সারাদেশ

রাঙামাটির কেন্দ্রগুলোতে হেলিকপ্টারে পাঠানো হচ্ছে ব্যালট পেপার

ডেস্ক রিপোর্ট: শিল্পাঞ্চল খ্যাত ঢাকা ১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনটিতে জাতীয় নির্বাচনের ভোটের মাঠে তুরুপের তাস একযুগ আগের একটি দুর্ঘটনার স্মৃতি। আসনটিতে দশ প্রার্থী থাকলেও হেভিওয়েট তিন প্রার্থী। রানা প্লাজার ঘটনা নিয়ে নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। পক্ষে-বিপক্ষে চলছে নানান যুক্তিতর্ক।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে হাজারো শ্রমিকের করুণ মৃত্যু হয়। কয়েক হাজার শ্রমিক সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেন। যা বিশ্বের তৃতীয় শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত। সেই পুরনো ক্ষতবিক্ষত স্মৃতি এখন ভোটের মাঠে বড় ফ্যাক্টর।

রানা প্লাজার ধসের ঘটনায় রানার সাথে সক্ষতা ও ছত্রছায়ায় রাখার অভিযোগে সমালোচিত হয়ে সে সময় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ দল থেকে ছিটকে পড়েন। কেটে যায় দীর্ঘ ১০ বছর, সাভারে আর দেখা যায়নি সেই বিতর্কিত নেতাকে।

তবে এবার জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সেই রানা প্লাজা নিয়ে মুখ খুললেন তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ।

তিনি বলেন, রানা প্লাজার বিল্ডিং কি আমার সময় হয়েছে? কোন জায়গায় আমার সিগনেচার আছে। আমার এখানে কোন ব্যবসা ছিল? রানা প্লাজা বিল্ডিং পড়ে গেছে, তাই আমারে নিয়ে এত ষড়যন্ত্র। ওই বিল্ডিংয়ের সাথে আমারেও ফেলাই দিতে হইবো? কেন কি দোষ আমার, এই মঞ্চটা যদি ভেঙে পড়ে তাহলে কি আমি দায়ী?

সে সময় রানা প্লাজার ধসে হতাহত শ্রমিকদের সেবার হাত বাড়িয়ে হঠাৎ আওয়ামী লীগের টিকিট পান ডাক্তার এনামুর রহমান। তৃতীয়বারের মতো নৌকার মনোনয়ন পেয়ে এবার নির্বাচনের মাঠে রানা প্লাজার সেই সেবার কথা ভোটারদের মনে করিয়ে দিচ্ছেন ডাক্তার এনামুর রহমান।

তিনি বলেন, রানা প্লাজার ঘটনার সময় প্রায় ৫ হাজার আহত রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা পেয়েছেন। এরকম প্রতিদিনই দুস্থ অসহায় মানুষেরা চিকিৎসা পাচ্ছেন। গার্মেন্টেসের তৈরি পোশাকের সুনাম সারা পৃথিবীতে থাকলেও এই শিল্পটাকে সারা দুনিয়ায় হুমকির সম্মুখীন করে দিয়েছিল রানা প্লাজার দুর্ঘটনা।

সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্টসের তৈরি পোশাকের সুনাম সারা পৃথিবীতে। এই শিল্পটাকে সারা দুনিয়ায় হুমকির সম্মুখীন করে দিয়েছিলেন মুরাদ জং। রানা প্লাজা তিনি ফেলান নাই, কিন্তু রানারে তো বানাইছেন। রানারে পয়দা দিছে কে? আবার এখান থেকে পলাইয়া বাহিরে পাঠাইছে কে? বিশ্বের সারা পৃথিবীতে লেবার অর্গানাইজেশন মানে শ্রমিকদের যে সংগঠন। সেই সংগঠন আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন।

এদিকে আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম নানা সময়সহ সবশেষ করোনাকালীন রানা প্লাজা ও তাজরিনের হতাহত শ্রমিকদের ব্যাপক ত্রাণ ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে আলোচনায় আসেন।

সাইফুল ইসলাম বলেন, রানা প্লাজায় যারা আহত হয়েছিলেন তাদের বাড়িতে একাধিকবার আমার ত্রাণ গিয়েছে। আপনাদের যদি বিশ্বাস না হয় তাদের কাছে গিয়ে আলোচনা করে আপনারা জানতে পারবেন। আমি সেদিন তাদের সহায়তা করেছি। করোনার সময় সাভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক বছরের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স করোনা রোগীদের জন্য ভাড়া করে দিয়েছিলাম আপনাদের বিশ্বাস না হলে সাভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানতে পারবেন।

তবে প্রার্থীদের এমন যুক্তিতর্ক কিভাবে দেখছেন আসনটির ভোটের বড় ফ্যাক্টর শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা।

শ্রমিক নেতা আল কামরান বলেন, আমরা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে দেখেছি মুরাদ জং রানাকে বিভিন্নভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছেন সাহায্য সহযোগিতা করেছেন।

তিনি বলেন, তৎকালীন সময় চিকিৎসার জন্য দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন ডাক্তার এনামুর রহমান। তিনি সেই চিকিৎসার দুয়ারের সূত্রপাত ধরে পরবর্তীতে সাংসদ হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন। আরেকজন প্রার্থী আছেন তরুণ জননেতা সাইফুল ইসলাম উনি করোনাকালীন সময়ে যখন শ্রমিকরা ৬৫% বেতন পেয়েছেন তখন কিন্তু এই শ্রমিকদেরকে বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। এই শ্রমিক সংগঠনের মাধ্যমেই এই শ্রমিকদেরকে ত্রাণ দিয়েছিলেন। এখন এই ভোটের ময়দানে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবেন তারা কাকে ভোট দেবেন।

প্রার্থী বাছাইয়ে শিক্ষাকতা যোগ্যতার পাশাপাশি গ্রহণযোগ্যতা শান্তি ও উন্নয়ন বিশেষ বিবেচনায় থাকবে ভোটারদের তালিকায় বলছেন শ্রমিক ও সাধারণ ভোটাররা।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *