আওয়ামী লীগ উন্নয়ন করে, বিএনপি মানুষ পুড়িয়ে মারে: শেখ হাসিনা
ডেস্ক রিপোর্ট: জনগণ বারবার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে বলেই উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নিসন্ত্রাস করছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ উন্নয়ন করে, বিএনপি মানুষ পুড়িয়ে মারে বলেন তিনি।
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেটের ঐতিহাসিক আলিয়া মাদরাসা মাঠে প্রথম নির্বাচনী জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন উন্নয়নের কাজ করছি তখন বিএনপি আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। তাদের মাঝে মনুষ্যত্ব থাকলে ট্রেনে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে পুড়িয়ে মারতে পারতো না। ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর জন্যেও তারা আগুন সন্ত্রাস করে। ৫৮২টি ভোটকেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়, ৭০টা সরকারি অফিস, ৬টা ভূমি অফিস, ৩২৫২টি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিলো। যেখানে মানুষও পুড়ে কয়লা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন লন্ডনে বসে হুকুম দিচ্ছেন, আর তার চ্যালারা (অনুসারী) মানুষ পুড়িয়ে মারছে, এটাই বিএনপির চরিত্র। আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যারা আগুন দেয় তাদের মনে রাখা উচিত আগুন নিয়ে খেললে ওই আগুনেই হাত পুড়বে।
তিনি বলেন, দেশের প্রায় ৭৮ ভাগ মানুষই ইন্টারনেট ব্যবহার করে। আমরা ১৭ কোটি মানুষ কিন্তু ১৮ কোটি সিম ব্যবহার করে। বিভিন্ন ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি, সেখানে মানুষ সেবা পাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০টি ওষুধ বিনামূল্যে দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, সিলেটের মানুষ সবসময় আমাদের সঙ্গে আছে। গত ১৫ বছরে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। বীরনিবাস তৈরি করে দিচ্ছি প্রায় ১৩টি উপজেলায়। আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুই শতক জমিসহ ৫৫৪৩টি বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছি। ৫টি মডেল মসজিদ ও আরও ৭টির নির্মাণ কাজ চলছে। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন সব জেলায় ছিল না, আমরা ১০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ করেছি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করে দিচ্ছি। সিলেটে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আওয়ামী লীগ সরকার করে দিছে। রেল স্টেশনও আমাদের করা। সিলেট তামাবিল সড়ক ও চার লেনে উন্নীত করণের কাজ চলছে। ২২১ কিলোমিটার মহাসড়ক ও ৫৩টি সেতু করে দিয়েছে।
অসম্প্রাদায়িক দেশ গড়বো সেটা আমার লক্ষ্য। রাইট ওয়াচ বাংলাদেশ, সকলের জন্য সমানভাবে উন্নতি যাতে হয় সেটা আমি করবো। ট্রান্সপারেন্ট বাংলাদেশ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক সামাজিক মূল্যবোধ। স্মার্ট বাংলাদেশ সেটাই আমরা গড়ে তুলবো। স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট পিপল করেই আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার হারাবার কিছু নেই। বাবা-মা, ভাই সবাইকে হারিয়েছি। এই একমাত্র ছোট বোন আর আমি। সব হারিয়ে নিজের ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে তাদের মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত করে ফিরে এসেছিলাম বাংলাদেশে, কেন? এই দেশ স্বাধীন করেছেন আমার বাবা। এই মুক্তিকামী মানুষ তখনো দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত। মানুষের পেটে অন্য নাই, পরনে বস্ত্র নাই। কাজ নেই, খাবার নেই, কিচ্ছু নেই। এই দেশের যুব সমাজ বিভ্রান্ত, স্কুল-কলেজে অস্ত্রের ঝনঝনানি। আমার একটাই লক্ষ্য এই দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করে দিয়েছি। দালাল ধরে বিদেশে যাবার প্রয়োজন নেই, প্রয়োজনে বিনা জামানতে লোন দেওয়া হয়। সেভাবে সবাই বিদেশে যাবেন। রেমিট্যান্স হুন্ডি করে নয়, আমরা ব্যাংক তৈরি করে দিয়েছি। আর এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতেও প্রেরণ করা যায়। অর্থ প্রেরণ সহজ করে দিয়েছি। সেভাবে টাকা পাঠালে সেটা একটা সঞ্চয় হবে। যারা দেশে ফিরে আসবেন তারাও ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারবেন। যারা বেকার, কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটা গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রত্যেকটা গ্রামে বিদ্যুৎ দিবো কথা দিয়েছিলাম, আজকে প্রতি ঘরে ঘরে আমরা বিদ্যুৎ দিয়েছি। খাদ্যের কোনো অভাব নাই। তাহলে বাধাটা কোথায়? কাদের বাধা? যারা লুটেরা, খুনি, হত্যাকারী, দুর্নীতিবাজ এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়।
আগামী নির্বাচন, নৌকা মার্কা। এই নৌকা,নুহ নবীর নৌকা। এই নৌকাই কিন্তু মানব জাতিকে রক্ষা করেছিলেন আল্লাহ। এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। আবার এই নৌকায় যখন ভোট দিয়েছে, ভোট পেয়ে সরকারে এসেছি বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হয়েছে বলেন শেখ হাসিনা।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।