সারাদেশ

২০২৩ সালে ধর্ষণের শিকার ৫৭৩ নারী, হত্যা ৩৩

ডেস্ক রিপোর্ট: ২০২৩ সালে ধর্ষণের শিকার ৫৭৩ নারী, হত্যা ৩৩

প্রতীকী ছবি

বিদায়ী বছর ২০২৩ সালে সারাদেশে মোট ৫৭৩ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশের মানবাধিকার ও আইন সহায়তাকারী বেসরকারি সংগঠন (আসক)। একই সময়ে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৩ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন।

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্রেসক্লা‌বে বাংলাদেশের মানবা‌ধিকার প‌রিরস্থি‌তি-২০২৩ শীর্ষক এক লিখিত বক্তব্যে আসকের নির্বাহী পরিচালক ফারুক ফয়সাল এ তথ‌্য তুলে ধরেন।

লিখিত বক্তব্যে ফারুক ফয়সাল বলেন, ২০২৩ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ৫৭৩ জন নারী। এরমধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৩ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছে ১২৯ জন। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টার পর হত্যা করা হয় ৩ জনকে, ধর্ষণের চেষ্টার কারণে আত্মহত্যা করে ৩ জন।

২০২৩ সালে যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ১৪২ জন নারী। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ১২২ জন পুরুষ। চলতি বছরে উত্ত্যক্তকরণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ১২ জন নারী। এছাড়া যৌন হয়রানির ও উত্ত্যক্তকারীদের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৪ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ খুন হয়েছেন।

পারিবারিক নির্যাতন ও যৌতুক:

এ বছর পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৫০৭ জন নারী। যার মধ্যে নির্যাতনের কারণে মারা যান ২৯২ জন এবং আত্মহত্যা করেন ১৪২ জন। এর আগে ২০২২ সালে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ৪৭৯ জন নারী। অন্যদিকে ২০২৩ সালে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ১৪২ নারী। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যার শিকার হন ৬৪ জন নারী এবং আত্মহত্যা করেন ৬ জন।

গৃহকর্মী নির্যাতন ও অ্যাসিড নিক্ষেপ:

২০২৩ সালে ৩২ জন নারী গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের কারণে মারা যায় ৬ জন এবং রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় ১ জনের। অন্যদিকে একই সময়ে অ্যাসিড নিক্ষেপের শিকার হয়েছেন ১০ জন নারী।

শিশু অধিকার:

হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, বলাৎকার, অনলাইনে যৌন হয়রানিসহ শিশুর প্রতি নানা সহিংসতার ঘটনা অব্যাহত থেকেছে ২০২৩ জুড়ে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের হিসাবমতে, ২০২৩ সালে শারীরিক নির্যাতনের কারণে মৃত্যু, ধর্ষণের পরে হত্যা, ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যা, অপহরণ ও নিখোঁজের পর হত্যাসহ বিভিন্ন কারণে নিহত হয় কমপক্ষে ৪৮৪ জন শিশু।

এছাড়া ২০২৩ সালে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয় কমপক্ষে ১০১২ জন শিশু। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩১৪ জন শিশু, ধর্ষণ চেষ্টা ও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ১১৮ জন শিশু এবং বলাৎকারের শিকার হয়েছে ৭৫ ছেলে শিশু।

থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে রাজধানীতে বিজিবির নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা

বিজিবির নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে রাজধানীতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) থেকে রাজধানীজুড়ে বিজিবিকে নিরাপত্তায় নিয়োজিত করা হয়।

২৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল রেদওয়ানুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে যেকোনো নাশকতা বা অপতৎপরতা রোধে প্রস্তুত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। এই লক্ষ্যে রাজধানীর কমলাপুর ও তেজগাঁও রেলস্টেশন, আগারগাঁও ও মিরপুর-১০ মেট্রোরেল স্টেশনে তল্লাশি অভিযান চালায় বিজিবির ডগ স্কোয়াড।

এর আগে, বিজিবির ঢাকা সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেছিলেন, রাজধানীসহ ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি সার্বক্ষণিক মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকার মধ্যে ১৩টি বেইস ক্যাম্পের মাধ্যমে ৫০ প্ল্যাটুন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীসহ ৯ জেলায় ১৫১ প্ল্যাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ জেলার কিছু দুর্গম এলাকা রয়েছে সেখানেও বিশেষ ব্যবস্থায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে।

;

পলাশে অবৈধ ব্যাটারি কারখানায় ক্ষতি ৩শ বিঘা কৃষি জমি

পলাশে অবৈধ ব্যাটারি কারখানায় ক্ষতি ৩শ বিঘা কৃষি জমি

নরসিংদীর পলাশে অবৈধ ব্যাটারি কারখানার নির্গত গ্যাস আর পরিত্যক্ত কেমিকেলে কয়েক গ্রামের প্রায় তিশতাধিক বিঘা জমির মাটি নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে পাঁচ বছর ধরে জমিগুলোতে ফসল ফলাতে ব্যর্থ হওয়ায় অনাবাদি অবস্থায় পরে আছে। কৃষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত করা হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন প্রশাসন। 

সরেজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার কৃষি নির্ভর একটি অঞ্চল চরসিন্দুর ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া, দক্ষিণ দেওড়া, মালিতা ও কালাপাইকা। এই গ্রামগুলোর প্রায় তিনশত বিঘা জমিতে দুই মৌসুমে প্রচুর পরিমানে ধান ফলে। বাকি সময় এতে পানি থাকায় প্রচুর পরিমাণে মাছ উৎপাদন হয়। কিন্তু ৫ বছর ধরে ফুলবাড়িয়া এলাকায় নির্মাণাধীণ আশরাফ টেক্সটাইল নামে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে একটি চক্র অবৈধভাবে ব্যাটারি তৈরি করছে। কারখানায় বর্জ্য শোধনাগার প্রকল্প (ইটিপি) থাকার কথা থাকলে ও এই কারখানায় তা নেই। ফলে কারখানার নির্গত গ্যাস ও পরিত্যক্ত কেমিকেল মিশ্রিত বর্জ্য আশপাশের জমিতে ছেড়ে দেয়ার ফলে পানিতে মিশে  সমস্ত জমিতে প্রবাহিত হয়। এতে জমির মাটি কালচে ও শক্ত হয়ে ফসল ফলানোর অযোগ্য হয়ে পড়ে। এখন জমিগুলোতে কোনো ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই এই তিনশত বিঘা জমি অনাবাদি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রতিকারের আশায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেয়ার পাশাপাশি মানববন্ধন ও করেছেন।

কৃষকদের অভিযোগ, ফুলবাড়িয়া এলাকায় নির্মাণাধীণ আশরাফ টেক্সটাইল নামে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে স্থানীয় একটি চক্রকে হাত করে ভেতরে ব্যাটারি তৈরি করা হচ্ছে। যে সকল ব্যাটারি ইজি বাইক, মোটর সাইকেল, বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। এই কারখানার ভেতরে স্থানীয়দের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। এমনকি গণমাধ্যম কর্মীদেরও ভেতরে যেতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাদের এই কারখানার নির্গত কেমিকেল মিশ্রিত পানি জমিনের পানিতে প্রবাহিত হয়ে ফসলি জমির মাটি কালচে ও শক্ত হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের এমন পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাত করেন না। এই জমিগুলো ধানের উর্বর জমি। আর এতে ধান বোপণ করতে না পেরে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

তৌফিক আহমেদ পরিচয় দিয়ে কারখানার এক কর্মচারী বাইরে এসে এ প্রতিনিধিকে বলেন, কারখানার পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা আছে। এছাড়া ইটিপির কাগজপত্র রয়েছে এবং ভেতরে ইটিপি আছে বলে জানান।

এ বিষয়ে কারখানার মূল ফটকে গিয়ে কোন সাইনবোর্ড পাওয়া যায়নি। গেটে দাঁড়ানো এক কর্মচারীর কাছে জানতে চাইলে মিরাজ আহমেদ নামে এক ব্যক্তির সাথে কথা বলতে বলেন।

কারখানার এক কর্মচারীর কাছ থেকে পাওয়া মিরাজ আহমেদ এর মোবাইল নম্বরে কল দিলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেন এবং নিজেকে কারখানার ব্যবস্থাপক বলে পরিচয় দেন। কারখানাটি বৈধ কিনা জানতে চাইলে তিনি বৈধ বলে দাবি করেন। সেই সঙ্গে ঢাকায় আছেন এবং এর বেশী কথা বলতে পারবেন না বলে জানিয়ে মোবাইল রেখে দেন।

চরসিন্দুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল হোসেন জানান, এই ব্যাটারি কারখানার কারণে কয়েক গ্রামের প্রায় তিনশত বিঘা জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হন কৃষকরা। আগামী দিনেও জমিগুলোতে ধান বোপণ করা সম্ভব হবে না। কারখানাটি যদি বৈধ হয় তাহলে ইটিপি করে চালাবে, নয় তা বন্ধ রাখবে। এমনটাই দাবি প্রশাসনের কাছে।

পলাশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার জানান, ব্যাটারি কারখানার নির্গত কেমিকেল মিশ্রিত বর্জ্যে দক্ষিণদেওড়া ব্লকের নব্বই হেক্টর জমি কৃষি কাজের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে এই ব্লকের ধান উৎপাদনে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। আগামী বোরো মৌসুমেও এই ব্লকে ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তাই এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি।

পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রবিউল আলম জানান, এ বিষয়ে কৃষকরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কৃষি কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্ত করা হয়েছে। তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

দীর্ঘ ৫ বছর ধরে জমিগুলো অনাবাদি থাকায় ক্ষতিগস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তার দাবি জানান কৃষকদের।

;

২০২৩ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৭০৯ শ্রমিক নিহত: বিলস

ছবি: সংগৃহীত

কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২০২৩ সালে ৭০৯ জন শ্রমিক নিহত এবং ৪৮২ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ ছাড়া, কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৫৩ জন শ্রমিক নিহত ও ১২৬ জন আহত হন। বিভিন্ন সেক্টরে ১৬৯টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে ১০৮টি শ্রমিক অসন্তোষ ঘটে তৈরি পোশাক খাতে।

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে ‘বাংলাদেশের শ্রম ও কর্মক্ষেত্র পরিস্থিতি বিষয়ে সংবাদপত্র ভিত্তিক বিলস জরিপ-২০২৩’ এ এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। জরিপে দুর্ঘটনা, নির্যাতন, শ্রম অসন্তোষ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৭০৯ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় (২০২২ এর তুলনায় ৩১% কম), এর মধ্যে ৭০৬ (৯৯%) জন পুরুষ এবং ৩ (১%) জন নারী শ্রমিক। খাত অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ২৪৬ (৩৪%) জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় পরিবহন খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১৩ (১৫%) জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় নির্মাণ খাতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯৭ (১৩%) জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় কৃষি খাতে। এছাড়া রিকশাশ্রমিক ৪৪ জন, প্রবাসী শ্রমিক ৩৫, দিনমজুর ২৯, মৎস্য শ্রমিক ২৬, বিদ্যুৎ খাতে ১৫, নৌপরিবহন খাতে ১৫, স্টিল মিলে ১১ এবং অন্যান্য খাতে ৭৮ জন শ্রমিক নিহত হন।

২০২৩ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৪৮২ জন শ্রমিক আহত হন, এর মধ্যে ৪২২ (৮৭%) জন পুরুষ এবং ৬০ (১২%) জন নারী শ্রমিক। তৈরি পোশাক খাতে সর্বোচ্চ ১১৪ (২৩%) জন শ্রমিক আহত হন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৎস্য খাতে ৮৫ জন (১৭%) আহত হন। তৃতীয় সর্বোচ্চ নির্মাণ খাতে ৬১ (১২ %) জন শ্রমিক আহত হন। এছাড়া নৌ পরিবহন খাতে ৩৯ (৮%) জন, পরিবহন খাতে ৩৮ জন (৭%), দোকান কর্মচারী ৩৩ (৬%), অক্সিজেন কারখানায় ২৪ (৪%) দিনমজুর ১৫ (৩%) জন, ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ১৩ (২%) জন, ওয়ার্কশপে ১৩ (২%) জন, কৃষিতে ১২ (২%) জন, এবং অন্যান্য খাতে ৩৫ জন শ্রমিক আহত হন।

সড়ক দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, বজ্রপাত, অগ্নিকাণ্ড, সমুদ্রে ঘূর্ণিঝড়ে ট্রলারডুবি, পড়ন্ত বস্তুর আঘাত, মাথায় কিছু পড়া, বিষাক্ত গ্যাস, নৌ দুর্ঘটনা, দেয়াল বা ছাদ ধসে পড়া, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, বন্যপশুর আক্রমণ ইত্যাদি কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১০৩৪ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় এবং আহত হন ১০৩৭ জন শ্রমিক। নিহতদের মধ্যে ১০২৭ (৯৯%) জন পুরুষ এবং ৭ (১%) জন নারী শ্রমিক ছিলেন।

;

নতুন এমপি’র কাছে যানজটের নিরসন চায় বগুড়াবাসী   ভোট এলো, এলো ভোট

ছবি: বার্তা২৪.কম

বগুড়া থেকে: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জানুয়ারির ৭ তারিখ। এরই মধ্যে সারাদেশের মতো বগুড়াতেও চলছে নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা। দিন রাত প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। পাড়া মহল্লায় চলছে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।

বগুড়া সদর উপজেলা নিয়ে সংসদীয়-৪১ (বগুড়া-৬) আসন। এবার এই আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু লড়াই করবেন নৌকা প্রতীক নিয়ে। এর আগে গত উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে নৌকা প্রতীকে জয় লাভ করেন তিনি। এছাড়াও তার সাথে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নানের। তিনি লড়ছেন ট্রাক প্রতীক নিয়ে। এর বাইরে আরও তিনজন প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী কবির আহম্মেদ (ঈগল প্রতীক), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)র শহিদুল ইসলাম (আম প্রতীক) এবং জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে রয়েছে আজিজ আহম্মেদ।

বর্তমান সরকারের উন্নয়নের প্রভাব বগুড়াতেও পড়েছে। রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা, খেলার মাঠ,পার্কসহ নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে খুশি এই এলাকার ভোটাররা। তবে এতো সব উন্নয়নের মধ্যেও মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যানজট ও ফুটপাত দখল।

উন্নয়নের মধ্যেও মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যানজট প্রার্থীরা বলছেন বগুড়া শহরের অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে যানজট। যানজট সমাধানে এর আগে নানা রকম পরিকল্পনা করলেও তা ব্যর্থ হয়েছে। মূলত বগুড়া শহরের ফুটপাত দখল ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা যানজটের প্রধান কারণ বলে মনে করেন বগুড়াবাসী। তাই এবার নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীর কাছ থেকে তাদের প্রত্যাশা যানজট নিরসনে নতুন সাংসদ ভূমিকা নেবে। সেই সাথে সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচলের সুবিধার্থে ফুটপাত দখলমুক্ত করবে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বগুড়া শহরের দত্তবাড়ি, বড়গোলা, থানা মোড়, সাতমাথা, খান্দার, ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়, রেলগেট, নামাজগড়, টিনপট্টি মোড়, বনানী মোড়, তিনমাথা রেলগেট, চেলোপাড়া মোড়ে যানজট লেগেই থাকে। এছাড়া বাইপাস রোডের তিনমাথা রেলগেট ও আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল-সংলগ্ন চারমাথা, বনানী, মাটিঢালী এলাকায় মহাসড়কে যানজট সবচেয়ে বেশি বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।

এছাড়া সড়কের পাশে ভ্রাম্যমাণ দোকান ও ফুটপাত দখল করে হকারদের রাস্তা দখলের কারণেও পথচারীদের চলাচলে প্রচুর সমস্যার মধ্যে পরতে হয় বলে জানান স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ পাঁচ মিনিটের রাস্তা যেতে আধাঘণ্টা লাগে এই যানজটের কারণে। আবার হেঁটে যাওয়ার তেমন উপায় নেই।

যানজট নিরসনে নৌকার প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু জানান, কয়েকমাস আগেই জেলা প্রশাসনের সমন্বয় একটি সভা হয়েছে। আমরা যে করতোয়া নদীর কথা বলেছি ঐটা মাটিঢালী থেকে বনানী পর্যন্ত দুই পাশের রাস্তা নির্মাণের জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই রাস্তা নির্মাণের জন্য আপাতত ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এই কাজটা আরও অনেক টাকার। উনি বলেছেন (প্রধানমন্ত্রী) এই বাজেটে বরাদ্দ দিতে পারবেন না ভবিষ্যৎ বাজেটে দিবে। ঐ করতোয়া উপর দুইপাশে রাস্তা নির্মাণ হলে যানজট অনেকাংশেই দূর হবে। এছাড়াও আরও পরিকল্পনা রয়েছে আস্তে আস্তে তা সমাধানের চেষ্টা করছি এবং করবো।

শহরের জামতলা এলাকার বাসিন্দা আফরোজা বেগম বলেন, তাঁর মেয়ে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। যানজটের কারণে তার মেয়ের প্রায় স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। যেখানে দশ মিনিটের রাস্তা সেখানে যেতে সময় লাগছে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। তাই এবার নির্বাচনে যিনি জনপ্রতিনিধি হবেন তার কাছে একটাই চাওয়া যানজট নিরসনে যেন ভূমিকা রাখে।

দত্তপাড়ার বাসিন্দা শামিম আহমেদ। শহরের সাত মাথা এলাকার গালা পট্টিতে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন শামিম। তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল ৯টায় অফিসে হাজির হতে হয়। কিন্তু দত্তবাড়ি থেকে সাত মাথা আসতে প্রচণ্ড যানজট পাড়ি দিতে হয়। মাত্র দশ পনেরো মিনিটের রাস্তা কিন্তু সময় লাগে প্রায় ৪০ মিনিট। এতে প্রায়ই অফিসে যেতে দেরি হয়। তাই নতুন সংসদ সদস্য যিনি হন না কেনো যানজট কমানোর উপর যেন জোর দেয় এমনটাই প্রত্যাশা তার।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *