খেলার খবর

নড়াইল-১ ও ২: এবারও আওয়ামী লীগের জয়জয়কার!

ডেস্ক রিপোর্ট:  

স্বাধীনতা পরবর্তী সবক’টি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক আধিপত্য দেখা গেছে নড়াইলে। কোনো নির্বাচনেই নড়াইলের দুটি আসনে জিততে পারেনি আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল। জেলার রাজনীতি ও ভোটের মাঠেও একক আধিপত্য আওয়ামী লীগেরই। এমনকি স্থানীয় নির্বাচনগুলোয় ছিল আওয়ামী লীগের একক আধিপত্য। এবারের নির্বাচনেও নড়াইলের দুটি আসনে আওয়ামী লীগের জয়জয়কার দেখা যাচ্ছে।

৭ জানুয়ারি ভোটকে সামনে রেখে নড়াইলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এই চিত্র ধরা পড়েছে।

দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর ১৯৯১ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছেন এখানে। তার মধ্যে নড়াইল ১ আসনে— ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে ধীরেন্দ্র নাথ, ২০০১ সালে শেখ হাসিনা এবং এরপর পরপর দুইবার কবিরুল হক নির্বাচিত হন। বর্তমানেও এই আসনের এমপি রয়েছেন বি এম কবিরুল হক। এরা সকলেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

নড়াইল ২ আসনে— ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে শরীফ খসরুজ্জামান, ২০০১ সালে শেখ হাসিনা, ২০০৮ সালে এস. কে. আবু বাকের, ২০১৪ সালে শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ হাফিজুর রহমান ও সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাশরাফি বিন মর্তুজা সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

তবে ভোটের মাঠের চিত্রটি কিছুটা পাল্টাতে শুরু করে ২০১২-১৩ সালের দিকে। নৌকার অধিপত্যে কিছুটা চিড় ধরতে শুরু করে সে সময়ে যা পরিলক্ষিত হয় স্থানীয় নির্বাচনে। সেসময় নড়াইল পৌরসভা, উপজেলা পরিষদসহ স্থানীয় বিভিন্ন নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা জয়ী হয়ে চমক সৃষ্টি করেন। তবে সে পরিস্থিতি বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। গত কয়েক বছর বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বর্জন করায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই স্থানীয় নির্বাচনে আবারও জয় পাযন আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা।

মাঠের রাজনীতিতে আওয়ামী বিরোধীরা এখন আর সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। বিগত কয়েক বছর ধরে নড়াইল শহরে কেন্দ্র থেকে ঘোষিত কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারে নি বিএনপি ও জামায়াত। দীর্ঘদিন ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে জেলা বিএনপি ও ছাত্রদলের দলীয় কার্যালয়।

বিএনপির আন্দোলনের আরেক মিত্র জামায়াতে ইসলামীর নেই কোনো প্রকাশ্য কার্যক্রম। সম্প্রতি নড়াইল-০২ আসনে জেলা জামায়াতের আমির আতাউর রহমান বাচ্চুকে প্রার্থী ঘোষণা করে জেলায় কিছুটা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে দলটি। তবে বরাবরের মতোই গোপনে সাংগঠনিক এবং সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে দলটির নেতাকর্মীরা। ফলে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমই চোখে পড়ে এখানে। অন্য কোনো দলকে দেখা যায় না।

এবারের নির্বাচনে নড়াইল-১ আসনে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির নজরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির মিল্টন মোল্যা, তৃণমূল বিএনপির শ্যামল চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী চন্দনা হক, জেপির শামিম আরা পারভিন লড়ছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য বি এম কবিরুল হক।

নড়াইল-০২ আসনে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির হয়ে লড়ছেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির নড়াইল জেলা সভাপতি ও আওয়ামীলীগ জোটের সাবেক এমপি শেখ হাফিজুর রহমান। জোটের মনোনয়ন নিয়ে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। ফলে ভোটের মাঠে তার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে । এখানে মিনার প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান। গত নির্বাচনেও এ আসনে প্রার্থী ছিলেন তিনি। ২০০১ সালে এই আসনের উপ নির্বাচনে তার দলের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আরও রয়েছেন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, গণফ্রন্টের লতিফুর রহমান। এনপিপির মনিরুল ইসলাম ও সতন্ত্র প্রার্থী লায়ন মোহাম্মদ নূর ইসলামও রয়েছেন এবারের ভোটের মাঠে। কিন্তু তা সত্বেও এখানে এবারও আওয়ামী লীগের নামটাই সামনে আসছে। কারণ নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন ক্রিকেটার মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *