনটাও কাটাতে চাই। বিক্রি যাই হোক রিজিকের মালিক আল্লাহ।’ 

পতাকা কিনতে আসা ক্রেতা বলেন, ‘শুনলাম আলমের জীবন কাহিনি। খুব ভালো লাগা কাজ করেছে মনে বাবা- মা হারা শিশুটি আজ পতাকা বিক্রি করতে করতেই বড় হয়ে গেছে। লেখাপড়া না করলেও ইতিহাসের প্রতি তার জ্ঞান না থাকলেও সে দেশের প্রতি এত বেশী শ্রদ্ধাশীল। তার পেশাকে আমিও সম্মান জানাই। সবারই উচিত দেশকে ভালোবাসা৷’ 

‘মুজিবকা’ নাম কিউ নিয়া!

পিলখানার ইপিআর সৈনিক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী

আমাদের বন্দি করে প্রথমে পিজিক্যাল কলেজের দোতলায় আটকে রাখে। সেখানে সুবেদার মেজর শওকত, সুবেদার মুনসী, সুবেদার আব্দুল হাই, জুগেস চন্দ্র ঘোষসহ আরো অনেককে অমানবিক নির্যাতন করেছে পাকিস্তানিরা। এই দৃশ্য দেশে আমরা বাঙালি সৈনিকরা কান্নাকাটি করতে থাকি। এক পর্যায়ে আমরা আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে দোয়া করছি আর ‘খতমিনুস’ পড়ছিলাম। আমাদের দোয়ার মধ্যে একটা বাক্য ছিল ‘ইয়া মুজিবাত দাওয়া’। এই বাক্যটি শুনে পাকিস্তানিরা আমাদের মারতে থাকে এবং বলে ‘মুজিবকা’ নাম কিউ নিয়া’। এছাড়াও খাওয়ার জন্য লাইনে দাড়াতে গেলে লাইন একটু বাকা হলে আমাদেরকে মারতে থাকে পাকিস্তানিরা।

এই ভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান পিলখানার ইপিআর সৈনিক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী।

কুতুব উদ্দিন চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ঐতিহাসিক ভাষণ শোনার জন্য বাঙালি সৈনিকরা পাকিস্তানি সৈনিকদের ফাঁকি দিয়ে পিলখানার তারকাটা বেড়া ডিঙিয়ে রেসকোর্স ময়দানে যাই। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে পিলখানায় ফিরে আসি। পরে ইপিআর সুবেদার মেজর শওকত এর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর কাছে সিগন্যালের ওয়ারলেস সেট গোপনে প্রেরণ করি। যেখানে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ইয়াহিয়া খানের মিটিং চলছিলো। ইপিআর এর হেডকোয়ার্টার পিলখানায় বাঙালি সৈনিকদেরকে পাহারা দেওয়ার জন্য পাকিস্তানি ২২ বেলুছ রেজিমেন্ট ক্যাম্প তৈরি করে। এরমধ্যে ২২ মার্চ দিবাগত রাত দুইটার দিকে পাকিস্তানিদের সেনা আস্তানায় আমাদের দুঃসাহসিক বাঙালি ইপিআর সৈনিকগণ পিলখানা বাবর গ্রাউন্ডে বিখ্যাত উঁচু বটগাছের চূড়ায় লাল সবুজের পতাকা বেঁধে দেওয়া হয়। এটা ছিল অন্যতম দুঃসাহসিক অভিযান। ২৩ মার্চ সকালে পাকিস্তানিরা দেখতে পায় পতাকা পতপত করে উড়ছে। তখন তারা রাগান্বিত হয়ে মুখ ভারি করে রাখে। পরে ইপিআর বাঙালি সৈনিক অস্ত্র গোলাবারুদ জমা নেয়, হাতিয়ারগুলো গুদামে সিলগালা করে রাখে। ২৪ মার্চ দিনগত রাত ১১টায় থেকে ১২টার মধ্যে ইকবাল হলের খছরু ভাই ৩নং গেইটে খবর পাঠান ইপিআর সৈনিকরা যেনো সতর্ক থাকে। আমরা বাঙালি সৈনিকরা যার যার স্থানে ডিউটি করছিলাম এরমধ্যে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যায় এবং দেখা ট্যাংক নিয়ে নিরস্ত্র বাঙালি সৈনিকদের উপর আক্রমণ শুরু হয়। এসময় অনেক সৈনিক মারা যায় এবং অনেকেই বন্দি হয়। আমিসহ যারা বন্দি হয়েছিলাম আমাদের চোখ বেধে লাথি মারতে মারতে গাড়িতে উঠায়। সেদিন আমার সাথে যারা বন্দি ছিল তাদের নাম জানি, কিন্তু ঠিকানা মনে নেই। এরমধ্যে ডিএডি নাছির উদ্দিন, সিগন্যাল সৈনিক ওসমান গণীসহ আরো অনেকেই।

বন্দি জীবন যে কত ভয়াবহ ছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সেইদিনের কথা আজও মনে হলে গা শিউরে উঠে। সকাল বেলা বাঙালি সৈনিকদের মাথার চুল কেটে ট্রাকে করে চোখ বেধে কোথায় নিয়ে যেত। বিকালে দেখা যেত কেউ কেউ ফিরে আসছে আবার কেউ ফিরছে না। যারা ফিরছিল না তাদের মেরে ফেলতো।

আশি বছর বয়স্ক এই বৃদ্ধ জীবনের শেষ সময়ে এসে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন জমা দিলেও মনে হচ্ছে ঘরে ফিরতে হবে ফলশূন্য হয়ে।

২০০৪ সালে চাকরি থেকে অবসরে যান তিনি। ২০০৭ সালে সর্বপ্রথম মহাপরিচালক জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বরাবরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তীকরণের জন্য আবেদন করেছেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে পুনরায় আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন-১) মোঃ সোলায়মান কবির স্বাক্ষরিত ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে একটি নোটিশ কুতুব উদ্দিন চৌধুরী বরাবরে প্রেরণ করা হয়।

নোটিশে বলা হয় ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে সকাল ৯টায় মুক্তিযোদ্ধার স্বপক্ষে সাক্ষী ও সকল দালিলিক প্রমানাদি নিয়ে হবিগঞ্জ সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে যাচাই বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য। কুতুব উদ্দিন চৌধুরী এই নোটিশ পেয়েছেন ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে। অর্থাৎ সাক্ষাৎকারের পরের দিন তিনি চিঠি পেয়েছেন। তাই তিনি যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। 

তিনি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার করিমপুর গ্রামের কুতুব উদ্দিন চৌধুরী। ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্ট (ইপিআর) অবসরপ্রাপ্ত নায়েক সুবেদার কুতুব উদ্দিন চৌধুরীর দাবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নির্দেশ ও ইপিআর বাঙালি সৈনিক হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরাই মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করি। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর হলেও মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি পাননি এই বীর সেনানী।

;

শ্রদ্ধার ফুলে ভরে উঠেছে স্মৃতিসৌধের বেদি

ছবি: বার্তা ২৪

আজ ১৬ ডিসেম্বর। বাঙালি জাতির গৌরবের দিন। প্রতিবছর বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে নামে লাখো জনতার ঢল। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সৌধ প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করা হলে বাড়তে থাকে জনতার স্রোত।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসে এমন চিত্র দেখা যায়। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ, স্থানীয় ও দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা জনতার ঢল নামে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে। 

বেলা বাড়ার সাথে সাথে একের পর এক ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে স্মৃতিসৌধে প্রবেশ করতে থাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী, শ্রমিক সংগঠনসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন। তাদের সবার হাতে ফুলের তোড়া। সেসব তোড়ার স্থান স্মৃতিসৌধের মূল শহিদ বেদিতে। সহস্র জনতার শ্রদ্ধার ফুলে ভরে উঠছে শহীদ বেদি।

জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিজয়ের ৫২ বছর উদযাপন করতে আসা হাজারও মানুষের মধ্যে ছিল বাঁধভাঙা উল্লাস। তবে এর মধ্যেও ৩০ লাখ শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানাতে ভোলেননি তারা। শিশু থেকে বৃদ্ধ-অধিকাংশের হাতে লাল-সবুজের পতাকা আর বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকা। 

শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন আশুলিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন মন্ডল। তিনি বলেন, ‘আজ স্মৃতিসৌধে গণমানুষের ঢল নেমেছে। সবাই একে একে নিবেদন করছেন শ্রদ্ধা। আমি আমার সহযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়েছি। আমি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়ে বেঁচে আছি। কিন্তু আমার সহযোদ্ধারা এই স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে জীবন দিয়েছেন। তারা দেখে যেতে পারেন নি স্বাধীনতা। আজ তারা সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধায় সিক্ত। এটাও আমার কাছে বড় পাওয়া।’ 

শ্রদ্ধা জানাতে আসা রাজু আহমেদ বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ করতে পারি নি। কিন্তু যারা যুদ্ধ করেছেন, দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন তাদের কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করা আমাদের প্রয়োজন। তাই শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। এখানে আমি প্রতিবারই আসি।’ 

অন্যদিকে, দিবসটি উপলক্ষে সাভারের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে।

;

শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির শ্রদ্ধা

ছবি: বার্তা ২৪

বিজয় দিবস উপলক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭ টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার শ্রদ্ধা জানান।

এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও পুলিশ সদরদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক (বিপিউব্লিউএন) এর সভাপতি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের ডিআইজি আমেনা বেগমের নেতৃত্বে বিপিউব্লিউএন নেতৃবৃন্দ, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরীর নেতৃত্বে পুনাক নেতৃবৃন্দ পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কালজয়ী আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে তৎকালীন পুলিশের বাঙালি সদস্যরা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

;

দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার দায়িত্ব তরুণদের: রবীন্দ্র উপাচার্য

প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আজম

মহান বিজয় দিবসে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আজম।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্য শাহ্ আজমের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

এ সময় প্রধান শাহ্ আজম বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্রের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভ মুক্তির কিরণ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের সর্বত্র। আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয় স্বাধীনতার বার্তা, জয় বাংলা বাংলার জয়, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর আর বিজয়ের উল্লাস বাঙালির প্রাণ উন্মাদনা সৃষ্টি করে, সজীব করে। যুগ যুগ ধরে শোষিত-বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নেরা অবশেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়।

রবি উপাচার্য শাহ্ আজম আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বিজয়ের ৫২ বছর পূর্তির দিন আজ।

তিনি বলেন, আনন্দের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে দেশের নেতৃত্বে দেখতে চাই। এই চাওয়া পূরণ করতে সমর্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বদ্বীপ এই বাংলায় আর কোনদিন যেন মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা ক্ষমতায় আসতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। স্বাধীনতা বিনষ্টকারী ও দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার দায়িত্ব এদেশের তরুণদের।

শাহ্ আজম বলেন, যে স্বপ্ন নিয়ে জাতির পিতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করেছে তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমরা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. ফিরোজ আহমেদ, রেজিস্ট্রার জনাব সোহরাব আলী, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *