আন্তর্জাতিক

চীনা নাগরিকের নেতৃত্বে চাকরির ফাঁদ, নারীসহ গ্রেফতার ৮

ডেস্ক রিপোর্ট: অনলাইনে লোভনীয় চাকরি ও টাকা বিনিয়োগে কয়েক ঘণ্টায় দ্বিগুণ লাভ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার ক্রাইম বিভাগ।

ডিবি বলছে, এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড দুই চীনা নাগরিক লিও ও এলিওএন। তারা বিদেশে বসে দেশীয় এজেন্ট ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

সম্প্রতি এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নেমে এই চক্রের সন্ধান পায় ডিবির সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম।

অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় চক্রের বাংলাদেশি এজেন্ট, ইমাদুল ইসলাম (২১), মো. আবু বক্কর সিদ্দিকি শান্ত (২১), মো. জাবের আহাম্মেদ (৩১), মো. রাকিব মোল্লা (১৯), মোহাম্মদ আলী (১৯), মো. সোলাইমান (১৯), আবু সাইদ সুমন (৩৩) ও হোসনাহার আক্তার হেমা (২৩)।

রাজধানীর ঢাকা, সাভার ও জামালপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবিতে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, অনলাইনে পার্টটাইম জবের মাধ্যমে লোভনীয় বেতনের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া সংঘবদ্ধ চক্রের ৮ জন বাংলাদেশি প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ১১ নভেম্বর এক ভুক্তভোগীকে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে খুদে বার্তায় অনলাইনে কাজের প্রস্তাব দেয়। কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভুক্তভোগীকে বলা হয় সরবরাহ করা সাইটে প্রবেশ করে ভোট ও রিভিউ দিতে হবে। এমন প্রতিটি কাজের বিনিময়ে ১৫০ শ টাকা দেওয়ার কথা জানানো হয়।পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর বিশ্বাস অর্জন করতে বিভিন্ন সময় মোবাইল ব্যাংকের নম্বরে প্রায় ৮ হাজার টাকা পাঠায়। এরপর ভুক্তভোগীকে তাদের দেওয়া মোবাইল ব্যাংক নম্বরে ৯ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। এই টাকা পাঠানোর পরে ভুক্তভোগীকে একটি ওয়েবসাইটে ঢুকে একাউন্ট খুলতে বলে। কিন্তু কাজ শেষ হয়নি এই অজুহাতে একাউন্টের টাকা আটকিয়ে দেয় এবং কাজ শেষ করতে আরও ৩৬ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। বিভিন্ন অজুহাতে ৩৬ হাজার টাকাসহ মোট নয় লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সবাই সি-ফ্যাইনান্স ও অনলাইনে লোন দেওয়া চক্রের সঙ্গে জড়িত। তারা এই চক্রের বাংলাদেশি এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। চক্রটি মানুষকে অনলাইনে টাকা উপার্জনের কিংবা পার্টটাইম চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত।

গ্রেফতার সোহান গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছে, তার পূর্ব পরিচিত জাবেরের মাধ্যমে সি-ফ্যাইনান্স, লোন অ্যাপস, হানি ট্রাপস অ্যাপসের মাধ্যমে প্রতারণা জন্য বেশ কিছু বিভিন্ন কোম্পানির সিমের অর্ডার পায়। পরে সে বিষয়টি শান্তকে জানালে সে রাজি যায়। এরপর তারা প্রতিটি সিম ২ থেকে আড়াই হাজার টাকায় কিনে এরপর সেগুলো তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় সোহানের কাছে বিক্রি করে। সোহান সেই সিম জাবেরের কাছে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এই প্রতারণা চক্রের মূলহোতা চানীর নাগরিক নিও এবং এলওইন। তাদের পরিকল্পনায় ঢাকার উত্তরা এবং জামালপুর জেলায় থাকা প্রতিনিধিরা কাজ করত। নিও এবং এলওইন এর নির্দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হত টাকা।

ডিবির প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃতরা শিক্ষিত এবং সবাই তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ। তারা স্বল্প সময়ে অধিক উপার্জনের আশায় এই প্রতারণার কাজে জড়িয়ে যায়। আর চায়নিজ নাগরিকদের পরিচয়ের পর তাদের প্রলোভনে এবং সিএস ক্যামস্ক্যানার সহায়তায় তারা কাজে যুক্ত হয়।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *