বিনোদন

‘১০ এ দশ’, ফেরদৌস ছাড়া সবাই গা-ছাড়া

ডেস্ক রিপোর্টঃ ‘১০ এ দশ’ ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার মাঝি জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের নির্বাচনী স্লোগান। স্লোগানের মতো ব্যাতিক্রম তার নির্বাচনী প্রচারণায়ও। নির্বাচনী মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ প্রার্থীরা যেখানে গা ছাড়া ভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা সেখানে সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে দৌড়াচ্ছেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই নায়ক।

রঙ্গীন পর্দার এই জনপ্রিয় নায়ক সিনেমার মাধ্যমে যেমন কাছে টেনেছেন দুই বাংলার মানুষকে। তেমনি চলচিত্রকে ছাপিয়ে এবার দেশের রাজনীতিতে তুলছেন ঝড়। নির্বাচনী মাঠেও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ফিরছেন মানুষের ভালবাসা আদায়ে। ভোট চেয়ে চষে বেড়াচ্ছেন ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগের প্রতিটি অলি-গলি।

ভোটারদের দ্বারে অভিনেতা ফেরদৌস

শেষ মুহুর্তের নির্বাচনী প্রচারণায় বুধবার (৩ জানুয়ারি) ঢাকা কলেজ ও নিউ মার্কেট এরিয়ায় ভোট চাইতে যান ফেরদৌস। স্বপ্নের নায়ককে এমন কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন ভোটাররা। ঢাকা কলেজ স্টাফ কোয়ার্টারে পরিদর্শনে গেলে সেখানে বসবাস করা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, কখনোই কোন জনপ্রতিনিধিদের এখানে আসতে দেখেনি, আপনি আসছেন আমরা আনন্দিত, আবেগাপ্লুত। পরে নিউমার্কেট ব্যবসায়ীদের কাছে ভোট চাইতে গেলে সেখানেও পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে।

ট্যানারিতে চাকরি করেন ঢাকা-১০ আসনের বাসিন্দা আব্দুল আওয়াল। ফেরদৌস কে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ফেরদৌস অত্যন্ত ভাল লোক। প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার খুব ভাল সম্পর্ক। তাই আমি মনে করি প্রার্থী হিসেবেও সে ভালই হবে। ফেরদৌস ভোট চাইতে বেশ কয়েকবার এসেছেন। মাইকে মাঝে মধ্যে শুনতে পাইলেও অন্য প্রার্থীদের তেমন দেখি নাই। জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাজাহান সাহেব আছেন কিন্তু উনাকে আমি এখন পর্যন্ত দেখি নাই। কিন্তু ফেরদৌস এসেছেন, তাকে দেখেছি। সেই হিসাব মাথায় রেখে যোগ্য ব্যক্তিকে ভোট দিবো।

সাইকেল র‌্যালীতে ফেরদৌস

ফেরদৌস ছাড়া আরও কোন প্রার্থী কে চেনে না বা ভোট চাইতেও আসেনি জানিয়ে একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার আফরোজা বার্তা২৪.কম বলেন, নির্বাচন স্বতস্ফুর্ত দেখছি, যদিও ভেবেছিলাম স্বতস্ফুর্ত হবে না। আমার যেটুকু মনে হয় ফেরদৌস প্রার্থী হিসেবে ভাল হবেন, এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন।

ফেরদৌস ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবির মধ্য দিয়ে যেমন নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছিলেন তখনকার তরুণ সমাজের তেমনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা নিয়ে কাছে টানতে সক্ষম হয়েছেন তরুনদের। যার প্রমাণ পাওয়া যায়, রুপালি পর্দা ছাড়িয়ে বাস্তব জীবনের নায়ক হতে আসা এই নায়কের নির্বাচনি প্রচারণা সভাগুলোর দিকে তাকালেই। প্রতিটি সভাতেই উপচে পড়া ভিড়। এছাড়াও প্রতিটি পাড়া-মহল্লায়, অলিতে-গলিতে ছেয়ে আছে তার পোস্টার-ব্যানারে।

ভোটারদের সাথে সখ্যতা

ফেরদৌস বলেন, ‘আমার বিশ্বাস সবাই ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাবে। উন্নত বাংলাদেশ দেখতে চায় সবাই। আর উন্নত দেশের জন্য হলেও নৌকা মার্কায় ভোট দেবে সবাই। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে ঢাকা-১০ আসনের সর্বস্তরের মানুষের সমস্যা সমধানে কাজ করবো। নির্বাচনী প্রচারণায় এখন যেমন আমি মানুষের কাছে যাচ্ছি, নির্বাচিত হলেও একইভাবে মানুষের কাছে কাছে গিয়ে তাদের সমস্যার কথা শুনবো।’

ভোটারদের সেলফির আবদারও মেঠাচ্ছেন ফেরদৌস

ঢাকা-১০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৫জন প্রার্থী তবে ফেরদৌসের জনপ্রিয়তার মুখে দাঁড়াতে পারছেন না কেউ-ই। জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের প্রার্থী হাজী মো. শাহজাহান প্রার্থীতার জানান দিচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় থাকা তার পোস্টার, ব্যানার। তবে ফেরদৌসের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার কাছে অনেকটাই ম্রিয়মান তিনি। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) এর প্রার্থী শাহরিয়ার ইফতেখারের ছড়ি মার্কার কিছু পোস্টার চোখে পড়লেও অপর দুই প্রার্থী লাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এর মোঃ বাহারানে সুলতান বাহার (টেলিভিশন) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) কে,এম শামসুল আলম (আম) এর দেখা পাওয়া যায়নি কোথাও।

বাংলা চলচ্চিত্রের এই জনপ্রিয় নায়ক, ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে যাচ্ছেন বাজার ঘাট, বাড়ি, পার্ক, খেলার মাঠসহ সর্বত্র। ভোটদানে উৎসাহিত করছেন তরুণদের, তেমনি বর্ষীয়ানদের প্রতি রাখছেন বিশেষ আবেদন। ভোটে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াতে দিন-রাত নবীন-প্রবীণ সবার ধারে ধারে ঘুরে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করছেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *